Image description

অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টাসহ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগ এবং অবিলম্বে সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দাবি করেছে বিএনপি। তা না হলে সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলেও সতর্ক করেছে দলটি। মূলত এর মাধ্যমে সরকারকে কড়া হুঁশিয়ারি দিল বিএনপি।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসব দাবির কথা জানান।

দলটির এসব দাবির আগের দিন গত বুধবার আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচন, করিডর বিষয়ে আপত্তি এবং রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান উদ্বেগ জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্যে সরকারের ওপর এক ধরনের চাপ তৈরি হয়। ওই বক্তব্যের রেশ না কাটতেই বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে গতকাল দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে যেভাবে তাদের অবস্থান তুলে ধরেছে, তাতে সরকারের ওপর চাপ আরো বেড়েছে। বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে গত বুধবার নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। কিন্তু দলটির কঠোর সমালোচনা করে এনসিপিকে পাল্টা রাজনৈতিক চাপে ফেলেছে বিএনপি।

এমন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবে তাঁরা মনে করেন, সরকারের সামনে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত সংসদ নির্বাচন দেওয়া ছাড়া বিকল্প পথে হাঁটা কঠিন। কারণ সেনাবাহিনী ও বিএনপির পক্ষ থেকে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তা কাছাকাছি হওয়ায় এর তাৎপর্য অনেক বেশি। এ বিষয়ে সরকারের আনুষ্ঠানিক বক্তব্যের পর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হতে পারে বলে মনে করেন তাঁরা।

দেশের বর্তমান সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, সংস্কারের কাজ কতটুকু হলো, বিচারপ্রক্রিয়া কোন পর্যায়ে আছে, সরকারকে তা স্পষ্ট করে দ্রুত সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত। তা না হলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হবে। তিনি মনে করেন, বিএনপির অধৈর্য হওয়া যৌক্তিক। কারণ সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন কোনোটিরই স্পষ্ট কোনো পথরেখা দেখা যাচ্ছে না।

বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতারা বলছেন, ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানোর প্রতিবাদ এবং ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে সরকারের ওপর যে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে, তারই ধারাবাহিকতায় গতকালকের সংবাদ সম্মেলন। গত সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ দুই ইস্যুতে সরকারকে চাপে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপির রাজনীতি সবার কাছে পরিষ্কার। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন বিষয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করা হচ্ছে বারবার। কিন্তু সরকার কী চায়, আমি বুঝি না। সরকার নিজেও বোঝে কি না, সেটাও বুঝি না। তবে আমি এতটুকু বুঝি, তাদের ভেতরে ষড়যন্ত্রকারীরা আছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠা বিএনপি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তৈরি হওয়ার জন্য এত দিন অপেক্ষা করছিল। বিভিন্ন পক্ষ থেকে সমর্থন পাওয়ার পর বিএনপি এখন আন্দোলনের গতি বাড়িয়েছে। গত বুধবার সেনাবাহিনী প্রধানের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে রাজনীতির মাঠে নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে। ফলে দ্রুত নির্বাচনের দাবি আদায় করতে বিএনপি এখন সরকারের ওপর চাপ তৈরি করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা কালের কণ্ঠকে বলেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে বিএনপি যে দাবি আদায়ে সক্ষম, গত কয়েক দিনের ধারাবাহিক আন্দোলনে সেই অবস্থান জানান দেওয়া হয়েছে। দাবি আদায়ের আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয় হিসেবে হাইকোর্ট একটি রিট খারিজ করে বলেছেন, ইশরাকের শপথে কোনো বাধা নেই। এর ফলে সরকার একটি ধাক্কা খেল। পাশাপাশি এনসিপির ওপরও রাজনৈতিক চাপ তৈরি করা হলো, যাতে নির্বাচন পেছাতে ভবিষ্যতে আর কোনো ইস্যু সামনে না আনে।

বিএনপির অবস্থান আরো কয়েকটি দল ও মহলের জন্যও সতর্কবার্তা বলে মনে করছেন রাজনীতিসচেতন ব্যক্তিরা। এ বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরে তাঁরা বলছেন, আগে থেকেই বিএনপির নেতাদের সন্দেহ ছিল, সরকারের ভেতরে-বাইরে একাধিক গোষ্ঠী জাতীয় নির্বাচন পেছাতে তৎপর। এনসিপির সঙ্গে ওই দল ও মহলগুলোর যোগাযোগ রয়েছে। তাই ইশরাক ইস্যুতে বিএনপি একই সঙ্গে সরকার ও এনসিপির ওপর চাপ তৈরির কৌশল নেয়।

সেনাবাহিনী প্রধান ও বিএনপির বক্তব্যের পর এখনো সরকারের অবস্থান জানা যায়নি। এনসিপি থেকেও আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, আগেকার যেকোনো বক্তব্য ও শব্দচয়ন, যা বিভাজনমূলক ছিল, সেগুলোর জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত তিনি। পদত্যাগের দাবির মুখে মাহফুজ আলম আরো লিখেছেন, সরকারে আর এক দিনও থাকলে অভ্যুত্থানের সব শক্তির প্রতি সম্মান ও সংবেদনশীলতা রেখে কাজ করতে চাই।

তিনি এমন সময়ে এই পোস্ট করেন, যখন তাঁর ও আরেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

সেনাবাহিনী ও বিএনপির বিরুদ্ধে সমালোচনামুখর হয়ে আলোচনায় থাকা জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহও নরম সুরে কথা বলেছেন। বিরাজমান পরিস্থিতিতে আবারও ঐক্যের ডাক দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন তিনি।

গতকাল রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে হাসনাত বলেন, জুলাইয়ের ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তির প্রতি আহবান, যে বিভাজনটা অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের মধ্যে এসেছিল, সেই বিভাজনকে দেশ ও জাতির স্বার্থে মিটিয়ে ফেলতে হবে। এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নগ্ন দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি আরো লেখেন, মনে রাখবেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনে দেশে-বিদেশে অনেকে নাখোশ হয়ে আছে।

বিএনপির সংবাদ সম্মেলন

অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানকে পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য অবিলম্বে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ (রূপরেখা) ঘোষণার দাবি জানায় দলটি। এ দুই দাবি জানিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অন্যথায় জনগণের দল হিসেবে বিএনপির পক্ষে এই সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

গতকাল গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন লিখিত বক্তব্যে এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা রক্ষার জন্য উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করতে হবে। আর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার গতকালের বক্তব্য আবারও নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তাই সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় তাঁকেও পদত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যের স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখার কথা ছিল। কিন্তু লক্ষ করা যাচ্ছে যে কোনো কোনো মহলের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করাই যেন সরকারের কর্মপরিকল্পনার অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সাম্প্রতিক কিছু কর্মকাণ্ডে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের যেসব উপদেষ্টা একটি নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত বলে সবাই জানে ও বোঝে; উপদেষ্টা পরিষদে তাঁদের উপস্থিতি সরকারের নির্দলীয়, নিরপেক্ষ পরিচিতিকে ক্রমাগত প্রশ্নবিদ্ধ করে চলছে বলেই সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাঁদের অব্যাহতি প্রদান করা প্রয়োজন।

খন্দকার মোশাররফ নতুন দল সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের নাম উল্লেখ না করলেও আগের দিন গত কয়েক দিন ধরে বিএনপির নেতাকর্মীদের অবস্থানে যোগ দিয়ে দলটির নেতা ইশরাক হোসেন অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন। এই উপদেষ্টা পরিষদ বহাল থাকা অবস্থায় সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও সঠিক নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয় মন্তব্য করে ইশরাক বলেছিলেন, তাই এটাকে (উপদেষ্টা পরিষদকে) পরিবর্তন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, যেহেতু একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করাই এই সরকারের প্রধান কাজ, তাই মাথাভারী উপদেষ্টা পরিষদ না রেখে শুধু রুটিন ওয়ার্ক (দৈনন্দিন কার্যক্রম) পরিচালনার জন্য একটি ছোট আকারের উপদেষ্টা পরিষদ রাখাই বাঞ্ছনীয়।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বুধবারের নির্বাচন কমিশন ঘেরাও কর্মসূচির দিকে ইঙ্গিত করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সংস্কার সনদ তৈরির প্রক্রিয়ার মধ্যেই আলাপ-আলোচনা অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও একই বিষয় নিয়ে এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে একটি দলের নির্বাচন কমিশন ঘেরাও কর্মসূচি তাঁদের ও সরকারকে বিব্রত করেছে।

নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এমন বাস্তবতায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করার বিষয়টি উদ্দেশ্যমূলক ও রহস্যজনক। সার্চ কমিটির মাধ্যমে আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠিত হলেও একটি মহল নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন চায় উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় সব ক্ষেত্রে আমাদের মতামত না নিলেও নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে সব পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করে এই কমিশন গঠন করেছে।

অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতের রায় অনুযায়ী গেজেট নোটিফিকেশন করায় নির্বাচন কমিশনকে অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্যই দেশের জনগণ রক্ত দিয়ে গণ-অভ্যুত্থান করেছে, সুতরাং আমাদের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ থাকতে হবে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, আমরা আশা করব, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল এবং উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে শিগগিরই সরকার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে শপথ গ্রহণ করানোর ব্যবস্থা নেবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ করা যাচ্ছে, জন-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সরকারের যা করণীয় তা যথাসময়ে না করে চাপের মুখে করার সংস্কৃতি এরই মধ্যে সরকারের সক্ষমতা ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে এবং অন্যদেরও একই প্রক্রিয়ায় দাবি আদায়ের ন্যায্যতা প্রদান করেছে। এই অনভিপ্রেত ও বিব্রতকর পরিস্থিতির দায় পুরোটাই সরকারের বলে তাঁরা মনে করেন।

জুলাই ছাত্র-গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে মানুষের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, মানবাধিকারসহ ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যত দ্রুত সম্ভব একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করাই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বলে উল্লেখ করেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, যেহেতু সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, তাই সংস্কার ও নির্বাচনপ্রক্রিয়া দুটি একই সঙ্গে চলতে পারে। পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তির এবং ব্যক্তির অর্থাৎ দল ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারপ্রক্রিয়া চলমান থাকবে।

এই সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা বিষয়গুলো বিএনপির আগের প্রস্তাব ও পরামর্শের মতো উপেক্ষিত হলে তা দুর্ভাগ্যজনক হবে উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, এ ক্ষেত্রে অনিবার্যভাবেই বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে কি না, তা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।