
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘আপনার চালাকি সবাই বোঝে, শুধু আপনি বোঝেন না। নন্দিত হয়ে বিদায় নেন, নিন্দিত হয়ে বিদায় নিয়েন না, জনগণের অধিকার তাদের ফিরিয়ে দিন।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে বিএনপির সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ১৭ বছরের ষড়যন্ত্র ছিল একপক্ষ, কিন্তু হাসিনা পালানোর পর রাজনীতির যাত্রাপথে পদে পদে বাধা, এখান অন্য ধরনের ষড়যন্ত্র। এ সময় তিনি এনসিপির নেতাদের উদ্দেশে বলেন, বিবেক দিয়ে অনুধাবন করো, বাস্তবতা নিয়ে ভাব, জনগণের মনের কথা জানার চেষ্টা করো।
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘সরকার যদি আমাদের দাবি পূরণ না করে, যারা নিষিদ্ধ এলাকায় তিন দিন দাঁড়িয়ে থেকে দাবি আদায় করে চলে আসছে, আমরাও লাখ লাখ মানুষ নিয়ে তাহলে দাঁড়িয়ে থাকব। আর আমরা দাঁড়িয়ে থাকলে আপনারা কোথায় যাবেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, নির্বাচিত জাতীয় সংসদ ছাড়া সংবিধান সংশোধন করা সম্ভব নয়। সংবিধানের জনবিরোধী ধারা নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে সংশোধন করতে হবে। দেশের মানুষ গণতন্ত্র চান, তাঁরা কথা বলতে চান।
১৭ বছর যা ছিল, তা গণতন্ত্র বলা যায় না, ফ্যাসিবাদের উদাহরণ হয়েছে। স্বৈরতন্ত্রের চেয়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সুতরাং একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক অবাধ নির্বাচন সমস্যার সমাধান করতে পারবে। গণতান্ত্রিক ধারাই সব সংস্কারকাজ করতে পারবে। নির্বাচনের মাধ্যমে যে সংসদ হবে, তারাই ইউনুস সাহেবের সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করবে।
গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যেমন ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, সে অবস্থা এখন নেই। কেউ বলছে সংস্কার, কেউ বলছে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন। আগামী নির্বাচনের আগে আমাদের কঠিন সময় পার করতে হবে। সদস্য পদ সংগ্রহ ও নবায়নের মাধ্যমে এ কার্যক্রম এগিয়ে নিতে হবে।’
সীমান্তে মানবিক করিডর দেওয়ার মাধ্যমে অস্ত্র চালানের রুট হবে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘করিডরের মাধ্যমে অস্ত্র যাবে। আরাকান আর্মিরা শক্তিশালী হবে। আমাদের স্বাধীনতা হুমকিতে পড়বে। হাসিনার সময় তো এমন করিডরের কথা আসেনি। তাহলে সংশয় আছে। তবে আমরা সন্দেহ করতে চাই না।’
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, নগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা, বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আকরাম হোসেন তালিম, সদস্যসচিব মোজাফফর আলম, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহম উল্লাহ পলাশ, সদস্যসচিব আবু জাহিদ ডাবলু, যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাবিরুল হক সাবু ও সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন।
উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মনিরুল ইসলাম, ঝিনাইদহ জেলার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ, কুষ্টিয়া জেলার সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার, মেহেরপুর জেলার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম, সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মাগুরার আহ্বায়ক আলী আহমেদ, সদস্যসচিব মনোয়ার হোসেন, খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য তরিকুল ইসলাম পিঞ্জিং প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন।
পরে মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিনসহ পাঁচজন তরুণের সদস্যের ফরম পূরণের মধ্য দিয়ে খুলনা বিভাগীয় সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি।