
দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কুটূক্তির অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) সহকারী রেজিস্ট্রার কবি এহসান হাবিব টানা ৮ বছর পর স্বপদে পুনর্বহাল হয়েছেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ওই কর্মকর্তা।
রোববার (১৮ মে) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের প্রেক্ষিতে বরখাস্ত হওয়া ওইই কর্মকর্তাকে স্বপদে (সহকারী রেজিস্ট্রার) যোগদানের আদেশ দেন।
এহসান হাবিব একজন কবি ও লেখক হিসেবে সমাধিক পরিচিত। ২০২৩ সালে তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী সংকলন ‘অবরুদ্ধ সময়ের কবিতা’ সম্পাদনা করেন। বিষয়টি তখন দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচিত হয়। এ নিয়ে তৎকালীন প্রশাসন কর্তৃক ব্যাপক হয়রানি ও হেনস্তার শিকার হন এই কবি।
এর আগে ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কুটূক্তির অভিযোগে তৎকালীন প্রশাসন এহসান হাবিবকে প্রথমে সাময়িক এবং পরে স্থায়ী বরখাস্ত করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্বপদে পুনর্বহাল চেয়ে ২০১৮ সালে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। এরপর দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে ২০২৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট বিচারক এই মামলার রায় দেন। রায়ে বিজ্ঞ আদালত কবি এহসান হাবিবের বহিষ্কারাদেশ অবৈধ ঘোষণা করে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে বকেয়া বেতন-ভাতা ও পদোন্নতি দেওয়ার আদেশ দেন।
সূত্র জানায়, এ ঘটনার টানা ৮ মাস পর হাইকোর্টের রায়ের কপি হাতে পেয়ে চলতি বছরের ১৩ মে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়ন চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে লিখিত আবেদন করেন কবি এহসান হাবিব। এই আবেদন বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বহিষ্কারাদেশ বাতিল করে স্বপদে যোগদানের আদেশ দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মহামান্য হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এহসান হাবিবের বরখাস্তের আদেশ বাতিল করে স্বপদে যোগদানের আদেশ দিয়েছেন। আগামী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে বকেয়া বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য নির্দেশনা আইন মেনে বাস্তবায়ন করা হবে।
মহান আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া জ্ঞাপন করে কবি এহসান হাবিব ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা আমাকে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করেছিল। কিন্তু মহামান্য হাইকোর্টের আদেশে আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। সেই সঙ্গে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, ট্রেজারারসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন দায়িত্বশীল আচরণ করায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।