
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম এমুর একটি অনলাইন মিটিংয়ের ভিডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। ভিডিওতে তাকে ইসলামী ব্যাংকে অগ্নিসংযোগ এবং বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলার পরিকল্পনার কথা প্রকাশ্যে বলতে শোনা যায়।
শুক্রবার (১৬ মে) সকালে অনলাইন মিটিংয়ের ৩ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তবে কবে এবং কোথায় মিটিংটি হয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
ভিডিওতে আশরাফুল আলম এমুকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি তো প্ল্যানিং নিচ্ছি- আমার এলাকায় যে কয়টা ইসলামী ব্যাংক আছে, এক রাতেই সবগুলো জ্বালিয়ে দেব। এখন যদি উপজেলা আওয়ামী লীগ আমাকে সাহস না দেয়, পাশে না থাকে, তাহলে তো করতে পারব না।’
তিনি বলেন, ‘সারা দেশের সব উপজেলায় যদি একসঙ্গে রুখে দাঁড়াই, প্রত্যেক উপজেলার বিএনপি-জামায়াতের প্রথম সারির দশটা নেতার বাড়ি যদি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিই- তাহলে ওরা এমনিতেই ভেঙে পড়বে।’
ভিডিওতে এমুকে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও মন্তব্য করতে শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘পুলিশ আমাদের সঙ্গে আছে। কিন্তু আমরা যদি রাস্তায় না নামি, তাহলে পুলিশ হেল্প করবে না। যেমন আমার এলাকায় পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে ধরছে না। বিএনপি-জামায়াত চাপ দিলে তখনই ধরতে যাচ্ছে।’
এ ছাড়া তিনি অভিযোগ করেন, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা তাকে বাধা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমি নিজে সাংগঠনিক কাজ করতে গেলেও আমাদের নেতারা বাধা দিচ্ছেন, বলছেন পুলিশের হয়রানি বাড়ছে।’
এ বিষয়ে জানতে কৃষক লীগ নেতা আশরাফুল আলম এমুর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও সেটি রিসিভ হয়নি।
দেবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন তোবারক হ্যাপি বলেন, আমরা এই বিষয়টি শুনেছি। দলীয়ভাবে আলোচনা করে এরপর আপনাদের জানাব।
দেবীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মো. বেলাল হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। রাষ্ট্র তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। এখন যদি কেউ ইসলামী ব্যাংকে আগুন দেওয়ার বা বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলার মতো উসকানিমূলক পরিকল্পনা করে, তাহলে সেটা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য মারাত্মক হুমকি। পুলিশ এবং প্রশাসনের উচিত এসব উসকানিদাতাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা। আর যদি তারা সত্যিই এমন সহিংসতা চালাতে আসে, তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এদিকে, পুলিশের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাশে থাকার অভিযোগের বিষয়ে পঞ্চগড় জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী মুঠোফোনে বলেন, আমি তো এ বিষয়টি জানি না। আমাকে ভিডিওটা দেন। বক্তব্য এখন নয়, ভিডিও দেখে তারপর ব্যবস্থা নেব।