
জুলাই গণহত্যায় জড়িত অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও এর নেতাকর্মীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত দলটির সব ধরনের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এর আগে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হলেও এবারই প্রথম কোনো দলকে নিষিদ্ধ না করে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগকে ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সরকার নিষিদ্ধ করেছিল। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারও জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগের তিনটি অংশ ও পিডিএফসহ স্বাধীনতা বিরোধিতাকারী ও সব ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করে।
১৯৭৫ সালে ২৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগসহ সব রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে বাকশাল গঠন করে শেখ মুজিব একদলীয় শাসন কায়েম করে। পরে ওই বছরের ১৫ আগস্টের পর সামরিক আইনে বাকশালের কার্যক্রমসহ সব রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ করা হয়।
১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মো. সায়েম রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। এই সময়ে বাকশাল থেকে বেরিয়ে আওয়ামী লীগ পুনরুজ্জীবিত করেন জোহরা তাজউদ্দিনসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা।
এর আগে ১৯৭৯ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সময় রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ পায় জামায়াতসহ নিষিদ্ধ সব দল। যদিও সেই বছর ভোটে অংশ নিতে পারেনি।
২০১৩ সালে জামায়াত ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেন হাইকোর্ট। গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কয়েকদিন আগে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরিকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করা হয়। পরে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয় যান শেখ হাসিনাসহ তার দলের এমপি-মন্ত্রী ও নেতাকর্মীরা। এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে জামায়াত ও শিবিরের রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
তবে এখনো কোনো ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারে না ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে নিষিদ্ধ হওয়া পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টি (পিবিএসপি) ও পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (পিবিসিপি)। এ ছাড়া ২০০৫ সালে দেশজুড়ে বোমা হামলার পর জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশকে (জেএমবি) সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করা হয়। ২০০৯ সালে হিযবুত তাহ্রীর নিষিদ্ধ হয়। সবশেষ গত বছরের ২৩ অক্টোবর ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করা হয়।