Image description

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে প্রায় ১৬ ঘণ্টা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচির পর এবার শাহবাগে অবস্থান নিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। তবে কোনও দলের শীর্ষ নেতা উপস্থিত ছিলেন না।

এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা শাহবাগে এলেও ২০২৪-এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যেসব রাজনৈতিক দলের নেতাদের ভূমিকা ছিল এবং আওয়ামী লীগের শাসনামলে যেসব রাজনৈতিক দলের নেতারা বিভিন্নভাবে কোণঠাসা ছিল তাদের অনেকেই শাহবাগে আসেননি।

কিন্তু জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে দাবি করেছেন, বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠন ছাড়া সব রাজনৈতিক দল এখন শাহবাগে। বিএনপি এলে জুলাইয়ের ঐক্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। ঐক্যবদ্ধ শাহবাগ বিএনপির অপেক্ষায়।

শাহবাগে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক শাহবাগে আসেননি। তাছাড়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ.স.ম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন কিংবা তার দলের কেউই শাহবাগে আসেননি।

এছাড়াও বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সভাপতি আন্দালিব রহমান পার্থ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক‌, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু কিংবা সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ- তারা কেউই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অবস্থান কর্মসূচিতে আসেননি।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজও শাহবাগে আসেনি।

গণঅধিকার পরিষদের নূরুল হক নূর এবং রাশেদ খানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে পল্টনে বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হলেও সেই দলের কেউই প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন কিংবা শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচিতে আসেননি।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচিতে এলেও আমির সৈয়দ রেজাউল করিম কিংবা সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীম কেউই শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচিতে আসেননি।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীও শাহবাগে আসেননি। তবে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল ইসলামাবাদী এনসিপির এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন।

খেলাফতে মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব আতাউল্লাহ আমিন শাহবাগে এনসিপি'র অবস্থান কর্মসূচিতে এলেও খেলাফতে মজলিসের আমির আবদুল বাসিত আজাদ কিংবা মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের আসেননি।

বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা শাহবাগে এলেও জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান, মহাসচিব অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার কিংবা ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব কেউই শাহবাগে আসেননি।

এদিকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি (ব্লকেড) চলমান থাকবে উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘দ্রুত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত না এলে সারা বাংলাদেশ আবারও ঢাকা শহরে মার্চ করবে।’

দ্রুত সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে তিনটি দাবি বাস্তবায়নের কথা জানান এনসিপি'র এই নেতা। দাবিগুলো হলো—

১. আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে।

২. আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করতে হবে।

৩. জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে।