Image description

গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। দলটির সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হিসেবেও পরিচিত ছিলেন তিনি। তবে সাকিবকে রাজনীতিতে এলেও আওয়ামী লীগে যোগ না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক জাতীয় ফুটবলার মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ।

এনএসসি টাওয়ারে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান হয়। সেখানে কথা প্রসঙ্গে সাকিব আল হাসানের রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে আনেন মেজর হাফিজ। মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখায় বীর বিক্রম উপাধি পাওয়া সাবেক এই ফুটবলার বলেন, ‘আমি সাকিব আল হাসানকে খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি না টেনে রাজনীতিতে জড়াতে না করেছিলাম। বিশেষ করে আওয়ামী লীগে যোগদান করতে নিষেধ করেছিলাম। কারণ, আমি খুব ভালো করে জানতাম আওয়ামী লীগ কতটা ফ্যাসিস্ট দল।’

রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগে হাফিজের বাসায় গিয়েছিলেন সাকিব। সেখানে তার সঙ্গে আলোচনার বর্ণনা দিয়ে হাফিজ বলেন, ‘তখনো সাকিব রাজনীতিতে জড়াননি। একজন সাবেক ক্রীড়াবিদ, সাবেক জাতীয় ফুটবলার হিসেবে রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জড়ানোর আগে একদিন আমার সাথে দেখা করে তার রাজনীতি করার ইচ্ছে বা অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিল। আমি তখন তাকে খেলোয়াড় থাকা অবস্থায় রাজনীতিতে না জড়ানোর অনুরোধ করি। আমি তাকে জানাই, তুমি একজন ভালো ক্রিকেটার। দেশ-বিদেশে তোমার বেশ সুনাম আছে। তোমার এখন রাজনীতিতে না জড়ানোই উত্তম।’

তিনি আরও বলেন, ‘কথোপকথনের এক পর্যায়ে আমি সাকিবকে আওয়ামী লিগের ফ্যাসিবাদী চরিত্র তুলে ধরে সোজাসাপ্টা জানাই, আর যাই কর আওয়ামী লীগে যোগদান করো না। আওয়ামী লীগের নেতিবাচক দিক আমার খুব ভালো জানা। আমি নিজে খেলোয়াড়ি জীবনেও আওয়ামী লীগের অন্যায়, জুলুমের শিকার হয়েছি। কাজেই আমি জানি আওয়ামী লীগ কতটা নেতিবাচক দল।’

হাফিজের এই পরামর্শ মোটেও ভালো লাগেনি সাকিবের, ‘আমার ওই কথা শুনে সাকিবের মুখটা খানিক কালো হয়ে য়ায়। সে মুখ ফুটে কিছু না বললেও খানিকক্ষণ নীরব থেকে চলে গেলো নিজের ঠিকানায়। এর কিছুদিন পর শুনলাম, দেখলাম এবং জানলাম সাকিব আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে এবং আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হয়েছে। এর পরের ঘটনা সবার জানা। আজ সাকিব ধিকৃত। দেশে ফিরতে পারছে না।’

হাফিজ মনে করেন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েই সাকিব গণধিক্কারের শিকার হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, সাকিব যদি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে দলটির সংসদ সদস্য না হতো, তাহলে আজও সে সম্মানের সাথে দেশে থাকতে এবং খেলতে পারতো। এরকম গণধিক্কারের শিকার হতো না এবং সুনাম ও সম্মানের সাথে অবসর নিতে পারতো।’