
আওয়ামী লীগের দোসরদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই তাদের প্রতিহত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মূখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এই দেশে কোনোভাবেই রাজনীতি করতে পারবে না। আওয়ামী দোসরদের যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করা হবে। বগুড়া থেকেই আওয়ামী লীগ প্রতিরোধের যুদ্ধ শুরু হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
আজ বুধবার বিকেলে আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচার দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে শহরের টিটু মিলনায়তন প্রাঙ্গনে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত মমতাজ উদ্দিনের ছেলের নাম উল্লেখ করে সারজিস আলম বলেন, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান মিলন এই জেলার শত বছরের ঐতিহ্যবাহী প্যালেস মিউজিয়াম দখল করেছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থা দখল করেছে। তার মতো অসংখ্য আওয়ামী দালাল বগুড়ায় রয়েছে। এসব দালালদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানেই ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেনি। তারা পিলখানায় দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের হত্যা করেছে। শাপলা চত্বরে শতশত আলেমকে হত্যা করেছে। সারাদেশে হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছে, গুম করেছে। এই আওয়ামী লীগের শিরায় শিরায় মানুষের রক্ত লেগে আছে। সুতরাং আওয়ামী লীগ এই দেশে রাজনীতি করতে পারে না। অবিলম্বে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।
সমাবেশে সারিজস আলম বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনের বিগত ১৬ বছর বগুড়াকে সবদিক থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। জেলার নাম শুনলেই কারো চাকরি হয়নি। চাকরির প্রমোশন আটকে দেওয়া হয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নেও চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছে বগুড়া।
তিনি বলেন, বগুড়ায় একটি বিমানবন্দর থাকলেও সেটিকে কুক্ষিগত করে রাখা হয়েছে। জনগণের জন্য সেটি উন্মুক্ত করা হয়নি। একটি আধুনিক মানের হাসপাতাল থাকলেও সেটিকে চতুর্থ শ্রেণির হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম থাকার পরেও এখানে কোনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন করা হয় না। আমরা এই বৈষম্যের অবসান চাই। তিনি ঢাকা থেকে বগুড়ার সাথে সরাসরি রেললাইন চালুরও দাবি জানান।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বগুড়া জেলা সংগঠক আব্দুল্লাহিত তাকির সভাপতিত্বে সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এনসিপির যুগ্ম মূখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সাকিব মাহদী। বক্তব্য রাখেন এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব তাহসিন রিয়াজ, যুগ্ম মূখ্য সংগঠক অ্যাডভোকেট আলী নাসের খান, যুগ্ম মূখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, কেন্দ্রীয় সংগঠক নাজমুল হাসান সোহাগ, শহীদ রাতুলের ভাই হামজা, শহীদ পরিবারের সদস্য উজ্জল প্রমুখ। সমাবেশ মঞ্চে জুলাইয়ে বগুড়ার নিহত পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।