
ফ্যাসিবাদের কণ্ঠের আওয়াজ কখনো কখনো আবারও শুনতে পাই, এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, কোনোভাবে ফ্যাসিবাদের আওয়াজ বাংলাদেশে ওঠে তাহলে জাহিদের আত্মার কাছে আমরা কী জবাব দেব?
শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’এর উদ্যোগে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আব্দুল্লাহ বিন জাহিদের ছোট ভাই ক্লোন ক্যান্সারে আক্রান্ত মাহমুদুল্লাহ বিন জিসানের চিকিৎসা ও অপারেশনের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় শহীদ আব্দুল্লাহ বিন জাহিদের মাতা ফাতেমা তুজ জোহরার কাছে আর্থিক সহায়তা হস্তান্তর করা হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের ক্রান্তিকাল এখনো শেষ হয়নি। মোটামুটি একটা স্বস্তির মধ্যে থাকলেও এখনো ৬০ লাখ বিএনপি নেতা-কর্মীর নামে থাকা মামলা থেকে অব্যাহতি পায়নি। এখনো কেন প্রত্যাহার হচ্ছে না? শেখ হাসিনার দোসরদের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ করছেন, সেখানে প্রশাসন নিয়োগ দেন। চালু রাখেন বা টেকওভার করেন। যাতে শ্রমিক-কর্মচারীরা ছাঁটাই না হয়।
তিনি বলেন, আজও কেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়নি? উনি গণতন্ত্রের ধারা বন্ধ করে দিয়ে শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদ হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়ে গেছেন? দেশি ও বিদেশি গণতন্ত্রবিরোধী চক্রান্তে সুপরিকল্পিতভাবে খায়রুল হক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছেন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের আইন থাকলেও গণতন্ত্র একটা স্পেস পেত। জুলাই গণহত্যায় তিনিই প্রধান ও সবচেয়ে বড় দায়ী। শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদ কায়েম করার জন্য তারা সুযোগ করে দিয়ে গেছেন।
রিজভী বলেন, বিচারক মো. আখতারুজ্জামান মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর সাজা দিলেন। এরপর হাইকোর্টের আরেকজন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করলেন। এরা কেন আজও ধরাছোঁয়ার বাইরে। এরাই গণতন্ত্র হত্যাকারী, শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদ কায়েমের হাতকে শক্তিশালী করেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কেএম নুরুল হুদাকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? এরাই তো হচ্ছে নির্বাচন ধ্বংসকারী। ন্যূনতম শহীদের মর্যাদা দিতে তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। পৃথিবীর যে প্রান্তে থাকুক না কেন, এই সমস্ত গণতন্ত্রবিনাসী দানবদের গ্রেপ্তার করার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের। সেই উদ্যোগ এই দেশবাসী দেখতে চায়।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুনের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম রনি’র পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন গাজীপুর জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলন, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই জামান সেলিম, আবুল কাশেম, আলমগীর কবির, সদস্য নাজমুল হাসান প্রমুখ।