
শাহিনুর ইসলাম শাহিন। চাকরি করতেন আকিজ টোব্যাকো ফ্যাক্টরির সুপারভাইজার পদে। পরে শ্রমিক লীগের এক প্রভাবশালী নেতার সান্নিধ্যে থেকে গড়ে তোলেন শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন। টাকার বিনিময়ে বাগিয়ে নেন মানিকগঞ্জ জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ। এরপর আর তাকে পেছনে তাকাতে হয়নি।
আওয়ামী লীগের প্রভাব বিস্তার করে অবৈধভাবে বিপুল সম্পদের মালিক বনে যান তিনি। বর্তমানে শাহিনের নিজ এলাকায় তার রয়েছে একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি এবং আরেকটি দুইতলা বিশিষ্ট ভবন। এছাড়া রয়েছে দুটি ট্রাক। আছে কোটি টাকার ব্যবসা।
জানা গেছে, শাহিন জীবিকার তাগিদে মানিকগঞ্জের তৎকালীন আকিজ টোব্যাকো ফ্যাক্টরিতে সুপারভাইজার পদে চাকরি করতেন। ২০১৪ সালে জেলা শ্রমিক লীগের এক প্রভাবশালী নেতার প্রভাবে বাগিয়ে নেন শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের পদ। এরপর থেকে শুরু হয় তার উত্থান। পরে জড়িত হন জেলা শ্রমিক লীগের রাজনীতিতে। টাকা দিয়ে বাগিয়ে নেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ। প্রায় ১০ বছর জেলা শ্রমিক লীগের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। দলীয় প্রভাব বিস্তার করে এরই মধ্যে নিজের ভাগ্য বদলে ফেলেন। রাতারাতি বনে যান কোটিপতি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বাসিন্দা জানান, সামান্য আকিজ টোব্যাকোতে চাকরি করে কোটিপতি হওয়া সম্ভব না। আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়েই শাহিন অঢেল টাকার মালিক হয়েছে। অথচ আওয়ামী লীগের পতন হওয়ার পরে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভোল পালটে শাহিন এখন জেলা বিএনপির এক নেতার সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। ওই নেতার বাসায় দুধ ও মাছসহ নানা সামগ্রীও পাঠাচ্ছেন।
মানিকগঞ্জ জেলা শ্রমিক লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর ইসলাম শাহিন বলেন, ‘আমি আকিজ টোব্যাকোতে শিফট ইনচার্জ হিসাবে দীর্ঘদিন চাকরি করেছি। পরে ২০১৪ সাল থেকে সাড়ে ৩ বছর শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। ওই সময় আকিজ কোম্পানির মালিকের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো থাকায় তাদের জমিজমা কিনে দিয়েছি। চাকরির পাশাপাশি ফ্যাক্টরিতে ব্যবসা করতাম। বর্তমানে আমার ঢাকায় যৌথ পার্টনারশিপে গার্মেন্ট ব্যবসা রয়েছে।
এছাড়াও ডিলারশিপের ব্যবসা করি। রয়েছে জমিজমার ব্যবসা। আমার কোনো অবৈধ সম্পদ বা টাকা নেই।’ মানিকগঞ্জের অন্যতম ছাত্র সমন্বয়ক রমজান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগের দোসরদের অবৈধ সম্পদের হিসাব দিতে হবে। তারা জনগণের সম্পদ মেরে নিজেদের পকেট ভারি করেছে। তার সম্পদ অর্জনের বিষয়ে দুদকের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।