
কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক ব্যাপক উত্তপ্ত। দুই দেশেই এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারতের পদক্ষেপকে যুদ্ধের উস্কানি হিসেবে উল্লেখ করে তার জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ইসলামাবাদে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে পাকিস্তান। এটি বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় করা আন্তর্জাতিক চুক্তি। ফলে তা একতরফাভাবে তা স্থগিত করা যায় না। পানি পাকিস্তানের ২৪ কোটি মানুষের জাতীয় স্বার্থ। এটিকে যেকেনো মূল্যে রক্ষা করা হবে। এছাড়া পাকিস্তানে পানি প্রবাহ বন্ধের যে কোনও প্রচেষ্টাকে ‘যুদ্ধের উস্কানি’ হিসেবে দেখা হবে। ফলে জাতীয় শক্তির পূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে এর জবাব দেওয়া হবে।
পাকিস্তান জানিয়েছে, ভারতের সঙ্গে শিমলা চুক্তিসহ সমস্ত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্থগিত রাখার অধিকার রয়েছে তাদের। যতদিন ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসের উস্কানি, আন্তর্জাতিক হত্যাকাণ্ড এবং আইন ভাঙা বন্ধ করছে ততদিন সব ধরনের চুক্তি স্থগিত থাকতে পারে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে ওয়াঘাহ সীমান্ত বন্ধ করবে পাকিস্তান। এ পথে সমস্ত আন্তঃসীমান্ত পরিবহণ বন্ধ থাকবে। এছাড়া যারা এ পথ দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছেন তাদের আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ফিরে যেতে হবে।
সার্ক ভিসা অব্যাহতি প্রকল্পের (এসভিইএস) অধীনে পাওয়া ভারতীয়দের সকল ভিসা বাতিল করেছে পাকিস্তান। ফলে এ ভিসার আওতায় যারা পাকিস্তানে রয়েছেন তাদের আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশে ফিরতে হবে।
ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে তাদের মধ্যে তাদের দেশে ফিরতে বলা হয়েছে।
ভারতীয় দূতাবাসের সদস্য সংখ্যা কমিয়ে ৩০-এ নামিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়া ভারতের সব বিমান সংস্থার জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং দেশটির সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান।
এর আগে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এগুলো হলো, সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত, অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ, পাকিস্তানিদের সব ধরনের ভিসা বাতিল, রোববারের (২৭ এপ্রিল) মধ্যে পাকিস্তানিদের ভারত ছাড়ার নির্দেশ, ভারতীয়দের পাকিস্তান ছাড়ার পরামর্শ, েইসলামাবাদের ভারতীয় দূতাবাসের সকল প্রতিরক্ষা, নৌ ও বায়ু উপদেষ্টাকে প্রত্যহার, নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানের দূতাবাসের সকল প্রতিরক্ষা, নৌ ও বায়ু উপদেষ্টাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা এবং দূতাবাসের সদস্য সংখ্যা কমিয়ে আনার নির্দেশ।