
বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে ব্যাপক নিরাপত্তা-ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের কারণে বিজি প্রেস থেকে আর প্রশ্ন ছাপাবে না প্রতিষ্ঠানটি। একইসঙ্গে পিএসসিতে বসেই হাতে লিখে প্রশ্ন সেটাপ ও মডারেশনের কাজ করা হবে। সেখানে মোবাইল নিয়ে কেউ ঢুকতে পারবেন না।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিএসসি কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান পিএসসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের হাসান।
৫ আগস্ট পরবর্তী দায়িত্ব পাওয়া কমিশনের পক্ষ থেকে জুলাই বিপ্লবের চেতনা ধারণ করে পিএসসিকে ছাত্রবান্ধব করতে গ্রহণ করা বিভিন্ন সংস্কার বা রুপান্তর পরিকল্পনা সম্পর্কে জানাতে এই প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, গত ১৫ অক্টোবর আমি ও চারজন সদস্য পিএসসিতে নিযুক্ত হই। তবে কোরাম সংকটে তখন কাজ শুরু করা যায়নি। নভেম্বরে এই কোরাম পূরণ হয়। সর্বশেষ গত রমজানের শুরুতে আরো ৭ জন সদস্য যোগদানের পর চেয়ারম্যান ও ১৫ সদস্যের কমিশন পুরো কাজ শুরু করে।
তিনি বলেন, আমরা প্রথমেই কমিশনের কঠিন চ্যালেঞ্জগুলো খুঁজে বের করি। মূল চ্যালেঞ্জ ছিল আস্থার সংকট। সেখান থেকে উত্তরণ করাই ছিল আমাদের প্রথম কাজ। এর পর আমরা সুনির্দিষ্ট ভিশন ও মিশন ঠিক করে ৫ বছরের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কাজ শুরু করেছি।
পিএসসিতে সৃষ্ট পরীক্ষা জট কাটাতে কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে আগের জট খুলবে বলে আমরা আশাবাদী। এজন্য কমিশন ১২ ঘণ্টা কাজ করছে। শুক্রবার থেকে দুই শিফটে বিসিএসের ভাইভা নেয়া হবে। আমরা শনিবারও কাজ করছি।
বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রসঙ্গে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা ভাইভার মার্ক ২০০ থেকে ১০০ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারে পাঠাই। সরকার এটা অনুমোদন দিয়ে ৪৭ তম বিসিএস থেকে কার্যকরের কথা বলেছে। ভাইভাতে প্রয়োজনে ৫০ মার্ক করা যায় কিনা সেটা নিয়েও পরিকল্পনা রয়েছে।
বিসিএস পরীক্ষার আবেদন ফি ৭০০ টা থেকে কমিয়ে ২০০ টাকা করা হয়েছে। পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামে যে ভোগান্তি হতো তা বন্ধে একটি বিধিমালা করা হয়েছে। আমরা সব অংশীজনদের মতামত নিয়ে কাজ করতে চাই। এজন্য এরইমধ্যে তিন জায়গায় গিয়ে মতামত নিয়েছি। বাকি চারটিতেও মতামত নেয়া হবে।
এখন থেকে ভাইভার আগেও ক্যাডার চয়েজের সুবিধা থাকবে জানিয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা নন ক্যাডার নিয়োগবিধি পরিবর্তনের কাজ করছি।
তিনি বলেন, খাতা দেখার সময় কমাতে পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। ৪৬ তম বিসিএস থেকেই এটা কার্যকরের চেষ্টা করব। এর আগে পাইলটিং করা হবে।
সিলেবাস পরিবর্তনের উদ্যোগ প্রসঙ্গে পিএসসির সদস্য ড. মো. নাজমুল আমীন মজুমদার বলেন, এ বিষয়ে একটি কমিটি হয়েছে। একটা সভাও হয়েছে। এ বিষয়ে আশপাশের দেশগুলো থেকে সিলেবাস সংগ্রহ করা হয়েছে। পিএসসির পুরানো সব সিলেবাস সংগ্রহ করা হয়েছে। ৪৯ তম বিসিএস থেকে নতুন সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ সময় পিএসসির সদস্য ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস ও ডা: মো. আমিনুল ইসলাম, সচিব ড. মো: সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া সহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।