Image description

বহু বছর ধরে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় ঘুরপাক খাচ্ছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন-সংগ্রামের একপর্যায়ে ২০২৪ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার। ফলে দলটির রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আরও প্রকট আকার ধারণ করে। তবে সে বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। পতন ঘটে তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের।

একপর্যায়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ২৭ আগস্ট জামায়াতের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। শেখ হাসিনার পতন ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর

থেকে রাজনীতির মাঠ চষে বেড়াচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। দীর্ঘদিন পর মুক্ত পরিবেশে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার পাশাপাশি নির্বিঘ্নে চলাফেরা করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এরই মধ্যে আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষ্যে দেশের প্রায় সব আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে দলটি। প্রায় দুইশ আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম স্থানীয়ভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগসহ নানাবিধ কাজের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে নিজেদের আরও ভালোভাবে উপস্থাপন করছেন। এবার ঈদুল ফিতরে কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ কেউ ঢাকায় থাকলেও বেশিরভাগই নিজ নিজ এলাকায় থাকবেন বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ কালবেলাকে বলেন, এ কথা তো সত্য যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ওপর এমন কোনো নির্যাতন-নিপীড়ন নেই, যা পতিত আওয়ামী লীগ সরকার প্রয়োগ করেনি। জামায়াত-শিবিরের অসংখ্য নেতাকর্মীকে হামলা-মামলায় জর্জরিত করা হয়েছিল। কিন্তু আল্লাহর রহমতে জালিম শেখ হাসিনার সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়েছে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা।

তিনি বলেন, সরকার নিজেদের অপকর্ম ঢাকার জন্য ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ ও ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির’কে নির্বাহী আদেশবলে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সে সময়ের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চেয়েছিল; কিন্তু তাদের পতন ঘটেছে। এখন মুক্ত পরিবেশে আমরা সাংগঠনিক, কূটনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছি। তিনি বলেন, শুধু এবারের ঈদ নয়, জামায়াতে ইসলামী সব ঈদের নানারকম কর্মসূচি পালন করে থাকে। এবারও সেগুলোই হবে ইনশাআল্লাহ।

দলটির অপর এক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, যারা জামায়াতকে খারাপ বলত, যারা জনগণের রাজনীতি করেনি, যারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিল, তারা জনগণের ভয়ে পালিয়ে গেছে। এখন দেশের মানুষ স্বস্তিতে মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পারছে। তারা নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারছে, যার যে কাজ করছে। সেইসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীও তার আদর্শ ও লক্ষ্য বাস্তবায়নে জনগণের মাঝে কাজ করছে।