
পঞ্চগড় সফরের দ্বিতীয় দিনে আজ মঙ্গলবার ভ্যানে করে গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তিনি জেলার আটোয়ারী উপজেলার আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের রাখালদেবী, বামনকুমার, বালিয়া, লক্ষ্মীত্থানসহ বিভিন্ন গ্রামে যান। এ সময় বাড়ি ও খেতখামারে গিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠনের পর প্রথমবারের মতো গতকাল সোমবার নিজ জেলা পঞ্চগড়ে আসেন সারজিস আলম। প্রথমে ঢাকা থেকে উড়োজাহাজে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে নামেন তিনি। সেখান থেকে তিনি সড়কপথে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ যান। দেবীগঞ্জ থেকে শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে তিনি জেলার বোদা, পঞ্চগড় সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী উপজেলা সফর করেন। সারজিস আলমের বাড়ি আটোয়ারী উপজেলায়। রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব পাওয়ার পর বাড়ি ফেরার পথে সারজিস আলমের এই ‘শোডাউন’ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
সারজিস আলম গতকাল আটোয়ারী উপজেলার আটোয়ারী মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার সহস্রাধিক মানুষের সঙ্গে ইফতার করেন। অনুষ্ঠানের ব্যানারে উল্লেখ করা হয়, ইফতার মাহফিলটি জাতীয় নাগরিক পার্টির আটোয়ারী উপজেলার আয়োজনে করা হয়েছে। তবে এনসিপির আটোয়ারী উপজেলায় এখনো কোনো কমিটি হয়নি।
আজ সকালে সারজিস আলম ভ্যানে চড়ে নিজ বাড়ির আশপাশের গ্রামে যান। দুপুরে সারজিস আলম তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুকে গ্রামে ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলা নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন এবং ছবি পোস্ট করেছেন।
ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে সারজিস আলম লিখেছেন, ‘জীবনের প্রথম ১৭ বছর এই মাটি ও মানুষের সাথে থেকে বেড়ে উঠেছি। এখানেই যেন চিরপ্রশান্তি। সরু আইল দিয়ে হেঁটে চলা, মাচায় বসে গল্প করা, ভ্যানে করে এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে যাওয়া, এগুলো যেন আমাদের চিরচেনা গল্প। এই গল্পগুলো শুনতে, শোনাতে এবং বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে মাঠ থেকে উঠে আসা কৃষকের আজকের দাবি উল্লেখ করে সারজিস আলম আরও লিখেছেন, ‘কৃষক এখন বাজারে প্রতি কেজি আলু পাইকারি ১০ টাকা করে বিক্রি করে। প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে কৃষকের খরচ হয় গড়ে ২০ টাকা। অর্থাৎ এবার কৃষক আলুতে প্রায় অর্ধেক লস করছে। সেই জায়গায় অন্তত কেজিপ্রতি তারা যদি ২৫ টাকা পেত তাহলে তাদের জীবন চলা সম্ভব হতো। মাঠে কৃষকের উৎপাদন খরচ এবং দেশব্যাপী গ্রাহকের কেনার সামর্থ্যের মধ্যে সামঞ্জস্য প্রয়োজন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। কৃষক যদি তাদের দাম না পায় তাহলে চাষের আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। পণ্যসংকট তৈরি হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাবে। সেই হিসেবে কৃষক অন্তত ২৫ টাকা দরে আলু বিক্রি করতে পারলে বাজারে খুচরা ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। এই সামঞ্জস্য অতি জরুরি।’