Image description

আজ বুধবার (১২ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির দাবি করেছেন যে, শাহবাগীরা দিল্লির ফান্ডিং পেয়ে আন্দোলন করেছে।

তিনি তার বক্তৃতায় বলেন, "আজ স্মরণ করছি আমার সহযোদ্ধাদের, যারা জুলাই বিপ্লবের শহীদ হয়েছেন। আমি বিশেষভাবে স্মরণ করছি আমার পাঁচজন সাংবাদিক ভাইকে এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। পাশাপাশি তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা এবং সহমর্মিতা জানাচ্ছি।"

 

তিনি আরও বলেন, "আমাদের আজকের এই আয়োজন মূলত মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের অবদান নিয়ে। জুলাই বিপ্লব মূলত মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতার মাধ্যমেই গড়ে উঠেছে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের কারণে বিশ্ববাসী এই বিপ্লব সম্পর্কে জানতে পেরেছে। গণমাধ্যমের অবদানের ৯৫% মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের বললে ভুল হবে না।"

 

তিনি বলেন, "দায়িত্বশীল মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের স্বীকৃতি নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা হয়েছে। যারা আন্দোলনের সময় গুলির মুখে দাঁড়িয়েছেন, টিয়ারশেল খেয়েও রিপোর্ট করেছেন, লাইভ দিয়েছেন—তাদের স্বীকৃতির জন্য আর কিছু প্রয়োজন নেই। সারা পৃথিবীতে এই ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা এবং প্রকাশনার মাধ্যমেই তারা স্বীকৃতি পেয়েছেন।"

 

তিনি আরও বলেন, "মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের জন্য কোনও অফিস নেই বলে শুনেছি। আমি সরকার ও সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে বলব, এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট ও অন্যান্য সংগঠন চাইলে তাদের জন্য একটি বসার ব্যবস্থা করতে পারে।"

শিশির বলেন, "গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের গণমাধ্যম কখনোই দেশের জন্য কাজ করেনি। কিছু গণমাধ্যম এমন ব্যক্তিদের হাতে চলে গিয়েছিল যারা বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করেছে এবং দিল্লির স্বার্থ রক্ষা করেছে। এই দোসর গোষ্ঠী এখনও সক্রিয়।"

তিনি আরও বলেন, "মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকরা এই প্রভাব থেকে মুক্ত ছিল। তারা যা দেখেছেন, তা প্রকাশ করেছেন। দিল্লির প্রভাব তাদের ওপর ছিল না। এজন্যই আমি মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের একমাত্র পক্ষপাতহীন ও নিরপেক্ষ সাংবাদিক মনে করি।"

তিনি বলেন, "যদি আমরা ইতিহাসের দিকে তাকাই, তবে দেখব, ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধুর আন্দোলন পর্যন্ত কলকাতা ও দিল্লির প্রভাব ছিল স্পষ্ট। এখনো দিল্লি থেকে কিছু গোষ্ঠী বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।"

তিনি আরও বলেন, "২০১৩ সালে যারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল, যারা শাহবাগ আন্দোলনের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দিয়েছিল, তারা আবারও সক্রিয় হয়েছে। তারা রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক ব্যানারে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়।"

তিনি বলেন, "আমরা তরুণ প্রজন্ম এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে স্পষ্ট বলতে চাই—২০১৩ সালে যারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পক্ষে আন্দোলন করেছিল, শাপলা চত্বরে গণহত্যা সংঘটিত করেছিল, তাদের বিচার আমরা করব। যদি তারা আবারও বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে, তবে আমরা রাজপথে তাদের মোকাবেলা করব।"

তিনি বলেন, "কিছু লোক দিল্লি থেকে ফান্ডিং পেয়েছে। শেখ হাসিনা এবং তার কিছু দোসর দিল্লিতে বসে বসে বাংলাদেশে আন্দোলন গড়ে তুলছে। আমি মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের অনুরোধ করব, আপনারা চোখ-কান খোলা রাখবেন এবং সত্য তুলে ধরবেন। আপনাদের অনুসন্ধানী রিপোর্টিং বাংলাদেশের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং দেশকে দিল্লির দোসর মুক্ত করবে।"