Image description

গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কার্যালয় ও নির্বাচনী তহবিলের জন্য ধনীরা অর্থসহায়তা দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এই লক্ষ্যে ক্রাউডফান্ডিং অর্থাৎ অনলাইনে গণচাঁদা সংগ্রহ করা হবে বলেও তিনি জানান।

দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো রয়টার্সে দেওয়া সাক্ষাৎকার এসব কথা বলেন ২৬ বছর বয়সী এই তরুণ নেতা।

এই সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম নিজেদের দলের নতুন কার্যালয়, ফান্ডিং, আসন্ন নির্বাচনের জন্য তহবিল গঠন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা, নির্বাচন ও সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।

সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন ধনী ব্যক্তি এনসিপিকে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শিগগিরই একটি নতুন অফিস স্থাপনের জন্য ক্রাউডফান্ডিংয়ের (জনসাধারণের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ) পরিকল্পনা করছি।’

তিনি জানান, আসন্ন নির্বাচনের জন্য একটি তহবিল গঠনের উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে।

তবে নাহিদ ইসলাম বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো জনগণের নিরাপত্তা পুরোপুরি নিশ্চিত করতে পারেনি। দেশ এখনো অস্থিতিশীল। তাই এ বছর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান কঠিন হবে। তিনি বলেন, ‘বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও পুলিশিং ব্যবস্থায় আমি মনে করি না, একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, এনসিপি যেকোনো সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তবে ভোটের আগে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা’ নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো অত্যন্ত জরুরি।

এই ঘোষণাপত্রটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্রনেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রস্তুত করা হবে এবং এতে বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকবে। এ ছাড়া গত বছরের সহিংসতায় নিহত এক হাজার মানুষের স্মরণে এটি প্রণয়ন করা হবে।

তিনি বলেন, ‘যদি আমরা এক মাসের মধ্যে এই ঘোষণাপত্র নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারি, তাহলে আমরা তৎক্ষণাৎ নির্বাচনের জন্য আহ্বান জানাতে পারব। তবে, বেশি সময় লাগলে নির্বাচন স্থগিত হওয়া উচিত।’

নাহিদ ইসলামের জন্ম ১৯৯৮ সালে, ঢাকার অদূরে ফকিরখালীতে। ২০১৪ সালে ঢাকার দক্ষিণ বনশ্রী মডেল হাইস্কুল থেকে এসএসসি ও ২০১৬ সালে সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে। তিনি দলনিরপেক্ষ ছাত্রসংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তির সদস্যসচিব ছিলেন।

নাহিদ ইসলাম ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্যানেলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে নির্বাচন করেছেন। চব্বিশের জুলাই আন্দোলনে সমন্বয়ক হিসেবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আলোচনায় আসেন নাহিদ। আন্দোলন চলাকালে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশবাসীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিতি পান। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার দায়িত্ব পান নাহিদ। সেই পদ থেকে সরে এসে রাজনীতিতে যুক্ত হন।