
আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্বাচনি এলাকা গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া) আসনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে লড়বেন অধ্যাপক রেজাউল করিম।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দলের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। অধ্যাপক রেজাউল করিম বর্তমানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গোপালগঞ্জ জেলার আমির।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জ-৩ আসন থেকে টানা ৮ বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে তিনি ৫ বার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিপক্ষে যারা নির্বাচন করেছেন তারা সবাই জামানত হারিয়েছেন। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন হতে পারে বলে এই সংসদীয় এলাকার ভোটাররা মনে করছেন।
যদি আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা নির্বাচনে না আসে তাহলে এখানে জামায়াত ইসলামের অধ্যাপক রেজাউল করিমের সাথে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস এম জিলানীর লড়াই হতে পারে। কেননা গোপালগঞ্জ-৩ আসনে এই দুই প্রার্থী ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থীকে এখনও মাঠে দেখা যায়নি। তবে আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা নির্বাচনে না এলেও যদি তাদের সমর্থিত কোনো প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করে তাহলে ভোটের হিসেব পাল্টে যেতে পারে।
গোপালগঞ্জ-৩ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯০ হাজার ৩০০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬৯১ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৪১ হাজার ৬০৯ জন। এরমধ্যে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২ লাখ ৪৯ হাজার ৯৬৫ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির এম নিজাম উদ্দিন লস্কর (একতারা) পেয়েছিলেন ৪৬৯ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শেখ আবুল কালাম (আম) পেয়েছিলেন ৪৬০ ভোট, জাকের পার্টির মাহাবুব মোল্লা (গোলাপ ফুল) পেয়েছিলেন ৪২৫ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির শহিদুল ইসলাম মিটু (ডাব) পেয়েছিলেন ১২২ ভোট এবং গণফ্রন্টের সৈয়দা লিমা হাসান (মাছ) পেয়েছিলেন ৮৬ ভোট।
আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত এ আসনে ৫ আগস্টের পরে অধিকাংশ দলীয় নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। এ্ররই মাঝে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নেতাকর্মীরা সরব হলেও নিরবে মাঠে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে জামায়াতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। এসব নেতাকর্মীরা তাদের প্রিয় নেতা অধ্যাপক রেজাউল করিমকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করায় আনন্দ প্রকাশ করেছেন।
কোটালীপাড়া উপজেলা জামায়াতের আমির সোলায়মান গাজী বলেন, গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া) আসন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক রেজাউল করিমকে জামায়াতের প্রার্থী করায় আমরা দলীয় নেতাকর্মীরা আনন্দিত। আমরা ইতোমধ্যেই আমাদের দলীয় কাজ শুরু করে দিয়েছি। এরই অংশ হিসেবে আগামী ১ মার্চ কোটালীপাড়া উপজেলায় আমাদের প্রার্থীকে সাথে নিয়ে একটি মোটরশোভাযাত্রা করা হবে।
কোটালীপাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এস এম মহিউদ্দিন বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া) আসনে আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস এম জিলানী। আমরা তার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি।