Image description

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড বিএনপির ৩১ দফা নিয়ে আয়োজিত সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মঞ্চে উপস্থিতি নিয়ে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। মঞ্চে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দেখে বিএনপির দুই কর্মী প্রতিবাদ করায় তাদের বহিষ্কার করে মহানগর কমিটি।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি রামপুরা ওয়ার্ডের এয়াকুব আলী স্কুলে কর্মশালায় এ হট্টগোল হয়। তবে ঘটনা প্রকাশ পায় আরও কয়দিন পর দুই নেতাকে বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, সদস্য মোশাররফ হোসেন ডিপ্টি, সাবেক কাউন্সিলর আবুল হাসেমসহ ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সিনিয়র নেতারা।

সেখানে উপস্থিত একাধিক নেতাকর্মী দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিগত পনের বছর ফ্যাসিবাদের দোসর হয়ে লুটপাট, চাঁদাবাজিসহ নানা কর্মকাণ্ডে জড়িত একাধিক আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী সেদিন আমাদের কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা বলেন, বিগত পনের বছর আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের নির্যাতনের শিকার হয়ে আমরা বাসায় থাকতে পারিনি। পরিবারকে কাছে পাইনি। সেখানে আমাদের কতিপয় নেতা তাদের এখন পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। দলের দুর্দিনের কর্মীরা প্রতিবাদ করায় তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে।

এ নেতা আরও বলেন, সভায় উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের মধ্যে ছিলেন, আসলাম, কামাল, হেলাল, বেলাল ও শফিক। যারা এই কর্মশালায় উপস্থিত ছিল তারা সকলে বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের প্যানেল মেয়র আব্দুস সবুর লিটনের হয়ে এলাকায় ত্রাসসৃষ্টি করেছে, দখল, চাঁদাবাজি করে বেড়িয়েছে। তারা বিগত জাতীয় নির্বাচনে সাবেক মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের হয়ে কাজ করেছে। আর যখন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্যে নতুন বাংলাদেশের জন্ম সেখানে আমাদের দলের কিছু নেতা তাদের আমাদের দলের ভেড়াতে চেষ্টা করছে। অথচ সেদিনের কর্মশালায় অনেক ত্যাগী নেতা মঞ্চে জায়গা পাননি। 

বহিষ্কারের শিকার ছাত্রদলের নেতা কাজী তানভীর রহমান সিজান দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নানা রকম নির্যাতনের শিকার হয়েও মাঠে ছিলাম। দলের খারাপ সময়ে মাঠ থেকে পালিয়ে যাইনি। দলের দুর্দিনে মাঠে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। সেদিন আমাদের ৩১ দফা কর্মশালায় গিয়ে দেখি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মঞ্চে উপস্থিত। তখন আমরা কয়েকজন প্রতিবাদ করলে সেখান থেকে সেসব আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চলে যাওয়ার সময় হট্টগোল করতে করতে বেরিয়ে যায়। পরে আমাদের জানানো হয় দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এখানে আমাদের অপরাধ কি ছিল?

বহিষ্কারের শিকার আরেক বিএনপি কর্মী থেকে জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে বলেন, দল যদি মনে করে আমরা ভুল করেছি তাহলে দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

বহিষ্কারের বিষয়ে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শওকত আজম খাজা বহিষ্কারের ব্যাপারে দেশ রূপান্তরকে বলেন, দুইজনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের প্রতিবাদের ভাষা কর্মীসুলভ ছিল না। সেখানে নগর বিএনিপির অনেক সিনিয়র নেতা উপস্থিত ছিলেন। তারা যেভাবে প্রতিবাদ করেছে সেভাবে পুরো অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যেতে পারতো। তাছাড়া নেতারা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করলেও তারা তা শোনেনি, এসব কারণে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। 

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কীভাবে সমাবেশে এসেছে এ ব্যাপারে নেতা বলেন, আমরা সেদিনের অনুপ্রবেশের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আমি নিজেও আছি কমিটিতে আগামীকালের মধ্যে আশা করি আমরা বের করতে পারবো এর সঙ্গে কারা জড়িত।