![Image description](https://content.bdtoday.net/files/img/202502/e260248da8e4e954ed3a4795d16ab67f.png)
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল আলম বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনোভাবেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন নয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেওয়া আপনাদের দায়িত্ব না। এই দায়িত্ব হবে নির্বাচিত সরকারের।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কিশোরগঞ্জের স্থানীয় একটি পার্কে জেলা বিএনপি আয়োজিত ১৯ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্র ঘোষিত জনসভা সফল করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শরীফুল আলম বলেন, অন্য কোনো চিন্তা না করে কোনো ষড়যন্ত্র, কোনো পরামর্শ, কোনো দুরভিসন্ধী কারো ব্যক্তিগত স্বার্থ, কোন দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন না করে মেজরিটি রাজনৈতিক দলের যে মতামত তা মেনে অবিলম্বে নির্বাচনে রোডম্যাপ ডিক্লেয়ার করার চিন্তাভাবনা করুন। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা এবং আপনাদেরকে সহযোগিতা করতে সকল গণতান্ত্রিক দলগুলো সাথে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, একটি দল জনগণের মন জয় করার জন্য চটকদার কথা বলে। ঠিক আছে, আপনারা আপনাদের কর্মসূচি নিয়ে কাজ করেন আমরা আমাদের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে যাব। পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া বিএনপি কখনো চিন্তা করেনি। ভবিষ্যতেও আমাদের কোনো চিন্তাভাবনা নাই। সেই চিন্তাভাবনা মাথায় থাকলে বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুর সঙ্গে জেলখানায় পাঞ্জা লড়তে হতো না। তারেক রহমানের মেরুদণ্ডের হাড় ভাঙে না। আরাফাত রহমান কোকো মালয়েশিয়ায় চিকিৎসার অভাবে অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করতে হতো না। খালেদা জিয়াকে এক কাপড়ে বাসা থেকে বের হতে হতো না। খালেদা জিয়া চাইলেই অনেক আগেই ক্ষমতায় আসতে পারতেন। খালেদা জিয়ার কাছে ক্ষমতা বড় বিষয় নয়, জনগণের অধিকার বড় বিষয়। সুতরাং আমরা কোনো দলকে বিশেষ জায়গায় নেওয়ার জন্য আমাদের অতীত ইতিহাস, আপোষহীনতা ও অর্জনকে বিসর্জন দিব না। আর কোনো ষড়যন্ত্রকারী এই অবস্থা থেকে দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে সেটাকেও টলারেট করবো না।
‘শুধু তাই নয়, প্রত্যেকে নিজ নিজ এলাকায় ঐক্যবদ্ধ থাকুন। পতিত স্বৈরাচারের দোসররা অনেক অবৈধ টাকা-পয়সার মালিক। তারা যেমন এলাকায় আছে তেমনি প্রশাসনেও মিশে আছে। তারা এলাকায় ঢুকে বিশৃঙ্খলাতা করার চেষ্টা করবে আপনারা সতর্ক থাকুন। কোনো অবস্থাতেই সেই স্বৈরাচারের দোসরদের পাত্তা দেওয়া যাবে না। কোনো সুযোগ দেওয়া যাবে না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপিকে ভাঙার জন্য এরকম কোনো ষড়যন্ত্র নাই যা করা হচ্ছে না। আগেও করা হয়েছে কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। অর্থ, এমপি, মন্ত্রী সকল ধরনের লোভ দেখানো হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি আমরা আগে যেমন ঐক্যবদ্ধ ছিলাম এখন তার চাইতেও বেশি ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাস আমরা দেখেছি কিন্তু আশাতীত কোনো ফলাফল আমরা পায়নি। আমরা এ সরকারের সমালোচনা করব আবার এই সরকারকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব কিন্তু আমাদের। সরকারকে সঠিক রোডম্যাপে রাখার ষড়যন্ত্র করবো কিন্তু ব্যর্থতা করার জন্য নয়। বিএনপি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রাথমিক ভিত্তি স্থাপন করেছিল। তারপরেই ছাত্র-জনতার জুলাই আগস্টের আন্দোলন হয়েছে। শুধু এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকার, কথা বলার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। আর এই জন্যই জিয়া পরিবারের ওপর অমানবিক নির্যাতন হয়েছে। আজকে কেউ এটাকে তাদের নিজস্ব অর্জন মনে করে কথা বলেন, কোন রাজনৈতিক শক্তি তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য নির্বাচনকে প্রলম্বিত করার জন্য বড় বড় কথা বলবেন সংস্কার আমৃত্যু হবে আমরা কি বসে থাকব? জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা আত্মহতি দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, কারো কারো ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়ন, দলসমৃদ্ধ হবে, শক্তিশালী হবে, তারপর নির্বাচন হবে এই এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার স্বপ্ন দেখলে ভুল হবে। দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে নির্বাচন রোডম্যাপে নিতে হবে। রোডম্যাপ ডিক্লিয়ার চাই, দিতে হবে। দেশের মানুষ চাই স্বল্প সময়ের মধ্যে ভোটের অধিকার ফিরে আসুক। জনগণের সেই অধিকার ফিরিয়ে আনতে আমরা প্রয়োজনে আবারো আন্দোলনে যাব।
প্রস্তুতি সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা সহ-সভাপতি রুহুল হোসাইন, অ্যাডভোকেট জালাল মুহাম্মদ গাউস, অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজি ইসরাইল মিয়া, আমিনুল ইসলাম আশফাক, করিমগঞ্জ উপজেলার সভাপতি আজিজুল ইসলাম দুলাল, জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ সুমন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবু নাসের সুমন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ মিয়াসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক তাজুল ইসলাম চপল প্রমুখ।