![Image description](https://content.bdtoday.net/files/img/202502/620d0e41a65d863666c5310de300e102.png)
‘বিশিষ্ট নাগরিকের নামে যারা খুনি হাসিনার প্রেতাত্মাদের পক্ষে দাঁড়াবার রাজনীতি করছেন’ তাঁদের হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘বিশিষ্ট নাগরিকের নামে যারা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ঘুরে দাঁড়ানোর বৈধতা দিতে চায় তাদের ধ্বংস করার জন্য বাংলাদেশের ছাত্র-জনগণই যথেষ্ট। আর কোনোভাবে যদি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার, ফিরিয়ে নিয়ে আসার চক্রান্ত করা হয়; রাজপথে বাংলাদেশের জনতা জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি হয়ে আছে।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেটে জাতীয় নাগরিক কমিটির বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় আখতার হোসেন এ মন্তব্য করেন। নগরের রিকাবীবাজারস্থ কাজী নজরুল অডিটরিয়ামে এ সভার আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক কমিটি সিলেট বিভাগ।
দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি জানিয়ে আখতার হোসেন বলেন, ‘কোনো সম্প্রদায়ের মানুষকেই আওয়ামী লীগ শান্তিতে থাকতে দেয়নি। তারা বিভাজনের রাজনীতিকে জিইয়ে রেখেছিল। আমরা বাংলাদেশে একটি মধ্যমপন্থী রাজনীতি চালু করতে চাই।’
নতুন রাজনৈতিক দলের প্রসঙ্গে আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা এমন এক রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলছি, যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। ন্যায় ও ইনসাফের পলিসিই হবে নতুন বন্দোবস্ত। এখানে আর কোনো বাকশাল ও ফ্যাসিবাদকে জায়গা দেওয়া হবে না। কোনো রাজনৈতিক দল ভারতের তাঁবেদারি করবে, বাংলাদেশের মানুষ তা আর হতে দেবে না। পতিত আওয়ামী লীগারদের মতো বেহায়াদের, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের মানুষ আর রাজনীতি করতে দেবে না। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।’
সভায় জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, ‘আমাদের আগে ফ্যাসিস্ট কাঠামো ধ্বংস করতে হবে। এরপর নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য আমাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য আদর্শ প্রশাসনিক কাঠামো প্রয়োজন। পার্টি গঠনের পাশাপাশি আমরা রাষ্ট্র গঠনের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি। এর বাস্তবায়নে তরুণ জনগোষ্ঠীকে মাথা তুলে দাঁড়াতে হবে।’
সভায় সিলেটের আইনজীবী জোসনা ইসলাম বলেন, ‘এই অন্তর্বর্তী সরকার গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের একটি সেতু হিসেবে কাজ করছে। যারা অন্যায় ও অবিচার করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের আওতায় আনতে হবে। তবে তা যেন প্রতিহিংসামূলক না হয়।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘স্বাধীনতা–পরবর্তী সময়ে আমরা বিভিন্ন দলের শব্দের খেলা দেখেছি। বর্তমানে একটি দল আসছে নির্বাচন নিয়ে, আরেক দল আসছে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত নিয়ে। তবে আমরা বলতে চাই, কেউ যদি নির্বাচন কিংবা নতুন বন্দোবস্তের নামে বৈষম্যকে অব্যাহত রাখতে চায়, তাদের প্রতিহত করতে হবে।’
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক হোসাইন আহমদ। এতে আরও বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত কামরান হোসেন, বিশিষ্ট সমাজসেবক আইয়ুব করম আলী, আইনজীবী আফরোজ উদ্দিন ও দেলোয়ার হোসেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও জৈবপ্রযুক্তির সেল সম্পাদক শ্যামা দেব, যুগ্ম সদস্যসচিব আল আমীন, সদস্য শওকত আলী, প্রীতম দাশ, দ্যোতি অরণ্য চৌধুরী, নারী সেল সম্পাদক সাদিয়া ফারজানা, নাগরিক কমিটির সিলেটের প্রতিনিধি আব্দুর রহিম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের আহ্বায়ক আখতার হোসেন, চা শ্রমিক প্রতিনিধি গীতা রানী প্রমুখ।
সভায় জুলাই আন্দোলন নিয়ে কবিতা আবৃত্তি করেন সাব্বির আহমেদ। দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন নাগরিক কমিটির একজন স্থানীয় প্রতিনিধি। এর আগে বেলা দুইটা থেকে জুলাই আন্দোলনের বিভিন্ন তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।