
মিনার রশীদ
‘স্ট্রাইক বাংলাদেশ, ক্যাপচার চিটাগং’ শিরোনাম দিয়ে একটি ভিডিও বার্তা ইন্ডিয়ান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। হুমকিদাতা খুব সাধারণ ব্যক্তি নহেন। ত্রিপুরা রাজপরিবারের সদস্য এবং একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা।
এর আগে ভারতের সেনাবাহিনীর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা প্রায় একই ভাষায় হুমকি দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, বিজেপির অনেক নেতা সকাল-বিকাল বাংলাদেশকে নিয়ে একই ধরনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট—একদিকে আমাদের মানচিত্রের মাথা এবং পায়ের দিক কেটে ভারতের তথাকথিত চিকেন নেক করিডোরকে প্রসারিত করতে চায়, অন্যদিকে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম দখলের প্রকাশ্য পরিকল্পনা করছে। এমন মন্তব্য নিছক ব্যক্তিগত উচ্ছ্বাস নয়, বরং ভারতের একাংশের গভীর কৌশলগত উচ্চাভিলাষের প্রতিফলন।
চট্টগ্রাম দখলের হুমকিদাতা কে এই মহারাজা?
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরায় ১৪ শতক থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত একটি স্বতন্ত্র রাজতন্ত্র চালু ছিল! ১৯৪৯ সালে ত্রিপুরা আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়। এরপর রাজতন্ত্রের রাজনৈতিক ক্ষমতা শেষ হয়, কিন্তু ‘মহারাজা’ উপাধি এবং সামাজিক মর্যাদা পরিবারটির হাতে রয়ে যায়। আজও আগরতলার রাজবাড়ি (উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ) এবং রাজপরিবারের সদস্যরা স্থানীয় রাজনীতি ও সমাজে প্রভাবশালী। প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মণ, যিনি ‘বুবাগ্রা’ নামে পরিচিত আলোচিত ব্যক্তি। তিনি Tipra Motha Party (TIPRA Motha) প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা বিশেষ করে ত্রিপুরার আদিবাসীদের অধিকার, স্বায়ত্তশাসন ও ‘Greater Tipraland’ দাবির জন্য সক্রিয়।
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, চট্টগ্রাম কিছু সময়ের জন্য ত্রিপুরা রাজ্যের দখলে ছিল এবং পরে আরাকান ও মুঘলদের সঙ্গে ক্ষমতার পালাবদল হয়! ইতিহাসবিদদের মতে, ত্রিপুরার সেই শাসন মূলত সীমান্তবর্তী পার্বত্য অঞ্চল ও অল্প সময়ের জন্য চট্টগ্রামের কিছু অংশে সীমাবদ্ধ ছিল। স্থায়ীভাবে পুরো চট্টগ্রাম কখনোই ত্রিপুরা রাজের শাসনে ছিল না।
এই দাবি ধরে যদি ত্রিপুরার এই রাজা চট্টগ্রামের ওপর নিজের অধিকার দাবি করতে পারেন, তবে একই যুক্তিতে মুসলমানরা তো পুরো ভারতবর্ষ দাবি করতে পারে। মুসলমানরা আটশ বছর ভারত শাসন করেছে। তাহলে তো পুরো ভারতবর্ষ মুসলমানদের দিয়ে দেওয়া উচিত। বিশেষ করে মুগলদের বংশধররা এখনো রয়ে গেছেন, তারাই এখন পুরো ভারতবর্ষ দাবি করতে পারেন ।
কাজেই চট্টগ্রাম দখল করার স্বপ্নটি একটি বিশেষ মতলব থেকেই করা হয়েছে! ল্যান্ড লকড সেভেন সিস্টারের সমস্যা সমাধানে এটাই ইন্ডিয়া ও তাদের হিন্দুত্ববাদীদের খায়েশ! বড় ধরনের একটি ধাক্কা না খেলে এই খায়েশটি এদের মন থেকে দূর হবে না!
বাংলা দখলের খায়েশটি অনেক পুরোনো
মূলত ১৯৪৭ সাল থেকেই ভারত এই খায়েশটি পূরণে কাজ শুরু করেছে! বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা অনেক আগে থেকেই (১৯৬২ সাল থেকেই) আওয়ামী লীগকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নাকি ষড়যন্ত্র ছিল না, ছিল বাস্তব ঘটনা। আওয়ামী লীগ নেতারাই এসব কথা লিপিবদ্ধ করে গেছেন! ফলে আমাদের কাছে যা ছিল স্বাধীনতাযুদ্ধ, ভারতের কাছে তা পাকিস্তান ভাঙার সফল মিশন। ইন্দিরা গান্ধী তাদের সংসদে দাঁড়িয়ে আমাদের স্বাধীনতা-সংগ্রামকে তাদের জন্য শতাব্দীর সুযোগ (Opportunity of the Century) হিসেবে অভিহিত করেছিলেন!
পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটি গঠনে এই দেশের মানুষের ভূমিকা ও আগ্রহ তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণের চেয়ে কোনোভাবেই কম ছিল না। মুসলমানদের জন্য আলাদা আবাসভূমি তৈরির জন্য যে যে রেফারেন্ডাম হয়েছিল, সেখানে এই দেশের শতকরা নব্বই ভাগ মানুষ সমর্থন দিয়েছিল।
সেই রাষ্ট্রটিকে ভাঙার জন্য রাষ্ট্রের শত্রুদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন। এটাই আওয়ামী লীগের আদি বা আসল চেহারা। এরপর মানচিত্রের পরিবর্তন হলেও আওয়ামী লীগের চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি। অথচ এই আওয়ামী লীগ প্রথম থেকেই পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক সরকারের অংশ হয়েছিল। আবার সেই দেশটিকে ধ্বংসের জন্য শত্রুর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল!
পাশাপাশি দেখেন, এক সৈনিকের নীতিবোধ ও স্বদেশপ্রেম। তিনি হলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। যে দেশটিকে তিনি নিজের দেশ মনে করেছিলেন, সেই দেশটির প্রতি শতভাগ অনুগত ছিলেন, তার সেই ভালোবাসায় কোনো খাদ ছিল না! ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমান তার বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য পাকিস্তানের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সামরিক পদকটি পান। সেই একই জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালে প্রকাশ্য ঘোষণায় বলেছেন, উই রিভোল্ট!
যার হাতে যা আছে, তাই দিয়ে পাকিস্তানি সামরিক জান্তাকে মোকাবিলার পরামর্শ দিয়ে তিনি নিজেই আবার পাকিস্তানিদের হাতে আত্মসমর্পণ করলেন। বাদবাকি চাচারা আপন প্রাণ বাঁচাতে তল্পিতল্পাসহ বর্ডার অভিমুখে বর্ডারের দিকে ছুটলেন! তখন এই তদানীন্তন মেজর জিয়া জাতির স্টিয়ারিং হুইলটি উঠিয়ে হাতে নিয়েছিলেন! শুধু তাই নয়, এরপর জাতি যখনই বিপদে পড়েছে, তখনই তাকে পাশে পেয়েছে!
জাতির জন্য তিনি একটি অপূর্ব নির্দেশনাও দিয়ে গেছেন, এই দেশ ও ভূখণ্ডের শত্রু যেদিকে, মুখটি সেদিকে ঘুরাও। এটি অনেকটা বাতাসের দিকনির্ধারক যন্ত্র অ্যানিমোমিটারের (anemometer) মতো কাজ করে। বাতাস যেদিক থেকে আসে, দেশপ্রেমের এই মেশিনটি অটোমেটিক সেদিকে ঘুরে যায়। এই ফর্মুলাটিই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জাতির সম্মুখে রেখে গেছেন! চিহ্নিত চেতনাবাজদের মেশিনটি ১৯৭১-এ স্টাক বা স্থির হয়ে গেছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তার বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী দর্শন দিয়ে সেই মেশিনটিকে লুব্রিকেট করে গেছেন। সেই মেশিনটি অগত্যা অকার্যকর হয়ে গেলে এই জাতির অস্তিত্বও বিলীন হয়ে পড়বে। বিএনপিকে নিয়ে আমাদের শঙ্কা ও সাহস, এই মেশিনটিকে ঘিরেই!
জীবদ্দশায় শহীদ জিয়া নিজ দলের নেতাকর্মীদের বারবার স্মরণ করিয়েছেন, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। কিন্তু ধীরে ধীরে ঘটে গেছে পুরো উল্টো ঘটনা। নেতাকর্মীদের বড় অংশ বিএনপি করেন না, অমুক ভাই, তমুক ভাইয়ের দল করেন। মূলত, এই অমুক ভাই, তমুক ভাইয়ের কাছে দলটি জিম্মি হয়ে পড়েছে!
এই সুযোগে ফজলুর রহমানের মতো অসংখ্য সুযোগসন্ধানী দলে ঢুকে গেছেন! ব্যক্তিগত কোনো আক্রোশ বা অন্য কোনো কারণে নয়, নেহাত দেশের নিরাপত্তার কারণে এদের প্রকৃত চেহারা দেশবাসীর সামনে উন্মুক্ত করা উচিত। দেশ তো দূরের কথা, এরা দলের চিন্তাও করেন না। স্রেফ ব্যক্তিগত লাভালাভের অঙ্ক থেকেই এরা সব কাজ করেন। এরা অত্যন্ত স্বার্থপর ও ধান্দাবাজ। নিজের স্বার্থে নিজের প্রিয়তমা স্ত্রী বা নিজের রক্তের সন্তানের সঙ্গেও এরা চরম নিষ্ঠুরতা দেখাতে পিছপা হন না!
ফজু পাগলা খেতাব পাওয়া লোকটি তেমনই একজন ব্যক্তিÑতার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনও প্রশ্নবিদ্ধ। তিনি দাবি করেছেন, তার কোনো বাড়ি বা ফ্ল্যাট নেই। এটা শুনে সংগত কারণেই হাসি পেল। তার সম্পর্কে অনেক আগে থেকেই জানি। নিজেকে সততার মূর্ত প্রতীক হিসেবে দেখাতে গিয়ে যে দাবি করলেন, তার কোনো জমি বা বাড়ি নেইÑসেখানেও লুকিয়ে আছে এক করুণ ইতিহাস! এই কথা শুনে এটি না লিখে পারলাম না!
ভদ্রলোক আমার এক নিকটাত্মীয়ের ফুপু শাশুড়িকে বিয়ে করেছিলেন! সেই ঘরে একটি ছেলে রয়েছে। প্রথম স্ত্রী থাকাবস্থায় তিনি দ্বিতীয় কুকর্মটি করেন। প্রখর ব্যক্তিত্বসম্পন্না সেই ভদ্রমহিলা তার একমাত্র ছেলেকে নিয়ে সরে পড়েন এবং চরম মানসিক পীড়নে মারা যান। তখন ছেলেটি স্কুলে পড়ে এবং তার দায়িত্ব নেন ছেলেটির এক খালা। বাবা হিসেবে এই ভদ্রলোক কোনো খোঁজখবরই নেননি। এরশাদের সময় তিনি আওয়ামী লীগের টিকিটে এমপি হয়েছিলেন। সেই এমপি কোটায় ঢাকায় একটি প্লট পেয়েছিলেন। সেই প্লটে একটি বাড়ি করে সেই বাড়িটি বর্তমান স্ত্রীর নামে লিখে দেন প্রথম সন্তানকে বঞ্চিত করার নিমিত্তে! এভাবে তার নিজের করা দুটি বাড়িই বর্তমান স্ত্রীকে লিখে দেন। এই হলো ফজলুর রহমানের ফুলের মতো পবিত্র চরিত্র! ইনি এখন দায়িত্ব নিয়েছেন আওয়ামী চেতনাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। জামায়াত ক্ষমতায় আসা মাত্রই আত্মহত্যার ঘোষণাও দিয়ে রেখেছেন!
একদিকে তার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য বিএনপি নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, অন্যদিকে তিনার মারাত্মক অপছন্দের দেশ পাকিস্তানের ইমরান খানের মতো করে তিনি একটি নতুন দল গড়বেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। চরম হতাশার কথা হলো, বিএনপির মধ্যে এখনো এর অনেক সিম্পেথাইজার রয়েছে! মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক জিয়ার দল তার মতো মুক্তিযোদ্ধা ছাড়া নাকি চলতে পারছে না!
কাজেই আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি নামক দল দুটি কেন ইন্ডিয়ার এত প্রিয়, তা সহজেই অনুমেয়! ফজলুর রহমান ওরফে ফজু পাগলারা এ কারণেই ইন্ডিয়ার অ্যাসেট। আমার এক জুনিয়র ভাই, প্রায়ই একটা কথা বলেন, ‘স্যার, আগে ছিল এক মিরজাফর, এখন হাজার হাজার মিরজাফর সৃষ্টি হয়ে গেছে। এখন এই দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে পারে একমাত্র সৃষ্টিকর্তা!’
সেই সৃষ্টিকর্তার বিশেষ রহমতে ইন্ডিয়া কর্তৃক পরিচালিত আওয়ামী লীগ (এ টিম) ও জাতীয় পার্টি (বি টিম) নামক প্রজেক্ট দুটি শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে! এখন ইন্ডিয়ার নজর পড়েছে বিএনপির ওপর! জামায়াতকেও এই টোপের বাইরে রাখছে না।
ইন্ডিয়া এখন তার রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে! এই কৌশলে সফল হলেই পরবর্তী সামরিক কৌশল নিয়ে অগ্রসর হতে পারবে! রাজনৈতিক কৌশলের অন্যতমটি হলোÑএই দুটি দলের মধ্যে চরম শত্রুতার পরিবেশ তৈরি এবং তা জিইয়ে রাখা!
আক্রমণের ছকটি আঁকা হচ্ছে ভেতর এবং বাহির-উভয় দিক থেকে।
কাজেই বিএনপি এবং জামায়াত নিজেদের অজান্তেই ইন্ডিয়ান রোডম্যাপ ধরেই এগোচ্ছে! পিআর নিয়ে জামায়াতের গোঁ-ধরা এবং বিএনপির হঠাৎ করে মাত্রাধিক চেতনাবাজ হয়ে পড়া, সম্ভবত ইন্ডিয়ান নকশা থেকেই করা হচ্ছে! বিষ জেনে পান করেন কিংবা না জেনে পান করেন, রাগের বশে পান করেন কিংবা খোশমেজাজে পান করেনÑফল একই হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইন্ডিয়ান থিংক ট্যাংক, সমরবিদ ও রাজনীতিবিদদের মনোভাব অধ্যয়ন করলেই বুঝতে পারবেন যে আমাদের আরেকটা দুর্বলক্ষণের জন্য শুধু অপেক্ষা করছে! কাজেই ওয়েকআপ মাই কান্ট্রিম্যান, ওয়েকআপ!
বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি জন্মের পর থেকেই বৈরী পরিবেশে বেড়ে উঠেছে। বলাই বাহুল্য, সেই বৈরিতা এসেছে একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকেই—ভারত নামক প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকে। অন্যদিকে, জনগণের চোখে ধুলো দিতে বারবার ‘জুজুর ভয়’ হিসেবে সামনে আনা হয়েছে পাকিস্তানকে। এভাবে আসল ভয়কে জুজুর ভয় দিয়ে ঢেকে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ভারতের সাম্প্রতিক হুমকিগুলো হালকাভাবে নেওয়া ঠিক হবে না। সামরিক শক্তির ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষিত করতে বাংলাদেশে সীমিত আকারে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ চালু করার কথা আমার দেশ সম্পাদকসহ আরো অনেকেই বলছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজপর্যায়ে স্বল্পমেয়াদি সামরিক ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে । বাংলাদেশেও এমন প্রোগ্রামের মাধ্যমে তরুণদের একটি বড় অংশকে রিজার্ভ ফোর্সে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব।
প্রতিবছর কয়েক লাখ তরুণকে তিন থেকে ছয় মাসের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া গেলে ধাপে ধাপে এক কোটি প্রশিক্ষিত রিজার্ভ ফোর্স গড়ে তোলা যাবে। এতে দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে এবং বিদেশি আগ্রাসন ঠেকাতে জনগণের প্রতিরোধ শক্তি দৃঢ় হবে। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি এই রিজার্ভ ফোর্স ‘টেরিটোরিয়াল ডিফেন্স’ হিসেবে কাজ করতে পারবে, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এক অনন্য শক্তি হয়ে উঠবে।
সঙ্গে সঙ্গে নিচের কাজগুলোও জরুরি ভিত্তিতে করতে হবে
১. দৃঢ় কূটনৈতিক অবস্থান : ভারতীয় নেতাদের হুমকি সরাসরি নিন্দা করা এবং আন্তর্জাতিক মহলে বিষয়টি তুলে ধরা জরুরি।
২. আঞ্চলিক জোটে সক্রিয়তা : চীন, পাকিস্তান ও অন্যান্য বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা আলোচনায় এগিয়ে যাওয়া উচিত। সম্প্রতি পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে এ রকম একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
৩. প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি : সমুদ্র ও আকাশ প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করা এবং আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন।
৪. মিডিয়া ও জনমত গঠন : জাতিকে সচেতন করা যে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে।
৫. অভ্যন্তরীণ ঐক্য : রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ন্যূনতম ঐক্য নিশ্চিত করতে হবে। বাহ্যিক হুমকির মোকাবিলায় বিভক্ত জাতি কখনোই শক্তিশালী হতে পারে না।
লেখক: কলামিস্ট