
দেখতে দেখতে সোমবার এসে পড়ল। গত সপ্তাহের সোমবারে আমরা আচমকা এক হৃদয়বিদারক ঘটনা—‘মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি’র মুখোমুখি হয়েছিলাম। রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে অন্যদিনের মতোই ছিল কচি-কচি শিক্ষার্থীর হইহুল্লোড়, কলরব আর ছোটাছুটির ব্যস্ততা। কেউ ক্লাস করছিল, কেউ ছুটির পর স্কুলব্যাগ গুছিয়ে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন অভিভাবকরা। ঠিক এ সময় ১টা ১৮ মিনিটে শোনা গেল কানফাটা বিকট শব্দ। মুহূর্তেই আগুন, ধোঁয়া আর মৃত্যু-চিৎকারে এলোমেলো হয়ে গেল সবকিছু। জানা গেল, স্কুলভবনে আছড়ে পড়েছে এক যুদ্ধবিমান। এটি ছিল একটি প্রশিক্ষণ বিমান। বিধ্বস্ত হয়ে বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজিআই ধরনের এই যুদ্ধবিমান স্কুল চত্বরের একটা দোতলা ভবনে পড়ে। চীনের তৈরি এই যুদ্ধবিমানটি ছিল একটি প্রশিক্ষণ বিমান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিধ্বস্ত হয়। এরপরই আগুন ধরে যায় স্কুলভবনে। মিলিয়ে যায় ফুলের মতো শিশুদের হাসি। কেউ মুহূর্তেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে, কেউ আগুনে দগ্ধ হয়ে অসহায় আর্তনাদ করে। দুর্ঘটনার খবরে বিচলিত মা-বাবা ও স্বজনরা পাগলপ্রায় হয়ে সন্তানের খোঁজে এদিক-ওদিক দৌড়াতে থাকেন। তাদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে চারপাশ।
উদ্ধারকর্মীরা আহত-নিহতদের উদ্ধার করে রাজধানীর আটটি হাসপাতালে নিয়ে যান। গতকাল রোববার পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫ জনে। এর মধ্যে ২৫ জনই ফুলের মতো ফুটফুটে সুন্দর শিশুশিক্ষার্থী। এই করুণ মৃত্যুর মিছিলে আছেন বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লে. তৌকির এবং স্কুলের মানবীয় গুণাবলির দুজন আদর্শ শিক্ষক মাহেরিন ও মাসুকা। নিহতদের মধ্যে দুজনের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। ডিএনএ পরীক্ষা চলছে। দুর্ঘটনায় দেড় শতাধিক আহত হয়েছে। এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে ৫০ জন। এর মধ্যে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে আছে ৩৬ জন, চারজনের অবস্থা সংকটাপন্ন। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে তাদের পরীক্ষা চলছে। আরো ৯ জনের অবস্থা কম গুরুতর হলেও শঙ্কামুক্ত নয়। আহতদের চিকিৎসা সহায়তা দিতে সিঙ্গাপুর থেকে তিন চিকিৎসক ও দুই নার্স, চীন থেকে তিন চিকিৎসক, ছয় নার্স ও সহকারী এবং ভারত থেকে দুই চিকিৎসক ও নার্স এসেছেন। স্থানীয় চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বয় করে আহতদের চিকিৎসা চলছে। জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটেই ১৭ জন মারা গেছে।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের স্থান দেখতে এখনো ভিড় করছে উৎসুক জনতা। কিন্তু সেখানে এখন নেই কচি শিক্ষার্থীদের প্রাণখোলা হাসির কলরব। স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তৈরি এই স্কুল প্রাঙ্গণ এখন কেমন যেন ভয় ভয় মনে হয়। আমাদের রিপোর্টারকে স্কুলের প্রিন্সিপাল জানিয়েছেন, তারা আপাতত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রেখেছেন। কারণ ছাত্রছাত্রীরা ট্রমায় ভুগছে। এটা ঠিক, এই ট্রমা কতদিনে কাটবে তা বলা যায় না। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) ইঞ্জিনিয়ার ও পরিকল্পনাবিদরা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, মাইলস্টোন কলেজ অ্যান্ড স্কুলটির নির্মাণ কারিগরিভাবে বৈধ হলেও এটি কার্যত অনিরাপদ এলাকায় অবস্থিত। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ এরিয়ার (বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ অঞ্চল) মধ্যে পড়েছে। অর্থাৎ এয়ার ফানেলে পড়েছে। তারা বিমানবন্দর অ্যাপ্রোচ এরিয়ায় থাকা এমন স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদসহ জনসমাগম হয়—এমন স্থাপনা বা প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তেমনি দাবি উঠেছে, এমন জনসমাগমস্থল এলাকা থেকে যেন বিমান বাহিনী কর্তৃপক্ষ তাদের বিমান প্রশিক্ষণ স্থানও অন্যত্র সরিয়ে নেয়। আশা করি, মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নিরাপদ স্থানে অর্থাৎ অন্যত্র তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নতুন করে গড়ে তুলবে। তবে এটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এর আগে স্কুল কর্তৃপক্ষকে ছাত্রছাত্রীদের ট্রমা কাটিয়ে ওঠার জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। প্রথমেই স্কুলের যে জায়গায় বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে, সেই জায়গাটি এমনভাবে পুনর্নির্মাণ করতে হবে, যাতে দুর্ঘটনায় কোনো চিহ্ন অবশিষ্ট না থাকে। স্কুল-কলেজটির পুরো প্রাঙ্গণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি রঙ করে জ্বলজ্বলে করে তুলতে হবে। ক্যাম্পাসটি এমনভাবে সাজাতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা নতুন স্বপ্নে বিভোর হয়, অতীত অর্থাৎ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা ভুলে যায়। দুর্ঘটনার কোনো চিহ্নের কারণে যেন তাদের সেই দুঃসহ স্মৃতির কথা মনে না পড়ে কিংবা চোখে ভেসে না ওঠে। একইভাবে শিক্ষার্থীদের আনন্দ-বিনোদনের মাধ্যমে পাঠে ফিরিয়ে আনতে হবে।
৫ আগস্ট জাতিকে সুখবর দেবেন ড. ইউনূস
এক বিপদের কথা ভুলতে না ভুলতেই প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরেক আশঙ্কার কথা জানিয়ে জাতিকে সতর্ক করেছেন। রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ১৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি জানিয়েছেন, পরাজিত শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তারা নির্বাচনের আয়োজনকে ভন্ডুল করে দেওয়ার জন্য অপচেষ্টা চালিয়েছে। তিনি পরাজিত শক্তির অপচেষ্টাকে প্রতিহত করতে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
ড. ইউনূস ঠিকই বলেছেন। সম্প্রতি গোপালগঞ্জে আমরা পরাজিত আওয়ামী লীগের আস্ফালন দেখেছি। জুলাইযোদ্ধারা সেখানে পদযাত্রা নিয়ে গিয়েছিলেন। গোপালগঞ্জে তাদের প্রতিরোধ করার জন্য সারা দেশের আওয়ামী ক্যাডারদের নিয়ে জড়ো করা হয়েছিল অস্ত্রশস্ত্রসহ। জুলাই বিপ্লবের নায়ক নাহিদ, হাসনাত, সারজিসসহ অন্যদের ওপর তারা ভয়াবহ হামলা চালায়। তাদের হত্যা করাই ছিল এই হামলার লক্ষ্য। তবে তাদের এই রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে আমাদের জুলাইযোদ্ধারা গোপালগঞ্জে গেছেন এবং বক্তৃতা করেছেন। তারা ঘোষণা করেছেন আবার তারা গোপালগঞ্জে যাবেন এবং প্রতিটি উপজেলায় গিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটাবেন।
গোপালগঞ্জের ঘটনার পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছেন। প্রথমেই তিনি বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপি নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। এই বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতারা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, ফ্যাসিবাদের সঙ্গে কোনো আপস নেই। ফ্যাসিবাদের ব্যাপারে আমরা ইস্পাতকঠিন ঐক্যবদ্ধ। যার যার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও দৃষ্টিভঙ্গির কারণে আমরা একে অন্যের বিরোধিতা করছি, সমালোচনা করছি। এটা আমরা করে যাব। তবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা এক ও অভিন্ন।
ড. ইউনূস ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে বসেছেন বাম দলগুলোর সঙ্গে। যতটুকু জানা গেছে, ইতোমধ্যে ৩৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। রোববার প্রথম দফায় বৈঠক ছিল জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে ১৪টি দলের সঙ্গে। বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে সংবাদ সম্মেলনে মোস্তফা জামাল হায়দার জানান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ক্যাটাগরিক্যালি (সুস্পষ্টভাবে) বলেছেন, তিনি আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে নির্বাচনের সময়সীমা, তারিখ ঘোষণা করবেন। আলোচনায় ফলপ্রসূ বিষয় হচ্ছে এটি। তিনি বলেন, দেশে যে অরাজকতা তার একমাত্র সমাধানের পথ নির্বাচন—এটা সরকার বুঝতে পেরেছে।
এই বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টা অন্য দলগুলোর সঙ্গেও বৈঠক করেন। এর মধ্যে রয়েছে ইসলামি দল হেফাজতে ইসলাম, জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, জাসদ (মুশতাক), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (ববি হাজ্জাজ), ইসলামী ঐক্যজোট, সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স, ভাসানী ন্যাপ, লেবার পার্টি, জাসদ (মার্কসবাদী), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম প্রমুখ।
এসব বৈঠকের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বলা হয়, পতিত শক্তির গণ্ডগোল সম্পর্কে ড. মুহাম্মদ ইউনূস কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের সব শক্তি মিলে একটি সুন্দর নির্বাচন করতে না পারলে এসব বড় সুযোগ আমাদের হাতছাড়া হয়ে যাবে। পরাজিত শক্তি যখনই সুযোগ পাচ্ছে, তখনই নানা ধরনের গন্ডগোল সৃষ্টি করছে। এসব করে তারা দেশের স্বাভাবিক অগ্রযাত্রাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে।’ ড. ইউনূস সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘যখনই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আমরা অগ্রসর হচ্ছি, তখনই নানা ষড়যন্ত্র সামনে আসছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, কোনো ষড়যন্ত্র করেই গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। কারণ ফ্যাসিবাদ প্রশ্নে সবগুলো গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য স্পষ্ট।’ প্রধান উপদেষ্টা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা কামনা করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর আগে বলেছেন, তিনি দেশে একটি ইতিহাসসেরা সুন্দর নির্বাচন করতে চান। সেই নির্বাচনের জন্য পুরো জাতিকে তাকে সহযোগিতা করতে হবে। নির্বাচনের আলামত শুরু হয়েছে, তা আমরা দেখতে পাচ্ছি। নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শুরু করেছে। তফসিল ঘোষণার আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বড় ধরনের একটি পর্যালোচনা সভা তারা করবেন। এর কার্যপত্র প্রস্তুত হয়েছে। এবারের নির্বাচন কয়েক দিনে ধাপে ধাপে করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। তার সঠিক উপায় বের করা হচ্ছে। আমরা জানতে পেরেছি, সেনাবাহিনী এবারের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আগের মতো ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে তাদের বটগাছের নিচে বসিয়ে রাখা হবে না। তাদের ম্যাজেস্ট্রেসি পাওয়ার আছে। ইসির আরপিওতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমের ধারায় সেনা, নৌ, বিমান, কোস্ট গার্ড এবং র্যাবের নামও অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রগুলো ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা এবং ড্রোন ব্যবহার করে নজরদারির আওতায় আনা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কয়েক দিনের মধ্যেই ভাষণ দেবেন। তার সরকারের এক বছর পূর্ণ হবে ৮ আগস্ট। তবে আগামী ৫ আগস্ট তার ভাষণ দেওয়ার সম্ভাব্য তারিখ ঠিক করা হয়েছে। কারণ এ দিনই জুলাই ছাত্র গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যান। জানা গেছে, ড. ইউনূসের ভাষণটি প্রস্তুত হচ্ছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনাবলির বর্ণনার পাশাপাশি গত এক বছরের তার সরকারের বিস্তারিত কার্যক্রম তিনি ভাষণে তুলে ধরবেন। সফলতার পাশাপাশি ব্যর্থতার কথাও বলবেন ভাষণে। ভাষণের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হতে যাচ্ছে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করা। নির্বাচনের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। তবে ড. ইউনূস নির্বাচনের সময়সীমা এবং নীতিনির্ধারণীমূলক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন। আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা হবে। সেটি ৩ আগস্ট কিংবা ৪ আগস্ট ঘোষণা হবে। এই ঘোষণায় সবগুলো দল স্বাক্ষর করবে। ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, সোমবার থেকে জুলাই সনদের খসড়া কপি রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হচ্ছে। তারা এতে তাদের সুপারিশ ও মতামত দেবে। এ নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের একটি বৈঠক হবে। এরপরই এটি চূড়ান্ত দলিল হয়ে যাবে। এই সনদের মূল্য অনেক। ইতোমধ্যে বিশিষ্ট নাগরিকদের আলোচনায় জুলাই ঘোষণাকে জাতীয় সনদ হিসেবে মনে করে এটিকে ‘সর্বোচ্চ আইন’ হিসেবে বিবেচনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্র মেরামতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকও শেষ হয়ে আসছে। বেশির ভাগ সংস্কার প্রস্তাবেই সবাই একমত হয়েছেন। কয়েকটি বিষয় বাকি আছে। এগুলোর ব্যাপারেও তারা ঐকমত্যে পৌঁছে যাবেন বলে সবাই আশাবাদী। মনে হচ্ছে, ড. ইউনূসের ভাষণের পর সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়টি পুরো মাত্রায় খোলাসা হয়ে যাবে। সবাই ঢাকঢোল পিটিয়ে নির্বাচনি লড়াইয়ে মনোনিবেশ করবেন।
লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, আমার দেশ