Image description

মাহমুদুর রহমান

জনগণের নামে ছোট ও বড় সব রাজনৈতিক দল যার যার স্বার্থ উদ্ধারে সবসময় টানাটানি করলেও বাস্তবে বাংলাদেশে ১৯৯১ সালের মতো একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ছাড়া প্রকৃত জনমত জানার আর কি কোনো বিশ্বাসযোগ্য উপায় আছে? আমাদের দেশে বিজ্ঞানসম্মত জনমত জরিপের কোনো উদাহরণ নেই।

তেমন কোনো সুযোগও নেই। স্বাধীনতার পর থেকে একাধিক গণভোটের আয়োজন করা হলেও সেসব গণভোটে জনগণের প্রকৃত অংশগ্রহণ নিয়ে প্রতিবার যথেষ্ট সংশয় ছিল। আওয়ামী আমলে জরিপের নামে বিপুল ব্যয়ে সরকারি প্রোপাগান্ডা চালানো হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা জনগণের দোহাই দিয়েই প্রায় ১৬ বছর সেই জনগণের ওপর ভয়াবহতম নির্যাতন চালিয়েছিলেন। এদেশের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র দল, এমনকি ‘ওয়ান ম্যান পার্টি’ পর্যন্ত উঁচু গলায় সর্বদা জনগণের প্রতিনিধিত্বের দাবি করেন।

এই নেতারা টকশোতে এমনভাবে কথা বলেন, যেন তারা জনগণের নাড়িনক্ষত্র, তাদের আশা-নিরাশা, সুখ-দুঃখÑসব বিষয়ে ওয়াকিবহাল। টেলিভিশন হোস্টের দুই পাশে বসে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের টকশো স্টাররা অহরহ জোর গলায় সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী কথা বলে দাবি করেন, জনগণ নাকি তাদের মতের পক্ষেই আছেন। কেমন করে তারা অন্যের মনের কথা জানেন, সেটা আল্লাহই মালুম। ইউটিউব স্টাররাও প্রধানত যার যার এজেন্ডা এবং ‘ভিউয়ার’দের মন বুঝে কনটেন্ট তৈরি করেন। সেই এজেন্ডাও আবার সময়ের সঙ্গে পাল্টায়। সুতরাং জনগণের সার্বিক চাওয়া আর রাজনৈতিক দল ও ইউটিউবারদের চাওয়ার মধ্যে সচরাচর বেশ ফারাক থাকে। প্রথমে রাজনৈতিক দলগুলোর চাওয়া নিয়ে খানিকটা আলাপ করা যাক।

আওয়ামী লীগের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের প্রধান চাওয়া ড. ইউনূস সরকারের যত দ্রুত সম্ভব পতন। ফ্যাসিবাদের দোসর সব বাম দল এবং এরশাদের জাতীয় পার্টিও তাই চায়। টপ করে ড. ইউনূসের পতন ঘটলে শেখ হাসিনা টুপ করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়তে চান। লন্ডন বৈঠকের আগে কিংবা পরে এদের সেই চাওয়ার বিশেষ কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। এপ্রিলের পূর্বঘোষিত সময়ের চেয়ে নির্বাচন মাস দুয়েক এগিয়ে আসায় তারা অবশ্য খুশিই হবে, কারণ আওয়ামী লীগ ও ভারতের প্রধান শত্রু নিঃসন্দেহে এখন ড. ইউনূস। দিল্লির বিরাগের তালিকায় এরপর জামায়াত ও ইসলামিস্টরা। বর্তমান বাংলাদেশে বিএনপি সন্দেহাতীতভাবে সর্ববৃহৎ দল।

তারা বরাবরই চাচ্ছিল যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করে ক্ষমতাসীন সরকার বিদায় নিক। দলটির নীতিনির্ধারকরা বাস্তবসম্মতভাবেই মনে করেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর জনগণের কাছে বিএনপিকে ভোট দেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। যেকোনো রূপে আওয়ামী লীগ নির্বাচনি মাঠে থাকলে বিএনপির আসনসংখ্যা কমে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। সেই ঝামেলা বিনা চেষ্টায় মিটে গেছে। গত ১০ মাসে বিএনপির বেশ কিছু নেতার উগ্র অশালীন কথাবার্তা, সারা দেশে মাঠপর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এবং ভারত প্রশ্নে রহস্যময় অবস্থানের ফলে জনগণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ক্রমেই বিরূপ হয়ে উঠলেও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় সংসদ নির্বাচনে দলটির অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয় না পাওয়ার কোনো কারণ আমি এখনো দেখছি না। সাম্প্রতিক লন্ডন বৈঠকের প্রেক্ষাপটে সেই সম্ভাবনা বরং আরো বেড়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের যৌথ বিবৃতি সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপির রাজনৈতিক কর্তৃত্বের একপ্রকার স্বীকৃতি। এ প্রসঙ্গে আরেকটি কথা বলে রাখা প্রয়োজন। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী দল বিএনপি হলেও খুবই বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে তারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার আন্দোলনে জড়িত হয়নি। কাজটিতে পুরোপুরি লাভ হয়েছে তাদের, অথচ দায়ভার বহন করতে হবে অন্যদের, বিশেষ করে ছাত্র নেতৃত্বের। রাজনীতির মারপ্যাঁচ না বুঝে শুধু তারুণ্যের আবেগ দ্বারা পরিচালিত হলে পরিণতি এমনটাই হয়ে থাকে।

বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিএনপির পর দ্বিতীয় শক্তিশালী দল অবশ্যই জামায়াতে ইসলামী। ১৬ বছরের প্রচণ্ড বৈরী পরিবেশ থেকে তারা মাত্র গত আগস্টে মুক্তি পেয়েছে। জামায়াতের আমির সপ্তাহ দুয়েক আগে ঈদের আগে নির্বাচনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিলেন। কাজেই নির্বাচনবিষয়ক অনিশ্চয়তা কেটে যাওয়ায় তাদের মনঃক্ষুণ্ণ হওয়ার কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই। যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের আয়ু বাড়লে জামায়াত তুলনামূলকভাবে নিরাপদে থাকত। কারণ, বিএনপি ক্ষমতাসীন হলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনুযায়ী সম্ভাব্য বিরোধী দল হিসেবে দলটি নানা রকম চাপের মধ্যে পড়বে বলেই আমার ধারণা।

তা ছাড়া ২০০১ সালে ইসলাম ও ভারত প্রশ্নে বিএনপির যে অবস্থান ছিল বর্তমানে দৃশ্যত তার অনেকটাই পরিবর্তন ঘটেছে। ইসলামের নাম শুনলেই বিএনপির কোনো কোনো নেতার ভ্রু কুঁচকে যাচ্ছে। দলের মধ্যে তথাকথিত সেক্যুলার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাতীয়তাবাদী দলের নেতারা ভারতীয় বয়ানে ভিন্ন মতাবলম্বীদের মৌলবাদী বলে গালি দিচ্ছেন। সুতরাং ফেব্রুয়ারির পর জামায়াতের জন্য পরিস্থিতি বেশ প্রতিকূল হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। সম্ভবত সেটা আগাম বুঝতে পেরেই লন্ডন বৈঠক প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামী কিছুটা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। ছাত্রদের নতুন দল বিগত ১০ মাসে তৃতীয় শক্তি রূপে গড়ে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে। বহুধাবিভক্ত ছাত্র ও যুবশক্তির সংগঠিত হওয়ার জন্য আরো সময়ের প্রয়োজন ছিল।

সে কারণেই জুলাই আন্দোলনের তরুণ নেতারা নির্বাচন দেরিতে চাচ্ছিলেন। নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দল, আদর্শিক মতপার্থক্য, অনভিজ্ঞতা, দাম্ভিকতা, আর্থিক সীমাবদ্ধতা প্রভৃতি নিয়ে এনসিপি এখন পর্যন্ত গুছিয়ে উঠতে পারেনি। গত বছর আগস্টে এই তরুণ নেতাদের যে বিপুল জনপ্রিয়তা ছিল, তারও গ্রাফ লক্ষণীয়ভাবে নিম্নমুখী। এই পরিস্থিতিতে লন্ডন বৈঠক এনসিপির জন্যও কোনো সুখবর বয়ে আনেনি। ‘রিয়ালপলিটিক’ বলে একটা ইংরেজি শব্দ রাজনীতিবিষয়ক একাডেমিক লেখালেখিতে বেশ ব্যবহৃত হয়। মোটা দাগে শব্দটির অর্থ হলো, রাজনীতিতে নীতি ও আদর্শের চেয়ে বাস্তবতা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, ধাক্কা খেতে খেতে একসময় ছাত্রনেতারাও ‘রিয়ালপলিটিক’ রপ্ত করে ফেলবেন। পাঠকদের বোঝার সুবিধার্থে লন্ডন বৈঠকে রিয়ালপলিটিকের একটি বাস্তব উদাহরণ দিচ্ছি।

ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম অংশ নিয়েছেন। কিছুদিন থেকে মনে হচ্ছিল বিশেষভাবে এই দুজনের ওপর বিএনপি নেতৃত্ব অতিশয় রুষ্ট। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ অন্য নেতারা আনুষ্ঠানিকভাবে দুই ছাত্র উপদেষ্টা এবং ড. খলিলের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন।

বিএনপির বেশ কিছু নেতা নিরাপত্তা উপদেষ্টার সমালোচনা করতে গিয়ে তার সম্পর্কে অত্যন্ত অরুচিকর ও অনভিপ্রেত ব্যক্তিগত আক্রমণও করেছেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জেনেছি, ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের যৌথ বিবৃতির খসড়া প্রস্তুতেও ড. খলিলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। বৈঠকের ভেন্যু লন্ডন ডরচেস্টার হোটেলে তারেক রহমান পৌঁছালে ড. খলিলই তাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। অনেক পাঠকই হয়তো জানেন না যে, আজ থেকে দুই দশক আগে এই ড. খলিলের সঙ্গে তারেক রহমানের বিশেষ সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। এটাই রিয়ালপলিটিক। আরো একটি তথ্য দিয়ে এই আলোচনা শেষ করব। ঢাকায় আমার কলেজজীবনের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মধ্যে অন্যতম ড. খলিল ।

খানিকটা তাত্ত্বিক আলোচনা ও রাজনীতির গল্প শেষে এবার জনগণ কী চায়, সেটা বোঝার চেষ্টা করি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যুগে অনেকে হয়তো সেখানেই জনমতের প্রকৃত প্রতিফলন দেখতে পাওয়ার দাবি করবেন। সোশ্যাল মিডিয়ার জনমত জরিপে নিঃসন্দেহে সংস্কার ইস্যু আশু নির্বাচনের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, দেশের কত শতাংশ মানুষ এসব জনমত জরিপে অংশ নেয়? সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্য পড়লে তো মনে হবে যে, আগামী নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। বাস্তবতা কি তাই? আমি তো জামায়াতে ইসলামী ৫০টি আসন পেলে ভীষণ রকম অবাক হব। আমার ধারণা সোশ্যাল মিডিয়ায় জামায়াতের সমর্থকরা বিএনপির সমর্থকদের তুলনায় বেশি সক্রিয়। তাই আমরা সেখানে জনমতের একধরনের ভ্রান্ত প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি।

বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ গ্রামাঞ্চলে বসবাস করেন। তাদের একটি অংশ এখন ফেসবুক কিংবা ইউটিউব ব্যবহার করলেও আমার মনে হয় না তারা মন্তব্য লেখেন অথবা কোনো জরিপে অংশ নিচ্ছেন। তবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে আমার কাছে মনে হয়েছে নির্বাচনের প্রতি তাদের আগ্রহ থাকলেও বিএনপির অসহিষ্ণুতা তারা মোটেও পছন্দ করছেন না। বর্তমান বাংলাদেশের অবিসংবাদিত অভিভাবকতুল্য বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে অনেকটা ঘরে বন্দি থাকলেও তিনি তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে জনমত সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছেন। ঈদুল আজহার পরের দিন বিএনপির শীর্ষ নেতারা তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি নাকি কিছুটা বিরক্তি নিয়েই সময়োপযোগী দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সম্ভবত তার হস্তক্ষেপের ফলেই লন্ডনে ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের সফল বৈঠকটি শেষ পর্যন্ত হতে পেরেছে।

বাংলাদেশের মানুষ বেশ রাজনীতিসচেতন। আমার মনে হয় না পৃথিবীর আর কোনো দেশের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ রাজনীতি নিয়ে এতটা মেতে থাকেন। ১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটাররা রীতিমতো উৎসবের মেজাজে ভোট দিয়েছেন। এরপর ২০০৮ সালে মইন-ফখরুদ্দীন ভোটের আয়োজন করলেও ভারত ও সেনাবাহিনীর আঁতাতের ফলে নির্বাচনের ফলাফলে জনমতের সঠিক প্রতিফলন ঘটেনি। অর্থাৎ ২৫ বছর ধরে আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছি।

দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার দ্বারা কলুষিত ও দুর্বল প্রশাসন দিয়ে কাজটি করা প্রফেসর ইউনূসের জন্য মোটেও সহজ হবে না। লন্ডন বৈঠকের পর অন্তর্বর্তী সরকারের সময় গণনা শুরু হয়ে গেছে। অতীতে দেখা গেছে সুবিধাবাদী প্রশাসন সর্বদা হাওয়া বুঝে কাজ করে। এবারের হাওয়া বিএনপির পক্ষে তীব্র বেগে বইছে। এ অবস্থায় নৈতিকভাবে দুর্বল পুলিশ ও সুবিধাবাদী প্রশাসন দিয়ে ড. ইউনূস প্রতিশ্রুতিমাফিক ‘বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ নির্বাচন’ আয়োজন করতে পারবেন কি না, এ নিয়ে জনমনে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে বলেই আমি ধারণা করছি। জনগণের মনের কথা আমার জানা নেই। তবে আমার ব্যক্তিগত কিছু প্রত্যাশার কথা বলে আজকের লেখা শেষ করব।

আমি চাই বাংলাদেশে আর কখনো শেখ হাসিনার মতো কোনো ফ্যাসিস্ট শাসকের আবির্ভাব না ঘটুক, ভারতীয় আধিপত্যবাদ অন্য কোনো দলের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে ফিরে না আসুক, দেশের সম্পদ লুটপাট বন্ধ হোক এবং সব শ্রেণির নাগরিক আইন অনুযায়ী সুরক্ষা পাক। কিন্তু বাস্তবতা হলো, অন্তত কয়েকটি অতি প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া আমার চারটি প্রত্যাশা পূরণ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখি না।

আমি মনে করি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দুই মেয়াদের প্রেসিডেন্সিয়াল পদ্ধতি আমাদের গ্রহণ করা উচিত। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ওয়েস্টমিনস্টার পদ্ধতি পরিবর্তনে কোনোভাবেই সম্মত না হয়, তাহলে কমপক্ষে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ অবশ্যই দুই মেয়াদে সীমিত করা দরকার। দ্বিতীয়ত, আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে কেয়ারটেকার সরকারের রূপরেখার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো আবশ্যক। তবে সর্বশেষ প্রধান বিচারপতিকে কেয়ারটেকার সরকারের প্রধান করার পুরোনো পদ্ধতি কোনোভাবেই অনুসরণ করা যাবে না।

ওই পদ্ধতির ফলেই বিচার বিভাগ বিতর্কিত হয়েছিল। তৃতীয়ত, ভারতীয় আগ্রাসন মোকাবিলা এবং সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনে ভিনদেশি দালালদের অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে নির্বাচনের আগে একটি জাতীয় চার্টার প্রণয়ন করা আবশ্যক। সর্বশেষ, সব নাগরিকের সম-অধিকার এবং আইনের সুরক্ষাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর পদমর্যাদায় ন্যায়পাল নিয়োগ দেওয়ার কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। আমার কোনো প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ার সম্ভাবনাই আমি অধিক দেখতে পাচ্ছি।