পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে একটি বালিকা বিদ্যালয়ের কাছে বোমা হামলায় পাঁচ শিক্ষার্থীসহ অন্তত নয়জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২৩ জন। বেলুচিস্তান প্রদেশের মাস্তুং শহরে পোলিও টিকাদান কর্মসূচিতে পাহারায় থাকা পুলিশকে লক্ষ্য করে এ হামলা করা হয় ।
দেশটির সিনিয়র পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, হামলাকারীদের লক্ষ্য ছিল একটি পুলিশ ভ্যান, যা একটি পোলিও টিকাদানকারী দলকে নিয়ে যাচ্ছিলো।
পাঁচ শিশু, এক পুলিশ কর্মকর্তা ও এক পথচারী বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন বলে একটি সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পর আরো দুই ব্যক্তি মারা যান। স্কুলের কাছে পার্ক করা একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংযুক্ত একটি ইম্প্রোভাইজড ডিভাইসের কারণে বিস্ফোরণটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি। কিন্তু সীমান্তের ওপার থেকে পাকিস্তানে হামলা রুখতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য প্রতিবেশী আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে দায়ী করেছে ইসলামাবাদ।
হামলার নিন্দা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি বলেছেন, ‘শিশুদের টার্গেট করা একটি বর্বরতা কাজ’। এর আগে মঙ্গলবার ঘরে ঘরে পোলিও টিকাদান অভিযান পরিচালনাকারী স্বাস্থ্য অফিসে হামলায় একজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।
পোলিও কর্মসূচি চলাকালীন পাকিস্তানে এমন ঘটনা নতুন নয়। এর আগে একাধিকবার টিকাকরণ শিবিরে হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। বর্তমানে ৭১টি জেলা জুড়ে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৪৫ মিলিয়ন শিশুকে টিকা দেয়ার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। ২০২৩ সালে পোলিও আক্রান্তের সংখ্যা ছয়ে নেমে এসেছে। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ২০।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানই একমাত্র দেশ যেখানে পোলিও মহামারিতে আক্রান্ত। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো আগে পোলিও টিকাদানকারী দলগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে টিকাদান কর্মসূচি ব্যাহত করার চেষ্টা করেছে। পাকিস্তান তার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মারাত্মক হামলা এবং দক্ষিণে ক্রমবর্ধমান বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের সম্মুখীন হচ্ছে।
বেলুচিস্তানে সবচেয়ে সক্রিয় গোষ্ঠী হলো বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। এটি একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী দল, যেটি নিয়মিতভাবে ইসলামাবাদের নিরাপত্তা বাহিনী এবং পাকিস্তানের নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র: আলজাজিরা
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন