Image description
ফারুক বললেন অভিযোগ ভিত্তিহীন, রাজ্জাক চাইলেন ন্যায় বিচার
রাজধানীর পল্টন ও নিউমার্কেট থানায় দায়ের করা পৃথক হত্যা মামলায় গোপালগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান এবং সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ঢাকার দুটি অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিন বেলা আড়াইটার দিকে তাদের আদালতে আনা হয়। এ সময় বিএনপি কর্মী মকবুল হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানিতে ফারুক খান আদালতকে বলেন, ‌‘জীবনে প্রথমবার এইভাবে আদালতে এসেছি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়। এমন ধরনের কোন কাজ আমি করিনি। আমার নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি কোনো নেতাকর্মীদের নামে মামলা হয়নি। আমি এলাকায় বলেছি, আমি শুধু আওয়ামী লীগের এমপি না আমি সবার এমপি। আমি কখনোই বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করিনি। গত সাতদিন থেকে আমি হাসপাতালে ভর্তি। আমার বাম পায়ে রড ঢুকানো, ক্রাচে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।’ এর আগে রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অনেকেরই প্রশ্ন ছিল বঙ্গবন্ধু পরিবারের কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন। এই আসামি সেই পরিবারের খুব কাছের সদস্য। তিনি সামিট গ্রুপের মালিক আজিজ খানের ভাই। যে আজিজ খান দেশ থেকে কুইক রেন্টালের নামে প্রায় ১০০ লাখ কোটি টাকা পাচার করে সিঙ্গাপুরের মতো দেশের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি নির্বাচিত হয়েছেন। আজিজ খানের এত সীমাহীন দুর্নীতির পেছনের কারিগর হলেন এ আসামি ফারুক খান। অপরদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা বলেন, ফারুক খানের বয়স ৭৩ বছর। তিনি নানাবিধ জটিল রোগে ভুগছেন। তিনি জীবনের তোয়াক্কা না করে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। তাকে সিএমএইচ হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো আভিযোগ নেই। এ সময় তারা আসামির রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছানাউল্ল্যার আদালত তার ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ন্যায়বিচার চেয়েছেন ড. রাজ্জাক রিমান্ড শুনানিতে সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক আদালতকে বলেন, আমি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা শেষে আমেরিকার বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেছি। যেখানকার ছাত্র নীল আর্মস্ট্রং। আমি ২৪ বছর সরকারি চাকরি করেছি বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে। দেশপ্রেমের তাড়নায় আওয়ামী লীগে যোগ দিই। স্বাধীনতার আগে স্বৈরাচার আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে জনসমাবেশ করেছি। ৬৯ এ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ শুধু অংশগ্রহণ না নেতৃত্ব দিয়েছি। আমার বয়স যখন ১১ মাস তখন বাবা মারা যান। আমি ও আমার ভাই নানা বাড়িতে মানুষ হয়েছি। আমরা সেল্ফ ডিপেন্ডেন্ট ছিলাম। আমার পরিবারের সবাই যার যার জায়গায় প্রতিষ্ঠিত। আমাকে যে অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার সঙ্গে বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা নেই। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই।’ এর আগে রাষ্ট্র পক্ষে মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তার রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত তার ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।