
গত দেড় দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বড় অংশই একাডেমিক কার্যক্রমের তুলনায় রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য আর সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পদপদবি দখলে বেশি ব্যস্ত ছিলেন। এতে গবেষণায় পিছিয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি, অবনতি ঘটে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের, শিক্ষার মানও হয় নিম্নমুখী। এর প্রতিফলন দেখা গেছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন র্যাংকিংয়ে। একসময় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুনাম কুড়ালেও এসব র্যাংকিংয়ে কখনই বিশ্বের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় জায়গা করে নিতে পারেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে এ অবস্থার পরিবর্তন হবে—এমন আকাঙ্ক্ষার কথা উঠে এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে।
যদিও হাসিনা সরকারের পতনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র খুব একটা বদলেছে বলে মনে করছেন না তারা। শিক্ষকদের একটি অংশ এখনো রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডে বেশি ব্যস্ত। শিক্ষার্থীরা ব্যস্ত বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। শিক্ষার মানের উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ দেখা না গেলেও অবকাঠামোগত প্রকল্পে বেশ সক্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টিকে রেকর্ড ২ হাজার ৮৪০ কোটি ৩৯ লাখ টাকার অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার। চলতি অর্থবছরের প্রথম জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়া হয়। নতুন প্রকল্পে ছয়টি একাডেমিক ভবন, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নয়টি আবাসিক হল, হাউজ টিউটরদের জন্য নয়টি ভবন, আবাসিক-প্রশাসনিকসহ আরো সাতটি ভবন নির্মাণের কথা রয়েছে। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এখন পর্যন্ত সর্ববৃহৎ প্রকল্প।
অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনুমোদনকৃত বৃহৎ এ উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে এরই মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। দেশের অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী নিজেদের বঞ্চিত দাবি করে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। আর এসব উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডারসহ অন্যান্য কার্যক্রম নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ আরো বিঘ্নিত হওয়ার শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শেখ হাসিনার দেখানো পথই অনুসরণ শুরু করেছেন। গবেষণা এবং পঠন-পাঠন পদ্ধতির উন্নয়নে জোর না দিয়ে শুধু ভবন নির্মাণ করা হলে শিক্ষার মানে উৎকর্ষ ঘটবে না।
শিক্ষার মানোন্নয়নে এ ধরনের অবকাঠামোগত প্রকল্পের তুলনায় গবেষণার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং পঠন-পাঠন পদ্ধতির উন্নয়নে বেশি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সালাম। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের এ বড় প্রকল্প শিক্ষার মানোন্নয়নে সে রকম কোনো ভূমিকা রাখবে বলে মনে হয় না। কারণ শিক্ষার মানোন্নয়নে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন গবেষণার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও পঠন-পাঠন পদ্ধতির আধুনিকায়ন। এ প্রকল্পে এমন কোনো উদ্যোগ নেই যা পঠন-পাঠন পদ্ধতিকে উন্নত করবে বা গবেষণার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করবে, শিক্ষকদের গবেষণায় উৎসাহিত করবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর আমরা আশা করেছিলাম প্রশাসন শিক্ষার মানোন্নয়নে আন্তরিক হবে। কার্যকর পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করবে। কিন্তু এক বছরে তেমন কোনো উদ্যোগই দেখা যায়নি, যা অত্যন্ত হতাশার।’
১৯২১ সালের ১ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার সময় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম ছিল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেলের। এ কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হতো ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান এবং আন্তর্জাতিক পরিচিতি দুটোই বৃদ্ধি পাওয়ার কথা ছিল। তবে বাস্তব চিত্র এর বিপরীত। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা-গবেষণায় এগোতে পারেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এশিয়ায়ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো উল্লেখযোগ্য স্থান করে নিতে পারেনি।
টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাংকিং ২০২৫-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১০০১ থেকে ১২০০-এর মধ্যে আর এশিয়ার মধ্যে অবস্থান ৪০১ থেকে ৫০০-এর মধ্যে রয়েছে। এমনকি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যেও শীর্ষ অবস্থান অর্জন করতে পারেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিগত বছরগুলোর চেয়েও এ বছর র্যাংকিংয়ে পিছিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এর আগে ২০২৪ সালের টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাংকিংয়ে বিশ্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিল ৮০১ থেকে ১০০০-এর মধ্যে আর ২০২৩ সালে অবস্থান ছিল ৬০১ থেকে ৮০০-এর মধ্যে।
আওয়ামী শাসনামলে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, সন্ত্রাস, গেস্টরুম সংস্কৃতিতে আক্রান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে সমালোচনা অনেক দিনের। সে সরকার পতনের প্রায় এক বছর হতে চলেছে, কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বাড়াতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ এখনো দেখা যায়নি বলে অভিযোগ অনেক শিক্ষার্থী ও পর্যবেক্ষকদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত এক বছরের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমের বড় অংশজুড়ে ছিল সভা-সেমিনার আয়োজন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ননির্ভর। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গবেষণায় গুরুত্ব দেয়ার কথা বলা হলেও এ বিষয়ে কোনো বাস্তবিক উদ্যোগ দেখা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১ হাজার ৩৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকার প্রস্তাবিত বাজেটে গবেষণা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের মাত্র ২ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক এ বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত একটি বিভাগের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মাহমুদুল হাসান। গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী শিক্ষার মানোন্নয়নের বিষয়ে জানতে চাইলে এ শিক্ষার্থী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আমাদের বিভাগের শিক্ষকদের বেশির ভাগ রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী। দেড় দশক ধরে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা ক্লাসের চেয়ে রাজনীতি, নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য আর সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পদপদবি বাগাতে ব্যস্ত ছিলেন। এ শিক্ষকদের ক্লাস কিংবা অন্য কোনো একাডেমিক প্রয়োজনে পাওয়া যেত না। এখন আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের অনেকে পলাতক কিংবা গা বাঁচিয়ে চলছেন। আর আওয়ামীবিরোধী শিক্ষকরা এখন রাজনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে যুক্ত হয়েছেন। শিক্ষকদের ক্লাস নেয়ার ধরন ও মান একই রকম থেকে গেছে। শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা প্রতারিতই থেকে যাচ্ছি।’
সর্বশেষ একনেক সভায় গৃহীত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০৩০ সালের জুনে শেষ হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। একনেক সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪১টি বহুতল ভবন নির্মাণ ও অন্য আনুষঙ্গিক কাজ বাস্তবায়িত হবে। এছাড়া পাবলিক টয়লেট, সার্ভিস লাইন, ড্রেনেজ সিস্টেম ও ২৫৬টি ওয়েস্টবিন নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের টিনশেড ভেঙে ১২তলা ও আটতলা দুটি সম্প্রসারণ ভবন, মাস্টারদা সূর্য সেন হলের উত্তর অংশ ভেঙে ১১তলা সম্প্রসারণ ভবন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল প্রাঙ্গণের শহীদ আতাউর রহমান খান খাদিম ভবন ও ক্যাফেটেরিয়া ভেঙে ১৫তলা ও ছয়তলা দুটি ভবন, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের টিনশেড ও একতলা মূল ভবন ভেঙে সেখানে ১২তলা ও ছয়তলা দুটি, ড. কুদরাত-এ-খুদা হোস্টেলের বর্তমান বাংলো ভেঙে ১০তলা, আটতলা ও পাঁচতলা তিনটি ভবন নির্মাণ। ছাত্রীদের জন্য শাহনেওয়াজ হোস্টেল ভেঙে ১৫তলা ছাত্রী হল, শামসুন নাহার হলের ভেতরে বিদ্যমান হাউজ টিউটর কোয়ার্টার ও গ্যারেজ ভেঙে ১০তলা ও ছয়তলা দুটি ভবন, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের বিদ্যমান স্টাফ কোয়ার্টার ‘বি’ ও ‘ডি’ ভবন ভেঙে ১১তলা ও আটতলা দুটি হল, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের ভেতরে প্রভোস্ট বাংলো, হাউজ টিউটর কোয়ার্টার ও তিনতলা সিকদার মনোয়ারা ভবন ভেঙে ১০তলা সম্প্রসারণ ভবন নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি হলে আবাসিক শিক্ষকদের জন্য ২০টি ফ্ল্যাটসহ ১১তলাবিশিষ্ট একটি করে শিক্ষক কোয়ার্টার নির্মাণ করা হবে।
শিক্ষকদের আবাসিক ভবন হিসেবে মাস্টারদা সূর্য সেন হল এবং হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের বর্তমান প্রভোস্ট বাংলো ভেঙে একটি দোতলাবিশিষ্ট উপ-উপাচার্যের বাংলো এবং দক্ষিণ ফুলার রোড আবাসিক এলাকার ১২ ও ১৩ নম্বর ভবন ভেঙে ১৫তলা বিশিষ্ট (মোট ১১২টি ফ্ল্যাট) একটি আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া কর্মচারীদের জন্য ছয়তলা ভবন ও চারতলাবিশিষ্ট মসজিদুল জামিয়া কমপ্লেক্স নির্মাণের কথা বলা হয়েছে।
শতভাগ সরকারি অর্থে নেয়া বৃহৎ এ প্রকল্পে শিক্ষার মান উন্নয়নে কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। যদিও টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাংকিংয়ের ২০১৬ থেকে ২০২৫-এর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৬ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে টিচিং কোয়ালিটিতে পিছিয়েছে ঢাবি। ২০১৬ সালে এ ক্যাটাগরিতে ঢাবির পয়েন্ট ছিল ২১ দশমিক ৭, আর ২০২৫ সালে এ ক্যাটাগরিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি অর্জন করেছে ২০ দশমিক ১ পয়েন্ট।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক অধ্যাপক বণিক বার্তাকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। তবে শিক্ষার মান বৃদ্ধি করতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন গবেষণার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং গবেষণার পরিবেশ তৈরি। কিন্তু আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় এ খাতে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয় না। অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হলেও গবেষণা খাতে ব্যয় করা হয় অতি সামান্য। শিক্ষার মান বাড়াতে হলে অবশ্যই এ খাতে গুরুত্ব দিতে হবে।
প্রকল্পটির মোট বরাদ্দের ১৬ শতাংশ ব্যয় হবে একাডেমিক ভবন নির্মাণে আর আবাসিক ভবন নির্মাণে প্রায় ৪০ শতাংশ ব্যয় করা হবে। অন্যান্য ভবন নির্মাণেও ব্যয় করা হবে বরাদ্দের ১৭ শতাংশ।
তবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলিক চাহিদা ছিল বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা। তিনি বলেন, ‘আমাদের ভবনগুলো অনেক পুরনো। সার্বিকভাবে পরিস্থিতি একটি স্ট্যান্ডার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত মানের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মৌলিক চাহিদা ছিল। যে প্রকল্পটি পেয়েছি সেটির অর্থ দিয়ে মৌলিক চাহিদা মোটামুটিভাবে পূরণ করা যাবে। এটা ছাড়াও অন্যান্য জায়গায়ও আমাদের বরাদ্দ দরকার আছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘একটি শিক্ষাবান্ধব পরিবেশের জন্য সুন্দর পরিবেশের দরকার হয়। ভালো স্বাস্থ্য ও পরিবেশ তৈরি করতে পারলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ভালো হবে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়বে। অবকাঠামো উন্নয়নে একটি একাডেমিক সুবিধাও আছে। পড়াশোনায় মনোযোগী হতে সহায়তা করবে। সুন্দর পরিবেশ এখানে মৌলিক চাহিদা পূরণ করবে। আগামীতে শিক্ষা, গবেষণার জন্যও আমরা বরাদ্দ চাইব। বিভিন্ন আলোচনা, সংলাপের মাধ্যমে গবেষণায় কীভাবে বরাদ্দ বাড়ানো যায় সেটি দেখা যেতে পারে। ইউজিসি যদি শিক্ষা ও গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়ায় তাহলে সে জায়গায়ও আমরা আরো বেশি গুরুত্ব দিতে পারব।’
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন’ প্রকল্প অনুমোদন করতে পেরে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। একনেক সভা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ অধ্যাপক বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক একজন ছাত্র ও শিক্ষক হিসেবে ২ হাজার ৮৪০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করতে পেরে গর্বিত মনে হচ্ছে। আমার সময়ে একটি বড় প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এটি শেষ করতে পারলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অবকাঠামোগত দিক থেকে পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে। এখানে নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণের সুযোগ নেই। তাই পুরনো ভবনগুলো ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে, সম্প্রসারণ করা হবে।’