Image description
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী কে এই অতিশি
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোয় অরবিন্দ কেজরিওয়ালের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন আম আদমি পার্টির নেত্রী অতিশি মারলেনা। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর (উপ-রাজ্যপাল) ভিকে সাক্সেনার সঙ্গে দেখা করে নিজের পদত্যাগপত্র তুলে দেন কেজরিওয়াল। তার সঙ্গেই সাক্সেনার কাছে গিয়ে দিল্লিতে নতুন সরকার গড়ার দাবি জানিয়েছেন অতিশি মারলেনা। প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা ১৯৮১ সালের ৮ জুন জন্ম নেওয়া অতিশি দিল্লির একটি শিক্ষাবিদ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা বিজয় সিং ও মা তৃপ্তা ওয়াহি উভয়েই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। অতিশির পুরোনাম অতিশি মারলেনা সিং। নামের মধ্যবর্তী অংশ মার্কস এবং লেনিন নামের মিশ্রণ। কারণ, জার্মান দার্শনিক মার্কস ও রুশ বিপ্লবের নেতা লেনিনের ভক্ত তিনি। তাদের মতাদর্শ ও চিন্তাধারা নিজের মধ্যে লালন করেন অতিশি। এ ভালোবাসা থেকেই দুই গুরুর নামের অংশ মিলে হয়েছে ‘মারলেনা’। যদিও রাজনৈতিক জীবনে নামের শেষের দু’টি অংশ ব্যবহার করেন না অতিশি। অতিশি নয়াদিল্লির স্প্রিংডেলস স্কুলে মাধ্যমিক ও স্টিফেন কলেজে উচ্চমাধ্যমিকে পড়াশোনা করেন। ইতিহাসে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে ভর্তি হন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে তিনি ২০০৩ সালে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৫ সালে রোডস স্কলার হিসেবে শিক্ষাগত গবেষণায় দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর নেন অতিশি। রাজনীতিতে অংশগ্রহণ ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে আম আদমি পার্টিতে (এএপি) যোগদানের মাধ্যমে অতিশির রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। এরপর থেকেই দলের নীতিনির্ধারণে প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। বিশেষত, ভারতে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের সময় তার অভিজ্ঞতা থেকে বেশ কিছু নীতি প্রবর্তন করা হয়। ২০১৫ সালে মধ্য প্রদেশের খান্ডোয়া জেলায় জল সত্যাগ্রহের সময় তার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। যেখানে তিনি প্রতিবাদ ও পরবর্তী আইনি চ্যালেঞ্জের সময় আম আদমি পার্টির নেতা অলোক আগরওয়ালকে সমর্থন করেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে অতিশিকে পূর্ব দিল্লির জন্য দলের ইনচার্জ নিযুক্ত করা হয়। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তৃতীয় স্থানে থেকে বড় ব্যবধানে পরাজিত হন। দিল্লির রাজনীতিতে উত্থান ২০২০ সালের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন তার রাজনৈতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে মনে করা হয়। দক্ষিণ দিল্লির কালকাজি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে অতিশি বিজেপি প্রার্থী ধরমবীর সিংকে ১১ হাজার ৪২২ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। এ জয় তাকে দিল্লি সরকারের মধ্যে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করতে সহায়তা করে। মন্ত্রিপরিষদে নিয়োগ ও আইন প্রণয়নে ভূমিকা নির্বাচনী সাফল্যের পরে, অতিশিকে ক্যাবিনেট মন্ত্রী হিসেবে দিল্লি সরকারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০২২-২৩ সময়কালে, তিনি পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া নারী ও শিশু কল্যাণ, সংখ্যালঘু কল্যাণ এবং শিক্ষাসহ আরও বেশ কয়েকটি কমিটির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দিল্লির সরকারি স্কুলগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষা অধিকার আইনের সঙ্গে মিল রেখে স্কুল পরিচালনা কমিটি গঠন এবং বেসরকারি স্কুলগুলোর বাড়তি ফি নেওয়া বন্ধ করতে নীতিমালা প্রণয়নসহ অনেক জনপ্রিয় পদক্ষেপ হাতে নেন তিনি।