বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ঐকমত্যের সরকারে রূপ নিতে যাচ্ছে। সরকার থেকে বাদ পড়ছেন কয়েকজন উপদেষ্টা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে গ্রহণযোগ্য কয়েকজন ব্যক্তি নতুন করে যুক্ত হবেন। আগামী নির্বাচন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে ঐকমত্যের সরকারের প্রধানও থাকবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এজন্য ঐকমত্যের সরকার গঠনে লিয়াজোঁর উদ্দেশ্যে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার একজন বিশেষ সহকারী নিয়োগ পাচ্ছেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্রগুলো জানান, অন্তর্বর্তী সরকার একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চায়। নানা কারণে এখন নির্বাচন নিয়ে ভাবছে অন্তর্বর্তী সরকার। ইতোমধ্যে নির্বাচনের সম্ভাব্য রূপরেখা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস নতুনভাবে সরকার সাজাবেন। এ সরকারে কয়েকজন নতুন মুখ যুক্ত হবেন। এ কাজ ভালোভাবে সম্পাদন করতে রাজনৈতিক দল থেকে প্রতিনিধি, ধর্মীয় দলের প্রতিনিধি, সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয় করা হবে।
সূত্র জানান, এ কাজটির লিয়াজোঁর জন্য একজন ব্যক্তিকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার। যিনি সিনিয়র সচিব পদমর্যাদা পাচ্ছেন। ওই ব্যক্তি একজন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হতে পারেন বলে জানা গেছে। সূত্র জানান, আজকালের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে এ নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে মুখ্য সচিব জরুরিভাবে এ-সংক্রান্ত সারসংক্ষেপ পাঠান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। পরে সেটি আবার পাঠানো হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সূত্র জানান, এ ব্যাপারে যে কোনো সময় প্রজ্ঞাপন হবে। সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, ঐকমত্য গঠনের কাজ করবেন তিনি। এ নিয়োগের মেয়াদ ছয় মাস হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সাবেক সচিব ও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘যোগ্যদের নিয়ে যদি এটি করা হয় ভালো হবে, বিষয়টি ইতিবাচক। ঐকমত্যের সরকার হলে তিনটি কাজের কথা বলব অগ্রাধিকার দিতে। প্রথমত. মানুষের মধ্যে যে অস্থিরতা আছে তা দূর করে স্থিতিশীলতা আনা। দ্বিতীয়ত. যৌক্তিকভাবে যতগুলো সংস্কার করা যায় তা সমাধান এবং সুন্দরভাবে একটি গ্রহণযোগ নির্বাচন করা।’ এর আগে ১৬ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় ‘জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন’ প্রতিষ্ঠা করা হবে বরে জানিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রাষ্ট্র সংস্কারে রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে তুলতে এ কমিশন কাজ করবে বলেও জানানো হয়। প্রথম পর্যায়ে যে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে এ কমিশনের চেয়ারম্যানদের নিয়ে ‘জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন’ প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টা কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন বলেও জানানো হয় সে সময়। তবে এখনো সে কমিশন গঠিত হয়নি। এটা নিয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা গেছে, কমিশন আলাদা করতে চাইলে হবে, তবে এখনো সে বিষয়ে নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।