Image description
চলতি সপ্তাহে ঐকমত্যে পৌঁছানোর আশা সরকারের

বিএনপির খসড়া প্রস্তাবের সূত্র ধরে আবারও আলোচনায় জুলাই ঘোষণাপত্র। দলটি এখন তাদের প্রস্তাবের ওপর মিত্র দলগুলোর মতামত নিচ্ছে। তাদের সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রস্তাব চূড়ান্ত করে তা অন্তর্বর্তী সরকারকে দেবে বিএনপি। এদিকে চলতি সপ্তাহেই ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্র খসড়ার সঙ্গে বিএনপির জুলাই ঘোষণাপত্র খসড়ার কিছু ক্ষেত্রে পার্থক্য রয়েছে। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৭২-এর সংবিধানের মূলনীতি বাতিলের ব্যাপারে যে কথা বলা হচ্ছে, সেটির বিষয়ে কোনো কথা বলেনি বিএনপি। নিজেদের প্রস্তাবনায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমাজে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার কথা বলেছে দলটি।

শিক্ষার্থীদের জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্র খসড়ায় বলা হয়েছে, এটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে কার্যকর বলে ধরে নেওয়া হবে। তবে বিএনপি নেতাদের অভিমত, এটা অপ্রয়োজনীয়। এটাকে ঘোষণা আকারে দিতে হবে।

যখন এটা নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হবে, তখন এটা ঘোষিত হয়েছে বলে গণ্য হবে। 

বিএনপির সূত্রে জানা যায়, খসড়া প্রস্তাবে ১৬টি দফার উল্লেখ করা হয়েছে। সর্বশেষ দফায় চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ভূমিকার কথা স্বীকার করে ন্যূনতম সময়ের মধ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত জাতীয় সংসদে সাংবিধানিক সংস্কার করার কথা বলেছে দলটি। মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বিগত দিনের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের ত্যাগ এবং জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি রয়েছে তাদের খসড়ায়।

বিএনপি তাদের প্রস্তাবের খসড়া গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২-দলীয় জোট, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিসহ (এলডিপি) মিত্র দল ও জোটগুলোকে দিয়েছে। এরই মধ্যে দুটি দল ও দুটি জোটের সঙ্গে আলোচনাও করেছে বিএনপি। গতকাল সর্বশেষ আলোচনা করেছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে। বাকি দল ও জোটগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে তাদের মতামত ও স্বাক্ষরের ভিত্তিতেই প্রস্তাবটি চূড়ান্ত করার পর তা প্রকাশ করবে তারা।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে বিগত ১৬ বছরের আন্দোলন ও নির্যাতিত হওয়ার ঘটনাপ্রবাহ এবং শেষ পর্যন্ত গণ অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক দলগুলোর অবদানকে তাদের প্রস্তাবে প্রাধান্য দিয়েছে বিএনপি।

বিএনপি তাদের ঘোষণাপত্রের খসড়ায় আরও বলেছে, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা জবরদস্তিমূলক শাসন ও একনায়কতন্ত্র চালিয়েছিলেন। স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতি ও মাফিয়া শাসন প্রতিষ্ঠা করে আন্তর্জাতিকভাবে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করেছে।

বিগত তিনটি বিতর্কিত ও সাজানো সংসদ নির্বাচনের কথাও এসেছে। বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে বৈষম্য সৃষ্টি এবং এর বিরুদ্ধে ছাত্রদের আন্দোলন, সেই আন্দোলনে স্বৈরাচারী শাসনের নিপীড়ন, গণহত্যা ও গণ অভ্যুত্থানের কথা। বিগত ১৬ বছরের দীর্ঘ ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রাম এবং জুলাই গণ অভ্যুত্থানকালে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক সংঘটিত গুম-খুন, হত্যা, গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি লুণ্ঠনের অপরাধসমূহের দ্রুত উপযুক্ত বিচারের অভিপ্রায় জানিয়েছে বিএনপি।