ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে বাকি দেড় মাসেরও কম সময়। ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র জমার সময় শেষ হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্যমতে, সারাদেশের ৩০০ আসনে রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্রভাবে মোট দুই হাজার ৫৫৯ টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।
এর মধ্যে বিএনপি থেকে সর্বোচ্চ ৩৩১টি, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী থেকে ২৭৬টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে ২৬৮টি, জাতীয় পার্টি থেকে ২২৪টি, গণঅধিকার পরিষদ থেকে ১০৪টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস থেকে ৯৪টি, খেলাফত মজলিস ৬৮টি, সিপিবি থেকে ৬১টি, এবি পার্টি থেকে ৫৩টি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে ৪৪টি, বাসদ থেকে ৪১টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ৪৭৮টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতায় যাওয়ার রাস্তা প্রশস্ত করতে মিত্র দলগুলোর জোট বা আসন ছাড় দিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। ইসলামী ও সমমনা দলগুলোর সঙ্গে কয়েক মাস আগে থেকেই এক টেবিলে ছিল জামায়াত। সর্বশেষ গেল সপ্তাহে নতুন করে এনসিপি, এলডিপি ও এবি পার্টিকে কাছে টানে দলটি।
সূত্রের খবর, জামায়তের সঙ্গে থাকা দলগুলোর মধ্যে ভোটব্যাংকে এগিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দেশব্যাপী তাদের বড় সমর্থন থাকলেও আসন ভিত্তিক ভোটারের হার কম। এসব বিবেচনায় অর্ধশতাধিক আসন চায় পীর সাহেব চরমোনাইয়ের দল। তবে জামায়াতের পক্ষে থেকে ৩৫টি আসনে ছাড় দেয়ার গ্রিন সিগন্যাল দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আসন ছাড়ার কিছু নেই, আমরা সবাই বসে সমঝোতায় আসবো। আমাদের দলের আমির এই মুহূর্তে ঢাকার বাইরে আছেন। উনি ঢাকায় ফিরলে সব দলের আমিরদের সঙ্গে বসে আসনগুলো নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগতে পারে।
শেষ মুহূর্তে জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোটে আসা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে ইতোমধ্যে ৪৪টি আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন প্রার্থীরা। তবে শেষ পর্যন্ত এই আসনগুলো থেকেও ছাড় দিতে হতে পারে দলটির। দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে এনসিপির মিডিয়া উপ-কমিটির প্রধান মাহাবুব আলম বলেন, আলোচনা চলছে, আমরা সবাই ছাড় দিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছাতে চাই। তবে জামায়াত ও এনসিপির পৃথক দুইটি সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে, শেষ পর্যন্ত ২৫-৩০টি আসনে এনসিপির প্রার্থীরা নির্বাচন করতে পারেন।
এছাড়া জামায়াতের সঙ্গে থাকাদের মধ্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসকে ৫ থেকে১০টি, খেলাফত মজলিসকে সর্বোচ্চ পাঁচটি, এবি পার্টিকে তিন থেকে পাঁচটি ও এলডিপিকে দুইটি আসনে ছাড় দেয়া হতে পারে।
জামায়াতের একটি সূত্র জানিয়েছে, দলের জন্য ১৯০ আসন রেখে বাকি ১১০ আসন নির্বাচনী সমঝোতায় থাকা দলগুলোতে দেয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কথা বলতে নারাজ সমঝোতায় থাকা দলগুলো। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আসন সমঝোতায় আলোচনা চলমান, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে না আসা পর্যন্ত কনফার্ম বলা সম্ভব না কে কতটা পাচ্ছেন বা ছাড় দিচ্ছেন। তবে শতাধিক আসনে ছাড় দেয়ার পরিকল্পনা জামায়াতের রয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে থাকা দলগুলোর মধ্যে থাকা দলগুলো কে কতটা আসনে লড়বেন বিষয়টা নিশ্চিতভাবে জানতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
এদিকে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর মধ্যে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হয়েছে। মিত্র দলগুলোর জন্য ১২টি আসন ছেড়েছে বিএনপি। এছাড়া নিজ দল থেকে পদত্যাগ করা পাঁচ রাজনীতিককে পাঁচটি আসনে মনোনয়ন দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। নিজ দল থেকে পদত্যাগ করে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনে শাহাদাত হোসেন সেলিম, কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী-বাজিতপুর) আসনে সৈয়দ এহসানুল হুদা, ঢাকা-১৩ সংসদীয় আসনে ববি হাজ্জাজ, কুমিল্লা-৭ আসনে রেদোয়ান আহমেদ এবং ঝিনাইদহ-৪ আসনে রাশেদ খাঁন।