Image description

রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে শহীদ শরীফ ওসমান হাদীর হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের সময় পিস্তল সদৃশ একটি অস্ত্রসহ আটক হওয়া ব্যক্তির বিরুদ্ধে এর আগেও নিজেকে মেজর পরিচয় দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সে ঘটনায় তার নামে ডিএমপির রমনা মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও রজু হয়।

সোমবার রাতে হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে চলা আন্দোলনকালে খেলনা পিস্তলসহ শাহবাগ এলাকায় অবস্থানকালে তাকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে আন্দোলনকারীরা।

পুলিশ জানায়, সোমবার রাত আনুমানিক ৮টা ৩০ মিনিটে শাহবাগ এলাকায় আন্দোলন চলাকালে স্বেচ্ছাসেবকদের সন্দেহ হলে মো. আরাফাত জামান নামের ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। পরে আন্দোলনকারী স্বেচ্ছাসেবকরা তাকে পিস্তল সদৃশ অস্ত্রসহ শাহবাগ থানায় নিয়ে যান। পরবর্তীতে সিআইডির পরীক্ষায় উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি খেলনা পিস্তল বলে নিশ্চিত করা হয়।

জানা গেছে, আটক আরাফাত জামানের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার অরণ্যপাশা এলাকায়। তিনি বর্তমানে ধানমন্ডি এলাকায় বসবাস করছিলেন। গতকাল শাহবাগে ঘটনার পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে পিস্তল সদৃশ বস্তুটি জব্দ করা হয়। একই সময় সিআইডির একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরীক্ষা করে নিশ্চিত করে যে সেটি একটি খেলনা পিস্তল।

ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে ইনকিলাব মঞ্চের বেশ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আরাফাত জামান যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলস থেকে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি সম্পন্ন করে দেশে ফেরেন। তার বাবা ধাবা গ্রুপের কান্ট্রি ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং ২০২২ সালে মারা যান। তার মা মকবুল হোসেন কলেজের ভূগোল বিভাগের একজন অধ্যাপিকা।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লায় বিয়ের পর তার স্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেলে তাদের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। পরিবারের দাবি, এসব ঘটনার পর থেকেই তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন।

এদিকে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এর আগেও গত ৪ অক্টোবর সকালে রাজধানীর পরিবাগ এলাকায় কোমরে অস্ত্র সদৃশ বস্তু নিয়ে অবস্থানকালে আরাফাত জামানকে আটক করে পুলিশ। সে সময় জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজেকে ডিজিএফআইয়ের মেজর মো. আরাফাত জামান পরিচয় দিয়ে দাবি করেন যে, তিনি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’ কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ডিউটিতে নিয়োজিত রয়েছেন।

তবে তিনি কোনো বৈধ পরিচয়পত্র উপস্থাপন করতে অস্বীকৃতি জানান।জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, “তোরা ঠিকভাবে ডিউটি কর না, হইলে তোদের চাকরি খেয়ে দিব।”

পরবর্তীতে তিনি ‘ZAMAN MD ARAFAT’ নামে একটি আইডি কার্ড সদৃশ কার্ড প্রদর্শন করেন, যেটিকে ডিজিএফআইয়ের পরিচয়পত্র বলে দাবি করেন। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে যাচাই করে তার ডিজিএফআইয়ের কোনো কর্মকর্তার পরিচয়ের সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় সেসময় রমনা থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা রজু হয়।

ঢাকাটাইমস