ভ্যাটিক্যান সিটির বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ কেভিন রেন্ডম বলেছেন, আমি এখানে শান্তির দূত হিসেবে এসেছি। বাংলাদেশের প্রকৃতি ও পরিবেশ আমাকে বিমোহিত করেছে। তার চেয়েও বেশি সুন্দর লেগেছে আপনাদের হৃদয়ের ভালোবাসা। এ দেশের অসাম্প্রদায়িক মনোভাব আমাকে মুগ্ধ করেছে। শুভ বড়দিন—সবার মঙ্গল কামনা করি।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত ৯টায় ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের গোল্লা গির্জায় স্থানীয় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র বড়দিন উপলক্ষে আয়োজিত ক্রিসমাস মিশায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ও ঢাকা-১ আসন (দোহার–নবাবগঞ্জ) থেকে ধানের শীষের প্রার্থী খন্দকার আবু আশফাক।
রাষ্ট্রদূত কেভিন রেন্ডম বলেন, গত দুই বছর ধরে আমি বাংলাদেশে আছি। এ এলাকার মানুষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি এবং সবার খোঁজখবর নিচ্ছি। বড়দিন সবার জন্য শান্তির বার্তা বয়ে আনুক—এই প্রত্যাশা করি। এ দেশের মানুষের মঙ্গল ও সহনশীলতা দেখতে চাই। সব ধর্মের মানুষ যেন সৌহার্দ্য ও সাম্য বজায় রাখে—এটাই আমার কামনা।
এ সময় তিনি উপস্থিত স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি দিনাজপুর ও সিলেট ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। পরে তিনি গির্জার অভ্যন্তরে বড়দিনের প্রার্থনা সভায় যোগ দেন। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি বান্দুরার হাসনাবাদ গির্জা পরিদর্শনে যাবেন বলে জানা গেছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- নবাবগঞ্জ ইউএনও দিলরুবা ইসলাম, দোহার সার্কেলের এএসপি রাকিবুল ইসলাম এবং গোল্লা মিশনের ফাদার গ্যাব্রিয়েল কুড়াইয়া।
একই সময় গির্জায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১ আসনের বিএনপির প্রার্থী খন্দকার আবু আশফাক। তিনি ধর্মযাজকের হাতে কেক তুলে দিয়ে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানান।
খন্দকার আবু আশফাক বলেন, সাম্য, ভ্রাতৃত্ববোধ ও মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করাই মানুষের প্রকৃত ধর্ম।
বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের ধর্মীয় উৎসব আনন্দের সঙ্গে পালিত হোক—এই প্রত্যাশা করি। আগামী দিনগুলো যেন আমরা সবাই সৌহার্দ্যের সঙ্গে মিলেমিশে কাটাতে পারি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে এক কাতারে থেকে দেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে হবে। এ দেশ নিয়ে যেন কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে—সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
এ সময় তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে গোল্লা গির্জার এক ধর্মযাজককে গুলি করে হত্যার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
গোল্লা মিশনের সমাজপতিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- এরিক গোমেজ, পরিমল গোমেজ, নির্মল গোমেজ, স্বপন গোমেজ ও পলাশ রোজারিও। এছাড়া বিএনপির উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম খন্দকার, এরশাদ আল মামুন, মিজানুর রহমান, শাহজাহান মোল্লা ও মো. জামাল হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।