Image description
 

১৭ বছর নির্বাসনের পর ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করতে রাজধানীর পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকায় তৈরি করা হয়েছে বিশাল সংবর্ধনা মঞ্চ, যেখানে একটি রাজনৈতিক উৎসবের পরিবেশ বিরাজ করছে।

 

আজ বুধবার সকালে থেকেই নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত হতে থাকে পূর্বাচল উপশহর ও তার আশপাশের এলাকা। এতে করে পূর্বাচল ও রূপগঞ্জ উপজেলায় লোকে লোকারণ্য পরিবেশ করছে। 

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তারেক রহমানের প্রত্যার্তনকে ঘিরে প্রস্তুত করা হয়েছে সুবিশাল মঞ্চ। তারেক রহমানকে বরণ করে নিতে বুধবার দুপুরের মাঝে পুরোপুরিভাবে মঞ্চ প্রস্তুত হয়ে যায়। এদিকে তারেক রহমানের আগমনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের নেতাকর্মীরা উৎসাহের সাথে যোগ দিচ্ছেন। নেতাকর্মীরা একদিন আগেই সমাবেশস্থলে এসে জড়ো হচ্ছেন, পুরো এলাকা স্লোগান, প্ল্যাকার্ড এবং উল্লাসে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মঞ্চের আশপাশে ব্যানার, পতাকা এবং তোরণ সাজানো হয়েছে। ইতিমধ্যে কিশোরগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রংপুর, বগুড়া এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলের নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছেন। অনেকেই সমাবেশের আগের রাত থেকে প্রস্তুতি নিতে সেখানে অবস্থান নিয়েছেন। নেতাকর্মীরা নিজেদের ব্যানার প্লেকার্ড মঞ্চ ও তার আশপাশে টানিয়ে রেখেছেন।

 

তারেক রহমানকে এক নজর দেখতে পূর্বাচল উপশহর ও আশপাশের এলাকায় নেতাকর্মীদের পদচারণায় মূখরীত হয়ে আছে। বরিশাল, পটুয়াখালী, ফরিদপুর দক্ষিনাঞ্চল থেকে লঞ্চ করে ইতিমধ্যে পূর্বাচলে আসতে শুরু করেছে। লঞ্চ গুলো থামানো হচ্ছে শীতলক্ষ্যা নদীর কাঞ্চন ব্রিজের নিচে। এ ছাড়া সিলেট, সুনামগঞ্জ, কুমিল্লা, কক্সাবাজার ফেনীসহ বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীরাও বেশিরভাগই পূর্বাচলে এসে ভিড় জমিয়েছে। এদিকে নেতাকর্মীদের জন্য ৪ শতাধিক ভ্রাম্যমাণ টয়লেট, বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার ও মেডিকেল ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে, নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা তল্লশি চালাচ্ছে এবং পুরো এলাকা পরিদর্শন করছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেনাবাহিনীর একাধিক টিম গাড়ি করে সমাবেশস্থলের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করছে। এ ছাড়া সাদা পোশাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়মিত পূর্বাচল ও আশপাশের এলাকায় টহল দিচ্ছে। পূর্বাচল রাজধানী ঢাকা ও রূপগঞ্জের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক ছাড়া কোনও যানবাহন ছাড়া হচ্ছে না। এ ছাড়া পূর্বাচল ও আশপাশের এলাকায় ড্রোন উড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

 

বিএনপির কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার নেত্রী শামীম আহমেদ বলেন, এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক মুহূর্ত হতে যাচ্ছে। দীর্ঘ ১৭ বছর পর তারেক রহমান দেশে ফিরছেন, এবং দেশের মানুষ তার প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।

বগুড়া থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, এটি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক সমাবেশ নয়, এটি একটি জাতীয় উৎসব। আমাদের কাছে এটি সম্মানের বিষয়।

চট্টগ্রাম থেকে আসা যুবদল কর্মী ইলিয়াস হোসেন বলেন, এটা শুধু নেতাকে বরণ করার দিন নয়, এটা জনগণের শক্তির প্রমাণ। এত বছর পরেও তারেক রহমানের জন্য মানুষ পথে নেমে আসে, এটি সত্যিই বিশাল ব্যাপার।

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ভুইয়া দিপু বলেন, আমি ১ লাখ নেতাকর্মী নিয়ে পূর্বাচলে যাব। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন ঘিরে দেশের দূর-দূরান্ত থেকে নেতাকর্মী পূর্বাচলে আসবে। এ কারণে নেতাকর্মীদের জন্য শতাধিক ভ্রাম্যমাণ টয়লেট, ৫০ পানির, শুকনো খাবার, ৪টি মেডিকেল ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও তৎপর রয়েছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাবে।

নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম আজাদ পরিবার সদস্যদের নিয়ে পূর্বাচলের তারেক রহমানের অভ্যর্থনাস্থল পরিদর্শন শেষে বলেছেন, দেশ বরেন্য নেতা তারেক রহমানকে বরণ করে নিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তারেক রহমানের আগমনকে স্বাগত জানিয়ে আড়াইহাজারসহ সারা দেশে আনন্দ মিছিল করছেন নেতাকর্মীরা। একটি সুখী-সমৃদ্ধ, বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে তারেক রহমানের মতো দক্ষ নেতৃত্ব অপরিহার্য। স্বদেশে তার প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্র যোগ করবে। আমরা তাকে বরণ করে নিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে রাজধানীসহ তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এমন অবস্থায় তাকে স্বাগত জানাতে একদিন আগেই ৩০০ ফিটের সমাবেশস্থলে জড়ো হচ্ছেন নেতাকর্মীরা।