যুবদল নেতা আরিফ হত্যার ঘটনায় রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় করা মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের মেয়ে খাদিজা ইয়াসমিনের আবারও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে রিমান্ড শুনানি চলাকালে খাদিজা বলেন, আমার বাবা অপরাধী হতে পারে। তার জন্য তো আমি দায়ী হতে পারি না।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হকের আদালতে রিমান্ড শুনানির সময় এসব কথা বলেন তিনি।
এদিন পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাকে পুরায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারও তার পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. মাজহারুল ইসলাম।।
আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানিতে বলেন, আসামির কাছে রিমান্ডে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তারপরও আবার তার রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। পুনরায় রিমান্ড চাওয়ার কোনো যুক্তি নেই। তার দুটো বাচ্চা আছে। আসামির রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের প্রার্থনা করছি।
এরপর রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী শামসুদ্দোহা সুমন আসামির রিমান্ড পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, আগামীকাল তারেক রহমান দেশে আসছেন। সামনে আমাদের জাতীয় নির্বাচন। সুতরাং এসব বিষয়ে দেশের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা আছে। সে সুব্রত বাইনের মত সন্ত্রাসীর মেয়ে। এছাড়াও এ মামলায় তার কাছ থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকতে পারে। এজন্য তাকে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকতে পারে। এজন্য তার পাঁচ দিনের রিমান্ডের প্রার্থনা করছি।
এ সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা আসামি খাদিজা ইয়াসমিন বিথী আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, এ মামলার কোনো কিছুই আমি জানিনা। আমার বাচ্চা আছে। আমার বাবা অপরাধী হতে পারে। তার জন্য তো আমি দায়ী না।আমার মেয়ে বাচ্চা আছে। তাকে এখন প্রতিবেশীরা লালন পালন করছে। আমার বাচ্চা কার কাছে থাকবে? আমি জব করি। কাজ করে খাই। আমি তো কোনো অন্যায় করি নাই। আমার বাবা তো আইনি হেফাজতে আছে। সুতরাং আমাকে কেনো গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে পাঠানো হচ্ছে?
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামির চার দিনের রিমান্ড আদেশ দেয়।
এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলা কারাগারের সামনে থেকে বিথীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ১৮ ডিসেম্বর এই মামলায় তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন নয়াটোলা মোড়ল গলির ‘দি ঝিল ক্যাফে’র সামনে যুবদল নেতা মো. আরিফ সিকদারকে গুলি করা হয়। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২১ এপ্রিল মৃত্যু হয় তার। নিহত আরিফ সিকদার ঢাকা মহানগর উত্তরের ৩৬ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সহ-ক্রীড়া সম্পাদক।
ওই ঘটনায় নিহত আরিফের বোন রিমা আক্তার বাদী হয়ে সুব্রত বাইনের সহযোগী মাহফুজুর রহমান বিপুসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। পরবর্তীতে আরিফ মারা গেলে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে সুব্রত বাইন কারাগারে রয়েছেন।