সরকারের পক্ষ থেকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য গানম্যান প্রদানের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন জুলাই বিপ্লবের অন্যতম নেতা ও ডাকসুর ভিপি আবু সাদিক কায়েম। একই সঙ্গে তিনি দেশের সর্বস্তরের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্ট তিনি এ দাবি জানান।
আবু সাদিক কায়েম বলেন, জুলাই বিপ্লবের ছাত্র নেতৃত্ব, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার গানম্যান প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
এরই অংশ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সরকারিভাবে গানম্যান প্রদানের বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি তা গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি লিখেন, ছাত্র-জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধের মাধ্যমে খুনি হাসিনার পতনের পর জনগণের প্রত্যাশা ছিল দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় একটি দৃশ্যমান ও ন্যায্য পরিবর্তন আসবে।
কিন্তু বাস্তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকর ভূমিকার অভাব এবং বিভিন্ন দপ্তরে ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে জননিরাপত্তা বারবার ব্যাহত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কার্যকরভাবে সক্রিয় করে সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের আওতায় আনা হলে আজ নিরাপত্তা নিয়ে এত উদ্বেগ থাকত না। এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন থেকে যায়—কেন সেই প্রত্যাশা এখনো পূরণ হয়নি?”
বক্তব্যে তিনি সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “একদিকে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিনে মুক্ত হয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাদের হাতে ওসমান হাদির মতো মানুষ শহীদ হচ্ছেন, অথচ খুনীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। অন্যদিকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য গানম্যান প্রদানের প্রস্তাব আসছে। এই বাস্তবতার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে আমার দ্বিধা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “নিঃসন্দেহে আমাদের সবার নিরাপত্তা প্রয়োজন। কিন্তু সেই নিরাপত্তা যদি কেবল কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, তাহলে তা ইনসাফপূর্ণ হয় না। দেশের আপামর মানুষের জন্য একটি নিরাপদ ও ইনসাফের বাংলাদেশ গড়ে তোলাই আমাদের দাবি।”
সবশেষে তিনি জানান, দেশের ছাত্র-জনতা যখন এখনো অনিরাপদ অবস্থায় রয়েছে, তখন কেবল ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য গানম্যান গ্রহণ করাকে তিনি এই মুহূর্তে নিজের জন্য সঠিক মনে করেন না।