বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি ইসলামি দলের সমঝোতার সমীকরণ ‘এক বক্স পলিসি’ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। দলগুলোর অসন সমঝোতার জন্য কাজ করছেন জোটের শীর্ষনেতারা। আগামী বুধ কিংবা বৃহস্পতিবার জানা যেতে পারে কোন দলের প্রার্থীরা কত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যদিও জামায়াত ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। এসব আসনের মধ্যে শতাধিক প্রার্থী তুলে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দলটির শীর্ষনেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনি প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছে রাজনৈতিক দলগুলো। এরই অংশ হিসেবে মাঠে নেমেছে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ সমমনা আটটি দল। বর্তমানে ৩০০ আসনেই দলগুলোর প্রার্থীরা পৃথকভাবে জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচনি কৌশলের অংশ হিসেবে নিজেদের অবস্থান মজবুত করার চেষ্টায় দলগুলো থাকলেও জোট গঠন ও আসন ভাগাভাগিই এখন আলোচনার মূল কেন্দ্রে। নেতারা জানিয়েছেন, ৩০০ আসনেই তাঁদের প্রার্থী থাকবে। প্রার্থী তালিকা ঠিক হলে দলগুলো যার যার মার্কা নিয়ে নির্বাচন করবে। তবে এক আসনে আট দলের একজন প্রার্থী থাকবে। যাঁকে সব দলের ভোটাররা ভোট দেবেন।
এর মধ্যে কোন দল কতটি আসনে লড়বে, তা নিয়ে মাঠপর্যায়ে জরিপ সম্পন্ন করেছে দলগুলো। প্রার্থী ঠিক করার ক্ষেত্রে কোন আসনে কোন প্রার্থীকে দিলে বিজয়ী হতে পারবে, সেটিই প্রধান শর্ত হিসেবে ধরা হচ্ছে। তবে দলগুলোর শীর্ষনেতাদের পছন্দের জায়গার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হতে পারে। কয়েকটি দলের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি দলই বেশি করে আসনের চাহিদা জানিয়েছে। তবে আলোচনার পর এর সমাধান হবে। সব দলই সর্বোচ্চ ছাড় দেওয়ার মানসিকতা রয়েছে।
দলগুলোর সূত্রে জানা গেছে, আট দলের মধ্যে বড় দল জামায়াতে ইসলামীর সবচেয়ে বেশি আসনে প্রার্থী থাকবে। তাদের আসনসংখ্যা ২০০ বা এর অল্প কমবেশি হতে পারে। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী থাকতে পারে ৫০ থেকে ৬০টি আসনে। খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আসন থাকতে পারে ১৫ থেকে ২০টির মধ্যে। খেলাফত আন্দোলনের ৫ থেকে ৬টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি ও জাগপার ২ থেকে ৩টি করে এবং বিডিপির ১ থেকে ২টি করে আসন থাকতে পারে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, যেখানে যাঁর অবস্থান ভালো, সাংগঠনিক শক্তি ও প্রার্থীর ইমেজ বিবেচনায় আমরা সেখানে তাঁকেই প্রাধান্য দেব। তিনি যে দলেরই হোন না কেন।
জামায়াতের নেতারা জানান, সংখ্যা দিয়ে আসন বণ্টন হবে না বরং আসন ধরে প্রার্থী বাছাই হবে। তবে জোটের শীর্ষনেতারা প্রাধান্য পাবেন। তাঁরা জানান, যেসব আসনে সমঝোতায় প্রার্থী ঘোষণা করা হবে সেখান থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করবে জামায়াত। জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, ‘কতটা আসন কে নেবেন, কে পাবেন, এটা মুখ্য হবে না। মুখ্য টার্গেট হচ্ছে আমরা যাকে যেখানে দিলে তিনি পাস করবেন, বিজয়ী হবেন, সে ব্যক্তি, সে দল, সেখানে অগ্রাধিকার পাবেন। যে দলের যেখানে অবস্থা ভালো, আমরা সে দলকে সেখানেই দেব এবং এক দল একটা আসনেরই থাকবে, বাকিরা আমরা তাঁকে সহযোগিতা করব।’