আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ীর দুটি আসনেই মূলত ভোট যুদ্ধ হবে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে। তারপরও আরও কয়েকটি দল এখানে লড়াইয়ের ময়দানে রয়েছে।
রাজবাড়ী-১ (সদর ও গোয়ালন্দ) আসন : ১৯৯১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এ আসনে বিএনপি ২০০১ সালে একবারই মাত্র ক্ষমতার স্বাদ পেয়েছিল। বাকি সময় আওয়ামী লীগ এ আসনটি দখলে রাখে। এবার আওয়ামী লীগ না থাকায় আসনটি পুনরায় কবজা করতে চাইছে বিএনপি। সে লক্ষ্যে দলীয়ভাবে ভোটের মাঠে ব্যাপক প্রচার তৎপরতা চালানো হচ্ছে। বড় দল হিসেবে বিএনপি এ আসনে বিজয়ের ব্যাপারে অনেকটাই আশাবাদী। এখানে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজবাড়ী জেলার কোনো উন্নয়নই হয়নি। জেলায় কর্মসংস্থানের ব্যাপক অভাব রয়েছে। আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু ও পদ্মা ব্যারাজ নির্মাণ করা হবে। এ দুটি প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হলে রাজবাড়ীতে ব্যাপক উন্নয়নের সূত্রপাত ঘটবে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হয়েছেন অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমরা নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে জয়ের জন্য কাজ করছি। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে আমাদের তৎপরতা চলছে। তাতে আশা করছি- মানুষ এবার পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দেবেন। তারা আমাদের মার্কায়ই ভোট দেবেন। তবে মাঠ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, রাজবাড়ী-১ আসনে মূলত লড়াই হবে বিএনপি প্রার্থীর সঙ্গে জামায়াত প্রার্থীর। ধারণা পাওয়া গেছে, বিএনপির জয় ঠেকাতে দলটির দলীয় কোন্দলকে হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়ে কাজ করছে জামায়াত। বিশেষ করে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আসলাম মিয়ার অনুসারীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, কোন্দল বিদ্যমান থাকলে জয় পেতে বেগ পেতে হবে বিএনপি প্রার্থীকে। বিএনপি-জামায়াত ছাড়া এ আসনে গণঅধিকার পরিষদ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নির্বাচন করবে বলে প্রচার রয়েছে।
রাজবাড়ী-২ (পাংশা-বালিয়াকান্দি-কালুখালী) আসন : এ আসনে বিএনপি থেকে লড়ছেন সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন অর রশিদ হারুন। প্রতিদ্বন্দ্বী দল জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হয়েছেন জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সেক্রেটারি মো. হারুন অর রশিদ।
ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে ধারণা পাওয়া গেছে, আসনটিতে ভোটের লড়াই হবে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে। তবে এখানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ভালো প্রভাব রয়েছে। এ দলের প্রার্থী হয়েছেন দলের কালুখালী উপজেলা শাখার সভাপতি হাফেজ মাওলানা আবদুল মালেক। এ ছাড়া অন্যান্য প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন এনসিপির সাইয়েদ জামিল ও ছাত্র অধিকার পরিষদের মাহবুবুর রহমান।
ভোট সম্পর্কে বিএনপি প্রার্থী হারুন অর রশিদ হারুন বলেন, দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। আমি সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। আমি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর মনোনয়ন বঞ্চিত নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেছি। তারা আমাকে বিজয়ী করার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন। নির্বাচনে জয়লাভ করলে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এলাকার উন্নয়ন করব।
জামায়াত প্রার্থী মো. হারুন অর রশিদ হারুন বলেন, মানুষ আমাদের ভোট দিতেই মরিয়া হয়ে আছে। নির্বাচিত হতে পারলে স্বাস্থ্য, শিক্ষা খাতে ব্যাপক উন্নয়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।