বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি শুধু চাকরি পাওয়ার জন্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার প্রকৃত মূল্য কেবল পেশাগত সাফল্যেই নয়, সমাজে অবদানের মধ্য দিয়েও পরিমাপ করা হবে।’ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ১২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাজের প্রতি অবদান রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘জাতি এমন মানুষদের চায়, যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের শক্তি বাড়াবে এবং সততার সঙ্গে নেতৃত্ব দেবে।’
প্রধান অতিথি ড. সি আর আবরার ডিগ্রিপ্রাপ্তদের উদ্দেশে বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি শুধুমাত্র চাকরি পাওয়ার জন্য নয়, বরং এটি সমাজের জন্য অবদান রাখার দায়িত্ব। আপনার শিক্ষার প্রকৃত মূল্য কেবল পেশাগত সাফল্যেই নয়, বরং সমাজে আপনার অবদানের মধ্য দিয়েও পরিমাপ করা হবে।
সি আর আববারর বলেন বর্তমান সময়ের দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের কথা তুলে ধরেন, যেখানে প্রযুক্তি, মিথ্যা তথ্য এবং সামাজিক বিভাজন সমাজকে পুনর্গঠন করছে। এ সময়ে দক্ষ পেশাদারদের প্রয়োজন অনেক, কিন্তু সঠিক, নৈতিক এবং দায়িত্বশীল নাগরিকদেরও প্রয়োজন, যারা বুঝতে পারে যে তাদের কর্মকাণ্ডের সমাজে কী প্রভাব পড়বে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে এমন স্নাতকদের প্রয়োজন, যারা শুধু তাদের পেশাগত ক্ষেত্রে উৎকর্ষ লাভ করবে না, বরং যারা প্রশ্ন করবে, তাদের সাফল্য সমাজের ওপর কী প্রভাব ফেলছে। আমরা এমন মানুষদের চাই, যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, যারা প্রতিষ্ঠানের শক্তি বাড়াবে, যারা সততার সঙ্গে নেতৃত্ব দেবে।
প্রধান অতিথি শেষে বলেন, আপনি শুধু পেশাদার নয়, আপনি এখন দায়িত্বশীল নাগরিক। আপনি সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম।
তিনি স্নাতকদের বলেন, আপনার শিক্ষা কেবল ক্যারিয়ার গড়ার জন্য নয়, বরং একটি ন্যায়সঙ্গত এবং মানবিক সমাজ গড়ার জন্য ব্যবহার করুন। যারা আপনাদের আগে এসেছিলেন তাদের উদাহরণ অনুসরণ করুন, এবং মনে রাখবেন, জ্ঞান একটি শক্তি, এবং সেই শক্তি সততার সঙ্গে ব্যবহার করা উচিত।
শিক্ষা উপদেষ্টা অদ্ধ্যাপক ড. সি আর আবরার শুধু শিক্ষার্থীদের সাফল্য নয়, তাদের শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত বড় দায়িত্বের কথাও তুলে ধরেন। এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. এস এম এ ফায়েজ সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
১২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের বিশিষ্ট সদস্য, শিক্ষকবৃন্দ, গর্বিত অভিভাবক এবং স্নাতক ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক উৎকর্ষতার পাশাপাশি স্নাতকদের নাগরিক দায়িত্ব এবং সমাজের প্রতি অবদান রাখার গুরুত্বও তুলে ধরেছে।