উন্নত চিকিৎসায় খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের যথেষ্ট উন্নতি হওয়ায় ডাক্তাররা আপাতত তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার লন্ডনের সময় রাত ১১টায় (বাংলাদেশ সময় আজ শনিবার ভোর ৫টা) খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ওঠার কথা। তার আগে তারেক রহমান বাংলাদেশি অধ্যুষিত ব্রিকলেন মসজিদে প্রয়াত ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর জন্য অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে অংশ নেওয়ার কথা। এরপর তার হাসপাতালে যাওয়ার কথা।
সেখান থেকে মা খালেদা জিয়াকে নিয়ে বাসায় ফেরার কথা। গতকাল শুক্রবার লন্ডন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল বোর্ডের প্রধান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার গণমাধ্যমকে এই খবর দেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসক অধ্যাপক জন প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে হার্ট, কিডনি, লিভার, আর্থ্রাইটিস ও ডায়াবেটিস রোগের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স হসপিটালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অংশগ্রহণ করেছেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, প্রতিদিনই ডাক্তাররা নতুন করে কমবেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়েছেন। সর্বশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্টগুলো শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার মধ্যে আসার কথা। ডা. জাহিদ গত বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, শুক্রবার খালেদা জিয়ার ছুটি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি ডাক্তাররা তাকে ছুটি দেন। ডা. জাহিদ আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে আগের চেয়ে অনেকটা বেটার আছেন। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।’
খালেদা জিয়ার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ওষুধের মাধ্যমে তার যে চিকিৎসা চলছে, তা অব্যাহত রাখার জন্য সব চিকিৎসক একমত এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা চলবে।
ডা. জাহিদ আরও জানান, বর্তমানে খালেদা জিয়ার লিভার, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, প্রেশার, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস—প্রতিটির জন্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চলছে। আপাতত ওষুধের মাধ্যমেই তার চিকিৎসা চলবে। এর বাইরেও আরও যদি কোনো চিকিৎসা করা যায়, সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স হসপিটালের মেডিকেল টিমের সদস্যরা এখানে মেডিকেল বোর্ডের সভায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। যাতে এক ছাদের নিচে সব চিকিৎসা হয়।
লন্ডন দ্য ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শে খালেদা জিয়াকে প্রতিদিন বাসা থেকে খাবার দেওয়া হয়। ছেলে তারেক রহমান, পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান, নাতনি ব্যারিস্টার জাইমা রহমান, প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি, দুই কন্যা জাফিয়া ও জাহিয়া রহমান তাকে নিয়মিত দেখাশোনা করেন। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এমএ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ তার নিত্যসঙ্গী।
গত ৮ জানুয়ারি খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন আসেন। সেদিন লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তাকে বিশেষায়িত বেসরকারি হাসপাতাল দ্য ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।