Image description

বায়ুমান সূচকে ঢাকার অবস্থান এক ধাপ পেছালেই বাতাস খুবই অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় রয়েছে। বায়ুদূষণের সূচকে বিশ্বের ১২৫টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান আজ দ্বিতীয়, বায়ুমান ২১৮। শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, বায়ুমান ২৩৭।

গতকাল সকালে বায়ুমান খানিকটা কম থাকলেও ঢাকার চেয়ে বেশি দূষণ বিশ্বের আর কোনো শহরে ছিল না। মানসূচকে ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে হলে তা খুবই অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে ধরা হয়। ঢাকার বাতাসে যে আজ পরিমাণ দূষণ রয়েছে, তা অসুস্থ মানুষের জন্য তো বটেই, সুস্থ মানুষেরও ভয়ানক ক্ষতি করছে।

রোববার সকাল ৬টার রেকর্ড অনুযায়ী এই তালিকায় শীর্ষ পাঁচ শহরের মধ্যে রয়েছে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন, ভারতের দিল্লি ও উজবেকিস্তানের তাসখন্দ শহর।

াতাসের গুণমান সূচক (একিউআই) দিয়ে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে বায়ু পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকায় বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০–এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে—ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

ঢাকার বায়ুমানের অবনতি থামছে না। গত বছর থেকে এ বছরের নভেম্বরে বায়ুর মান ১০ শতাংশ পর্যন্ত খারাপ হয়েছে। আর ডিসেম্বরে চলতি বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দূষিত ছিল ঢাকার বাতাস।