Image description

পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে সাত জেলেকে অপহরণ করেছে জলদস্যুরা। আজ রোববার সকালে তারা ডন বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তিনটি খাল থেকে তাদের তুলে নেয়। প্রতি জেলের মুক্তিপণ হিসেবে জলদস্যুরা ৫০ হাজার টাকা করে দাবি করেছে। 

অপহৃত জেলেরা হলেন– সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের আব্দুল আজিজ (৫০), ইব্রাহিম হোসেন (৪৫), আনারুল ইসলাম (২২), নাজমুল হক (৩৪), শামীম হোসেন (৩৬), আনোয়ার হোসেন (৩২) ও হরিনগর জেলেপাড়ার মুজিবুল হোসেন (৩৫)।

 
 

ফিরে আসা দুই জেলে ফজর আলী ও সবুজ মিয়ার ভাষ্য, সাতক্ষীরা রেঞ্জের কদমতলা স্টেশন থেকে ২ ডিসেম্বর পাস সংগ্রহ করে তারা কাঁকড়া শিকারের জন্য বনে যান। রোববার তারা মালঞ্চ নদীর হাঁসখালী, চেলাকাটা, হেতালবুনি খালে অবস্থান করছিলেন। একপর্যায়ে তিনটি নৌকায় করে আসা ১০ জন বন্দুকধারী তাদের ঘিরে ধরে। প্রতি নৌকা থেকে একজনকে তুলে নিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বর দিয়ে সেখানে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা করে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। 

ওই জেলেরা আরও জানান, বনে যাওয়ার জন্য তাদের সবাইকে ঋণ করতে হয়েছে। এখন ওই টাকা তো উঠবেই না, উল্টো মুক্তিপণ দিয়ে সহকর্মীদের ছাড়াতে হবে। এমন দুরাবস্থায় পড়ার থেকে মৃত্যুও তাদের জন্য ভালো ছিল।

বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কৈখালী বিসিজি স্টেশনের একটি সূত্রে জানা গেছে, তারা বিষয়টি শুনেছেন। অপহরণের শিকার জেলেদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। সবকিছু নিশ্চিত হয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বনবিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. ফজলুল হকের ভাষ্য, তাদের স্মার্ট পেট্রাল টিমের সদস্যরা নিচে আছেন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। 

অভয়ারণ্য থেকে আটক সাত জেলে
এদিকে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের অভয়ারণ্য থেকে সাত জেলেকে আটক করেছে বনবিভাগ। রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. ফজলুল হকের নেতৃত্বে শনিবার রাতে বাহির মান্দারবাড়িয়া এলাকার অভয়ারণ্যে মাছ শিকারের সময় তাদের আটক করা হয়। 

তারা হলেন– বাগেরহাট জেলার উলুবুনিয়া গ্রামের মোশারফ হোসেন (৪০), ইব্রাহিম শেখ (৩০), মহসিন শেখ (৪০), ইয়াছিন মোসাল্লি (১৮), হলদেবুনিয়া গ্রামের ইকরাম শেখ (২৪), চাদপাই গ্রামের শওকাত আলী ফকির (৫৫) ও আন্ধালিয়া গ্রামের সাফারত ফকির (৪৫)।

মো. ফজলুল হক বলেন, ওই জেলেদের কাছে সাগরে মাছ ধরার অনুমতিপত্র আছে। কিন্তু শর্ত ভঙ্গ করে তারা সুন্দরবনের সংরক্ষিত অঞ্চলে ঢুকে মাছ শিকার করছিলেন। আটক জেলেদের নৌযান হেফাজতে রেখে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।