Image description
মেঘনা, শীতলক্ষ্যা, পুরোনো ব্রহ্মপুত্রে সক্রিয় ১৪ দল

নরসিংদীর রায়পুরা থানা এলাকার চানপুর। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের পাতায় তারিখটা চলতি বছরের ১০ অক্টোবর। সন্ধ্যা পেরিয়ে মেঘনার বুকে নামা রাত তখন সবে গভীর হতে শুরু করেছে। ঘড়ির কাঁটা মাঝরাত পেরিয়ে দেড়টা ছুঁইছুঁই। হঠাৎই মেঘনার বুক চিরে ছুটে চলা পণ্যবোঝাই বাল্কহেডে হানা দেয় একদল ডাকাত। অস্ত্রধারী ডাকাতরা সার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের এসকর্ট (নির্দিষ্ট গন্তব্যে নিরাপদে পৌঁছাতে নৌযানে থাকা সশস্ত্র ব্যক্তি) শামীমকে (৪১) অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সারবাহী বাল্কহেডটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। পরে হাত-পা বেঁধে ট্রলারে তুলে নিয়ে গিয়ে শামীমকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় নদীর শীতল জলে। ডাকাত দলের কবলে পড়া নৌযানটির নাবিকসহ অন্যান্য কর্মীর জন্য সেই রাত প্রতিনিয়তই নদীর বুকে ছুটে চলা অন্যান্য রাতের তুলনায় হয়ে ওঠে আরও বেশি নিকষ কালো আঁধারের। দ্রুতগামী ট্রলারে চেপে হঠাৎই সেদিন রাতে বিদ্যুৎগতিতে যেন ছুটে এসেছিল মৃত্যুদূতরা।

বাল্কহেডটিতে ছিল ৬ হাজার ৩৪০ বস্তা সার। যদিও পরে অভিযান চালিয়ে লুট করা সেই সার উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। শুধু সারবোঝাই ওই বাল্কহেডই নয়; একইভাবে মাঝেমধ্যেই নৌপথে পণ্যবাহী নৌযানে হানা দিচ্ছে জলদস্যুরা। একসময় সমুদ্রকেন্দ্রিক জাহাজে কিংবা ভরা নদীতে জলদস্যুদের আক্রমণের তথ্য মিললেও এখন অনেকটা ডাঙার কাছে নদনদীতে, এমনকি তীরবর্তী কোলাহলপূর্ণ জনপদের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীতেও পণ্যবাহী নৌযানে হরহামেশাই হানা দিচ্ছে জলদস্যুরা। এসব ডাকাত দলের অপতৎপরতায় পণ্য পরিবহনের জন্য একসময় অন্যান্য যোগাযোগ ব্যবস্থার চেয়ে তুলনামূলক নিরাপদ হিসেবে পরিচিত নৌপথই এখন রীতিমতো ভয়ংকর হয়ে উঠছে।

নৌ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সদস্য এবং ডাকাতির কবলে পড়া নৌযানের কর্মীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এসব নৌ ডাকাতের বেশিরভাগেরই প্রকাশ্য পরিচয় নৌ শ্রমিকের। দায়িত্ব দিনে তাদের বড় অংশ শ্রমিক হিসেবে পণ্যবাহী নৌযানে দায়িত্ব পালন করে। সুযোগ পেলে তাদেরই কেউ কেউ রাতে আবির্ভূত হয় ভয়ংকর ডাকাত রূপে। কেউ কেউ আবার ডাকাত দলের সোর্স (নৌযানের অবস্থান বা নৌযানে থাকা পণ্যের বিষয়ে তথ্য সরবরাহ) হিসেবে কাজ করে থাকে। টার্গেট করা নৌযান সংশ্লিষ্ট নৌপথের নিরিবিলি কোনো জায়গায় যেতেই ডাকাতদের খবর দেয় তারা। এমনকি নৌ পুলিশের সোর্সের কাজ করতে করতে ভয়ংকর এক ডাকাত দল গঠন করে ফেলার নজিরও রয়েছে।

নৌ পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শ্রমিকের বেশভূষায় থাকা এই ডাকাতরাই নৌ পুলিশের জন্য বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে নৌ শ্রমিকদের ডাটাবেজ তৈরির জন্য নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর সারা দেশে নৌপথে অন্তত ১৬১টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ডাকাতদের হাতে প্রাণ গেছে কমপক্ষে ১১ জনের। সে হিসাবে মাসে কম করে হলেও গড়ে ১৪টি নৌ ডাকাতির ঘটনা ঘটছে।

মেঘনা, শীতলক্ষ্যা, পুরোনো ব্রহ্মপুত্র দাপাচ্ছে ১৪ ডাকাত দল: অভ্যন্তরীণ নৌপথগুলোর মধ্যে মালপত্র পরিবহনের জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় মেঘনা, শীতলক্ষ্যা ও পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদ। এ জলপথে ১৪টি সক্রিয় ডাকাত দল চিহ্নিত করেছে ঢাকা রিজিওনের নৌ পুলিশ। সংশ্লিষ্ট পুলিশ ফাঁড়ি ও থানা সূত্রে জানা গেছে, এই ১৪টি দলের হোতা ও অন্য সদস্যদের বেশিরভাগই নৌ শ্রমিক। তাদের বাহ্যিক পেশা নৌযানে কাজ করা আর সুযোগ বুঝে ডাকাতি করা। নৌ পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, পণ্যবোঝাই নৌযান চলাচল করা মেঘনা, শীতলক্ষ্যা ও পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদে দাপিয়ে বেড়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ চরচাতলার রতন মিয়া (৩৬), নবীনগরের জামাল মিয়া (৫০), নরসিংদীর রায়পুরার মাঝেরচরের শিমুল মিয়া (৩৪), রায়পুরার ভান্ডারু গ্রামের জুলহাস ইসলাম ওরফে বিল্লাল (৩৮), আশুগঞ্জের লোকমান (৩৬), মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার আব্দুস সোবহান ঢালী (৩৫), রায়পুরার মাঝেরচরের সাদ্দাম (৩০), মাদারীপুর সদর উপজেলার কামাল খাঁ (৪২), মো. ফরিদ হাওলাদার (৪৮) ও কালু হাওলাদার (৩৯), বাগেরহাট সদরের আনোয়ার হোসেন (৬০), মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার আক্তার (৪৮), শরীয়তপুর জাজিরার মো. দেলোয়ার খলিফা (৪০) এবং নরসিংদীর মাধবদীর হান্না ওরফে হান্নানের ডাকাত দল।

নির্ভরযোগ্য সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, তাদের হয়ে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি নৌপথে ডাকাতি করে আসছে। অনেকে অপারেশন (প্রতিটি ডাকাতির ঘটনায় অংশ নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট মজুরি) প্রতি ভাড়ায় খেটে ডাকাতি করে থাকে।

নৌ পুলিশের ঢাকা অঞ্চলের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল-মামুন কালবেলাকে বলেন, ‘সম্প্রতি নরসিংদীর রায়পুরায় মেঘনা নদীতে সারসহ বাল্কহেড ডাকাতির ঘটনায় যে চারজন গ্রেপ্তার হয়েছে, তাদের কমবেশি নৌপরিবহন শ্রমিকের কাজ করার রেকর্ড আছে। তবে সব শ্রমিকই এ ধরনের অপরাধে যুক্ত নয়। ওই অঞ্চলের নদীপথে ডাকাতির কাজে সম্পৃক্ত এমন কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ নৌপরিবহন শ্রমিকের ছদ্মবেশে ডাকাতি করে আসছে বলে তথ্য রয়েছে।’

নৌ পুলিশের সোর্স থেকে ভয়ংকর জলদস্যু আলমগীর: এক সময় নৌযানে শ্রমিকের কাজ দিয়ে জীবিকার সংস্থান শুরু করেছিল নরসিংদীর পঞ্চবটি গ্রামের আলমগীর। এলাকার লোকজন তাকে এখনো চেনেন নৌ শ্রমিক হিসেবে। আর এ কাজের সুবাদে পরিচিত হয় স্থানীয় পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করা নৌ পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে। ধীরে ধীরে সঙ্গে সখ্য থেকে একপর্যায়ে নৌ পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতে থাকে আলমগীর। নৌপথে কাজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আর পুলিশের সঙ্গে সখ্যর কারণে মেঘনা, শীতলক্ষ্যা আর পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদের জলপথের ‘মুকুটহীন সম্রাট’ বনে যায় এই আলমগীর। পণ্যবাহী নৌযানের মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আলমগীর শুরুর দিকে পুলিশের নাম ভাঙিয়ে জেলে নৌকা, ছোট ট্রলার ও বাল্কহেডগুলো থেকে চাঁদার টাকা তুলত। ধীরে ধীরে তার সাম্রাজ্য ও চাহিদা বাড়তে থাকে। পরিচিত আরও কয়েকজন নৌ শ্রমিককে সঙ্গে নিয়ে শুরু করে ডাকাতি। তবে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে ওঠাবসার কারণে ভুক্তভোগীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতেন না।

অবশ্য নৌ পুলিশ জানিয়েছে, গত ১০ অক্টোবর মেঘনা নদীতে সারবোঝাই নৌযানে ডাকাতিতে সম্পৃক্ততা পেয়ে এই আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্য দিয়েছে আলমগীর। তার নামে ডাকাতি ও হত্যাচেষ্টার অন্তত আটটি মামলা রয়েছে। তবে এই প্রথম গ্রেপ্তার হলো। নৌ ডাকাতদের অন্যতম সর্দার আলমগীর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, সারবাহী ট্রলারের মালিক সেজে ট্রলার ও সার গায়েব করে দেওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। সে অনুযায়ী অন্যদের সঙ্গে নিয়ে সাজায় নিখুঁত পরিকল্পনা। নিজে যে ট্রলারের মালিক পরিচয় দিয়েছিল, সেটি এক কোম্পানি থেকে চুক্তিতে এনেছিল। তার পরিকল্পনা ছিল সারসহ বাল্কহেডটি গায়েব করে দেওয়ার।

আলমগীরের বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জারচর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুর রব বলেন, ‘রিমান্ডে আলমগীর অনেক তথ্যই দিয়েছে। একজন নৌ শ্রমিক থেকে কীভাবে ভয়ংকর ডাকাত হয়ে উঠল জিজ্ঞাসাবাদে সেসব বলেছে। আমরা তার দেওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করছি।’

যেভাবে ডাকাতি সারবোঝাই নৌযানে: ১০ অক্টোবর, রাত তখন দেড়টা। নরসিংদীর রায়পুরা থানার চানপুর এলাকায় মেঘনা নদীর জলসীমায় অবস্থান করছিল ৬ হাজার ৩৪০ বস্তা সারবোঝাই (ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট) বাল্কহেড। রাতের অন্ধকারে হঠাৎ করে ওই জাহাজে হানা দেয় অস্ত্রধারী ডাকাতরা। ডাকাত দলের সদস্যরা বাল্কহেডে উঠেই সার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের এসকর্ট শামীমকে জিম্মি করে ফেলে। প্রথমে পিছমোড়া করে বাঁধে দুই হাত, এরপর মুখ ও পা। পরদিন সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত তাকে চিৎ করে ফেলে রাখা হয় বাল্কহেডের ভেতরে পর্দা দিয়ে বানানো ছোট্ট একটি কুঠুরিতে। পরে তাকে বাল্কহেড থেকে তোলা হয় ট্রলারে। সেই ট্রলার চালকের সঙ্গে ৬ হাজার টাকায় চুক্তি হয়, শামীমকে জলপথে সারা দিন ঘুরিয়ে সন্ধ্যার পর যে অবস্থায় আছে, সেভাবেই নদীতে ফেলে দেওয়ার। যদিও ভাগ্যক্রমে বেঁচে ফেরেন শামীম। ভয়ংকর সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘ভাগ্যের জোরে বেঁচে ফিরেছি। তবে অবাক করা ব্যাপার হলো, যারা আমাদের মালপত্র বহন করছিল, তারাই ডাকাত। ট্রলার মালিক পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি আলমগীর এই ডাকাত দলের মূলহোতা। সুকানি, ইঞ্জিন মিস্ত্রিসহ বাকিরা তার সহযোগী ছিল।

নৌ পুলিশ জানায়, ওই ডাকাতির ঘটনায় নরসিংদীর রায়পুরা থানায় মামলা হয়েছে। এর সূত্র ধরে দুই দিনের মাথায় উদ্ধার হয় বাল্কহেডসহ সার। একে একে গ্রেপ্তার হয় ডাকাত সর্দার আলমগীর, তার সহযোগী সেই বাল্কহেডের সুকানি (চালক) মো জসিম, ইঞ্জিন মিস্ত্রি আব্দুর রহিম এবং শামীমকে যে ট্রলারে তুলে দেওয়া হয়, সেই ট্রলারের চালক সাকিব ওরফে সাকিম।

সাকিম পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ওই বাল্কহেডের নৌ শ্রমিক নাঈমের সঙ্গে তার কথা হয়। সে বলে, তাদের বাল্কহেডে একটা বস্তা (হাত-পা বেঁধে রাখা ভুক্তভোগী মানুষকে বোঝাতে সাংকেতিক নাম) আছে। সেটা নৌকায় নিয়ে সারা দিন ঘোরাতে হবে। সন্ধ্যার পর যে কোনো এক জায়গায় ফেলে দিয়ে চলে আসতে হবে। এজন্য তার সঙ্গে ৬ হাজার টাকায় চুক্তি হয়েছিল।

নরসিংদীর মির্জারচর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুর রব কালবেলাকে বলেন, ‘গ্রেপ্তার সবাই নৌ শ্রমিক। তাদের মূলহোতা আলমগীরও নৌ শ্রমিক। তারা এই পেশার আড়ালে ডাকাতি করে বেড়ায়।’

মেঘনায় ওই ডাকাতির ঘটনার আগে গত ৭ জুলাই মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া সিমেন্টবোঝাই আরেকটি বাল্কহেড ডাকাত দলের কবলে পড়েছিল। সেদিন ডাকাত দল বাল্কহেডসহ কয়েকজন শ্রমিককে অপহরণ করে। মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করা হয় ১০ লাখ টাকা। তবে নৌ পুলিশের অভিযান ও তদন্তে বেরিয়ে আসে ভিন্ন তথ্য। এই ডাকাতি ও ‘অপহরণের’ মূল ‘কারিগর’ ছিল বাল্কহেডটিরই সুকানি মো. আক্তার হোসেন খান ও মিস্ত্রি বেল্লাল! তারা নির্দিষ্ট গন্তব্যে না গিয়ে বাল্কহেডটি নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যায়। পরে নিজেরাই অপহরণকারী সেজে মালিকের কাছে ফোন করে দাবি করে, বাল্কহেডসহ সুকানি ও মিস্ত্রিকে অপহরণ করা হয়েছে এবং তাদের মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীসহ দুজন গ্রেপ্তার এবং বরিশাল নদীবন্দর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় বাল্কহেডটি।

এক বছরে গেছে ১১ প্রাণ: সেভ দ্য রোডের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর নৌপথে ১৬১টি ডাকাতির ঘটনায় প্রাণ যায় অন্তত ১১ জনের। সংগঠনটির মহাসচিব শান্তা ফারজানা কালবেলাকে বলেন, ‘নৌপথে দিনে দিনে বেড়ে চলেছে ডাকাতির হার। কোনো কোনো ডাকাতির ঘটনায় নৌ শ্রমিকদের কেউ কেউ জড়িত থাকতে পারে। মূলত নৌপথে দায়িত্ব পালনকারী কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের দায়িত্ব পালনে অবহেলার সুযোগে ডাকাতির ঘটনা বাড়ছে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নৌ পুলিশের প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক কুসুম দেওয়ান বলেন, ‘নৌ শ্রমিকদের মধ্য থেকে নৌ ডাকাতিতে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি আশঙ্কাজনকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। শ্রমিকদের ডাকাতিতে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। এ প্রবণতা ঠেকাতে বা কমিয়ে আনতে সারা দেশে নৌ শ্রমিক হিসেবে যারা কাজ করে, তাদের বিস্তারিত পরিচয় নিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে ডাটাবেজ (তথ্যভান্ডার) করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’

নৌ পুলিশের প্রধান বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা খরচ করে নৌযান কেনা হয়, কিন্তু সেগুলোতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি) থাকে না। এতে ডাকাতের কবলে পড়া অনেক নৌযান থেকে প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায় না। এ ছাড়া নৌযানগুলোয় লোকেশন ট্র্যাকার থাকে না। এ কারণে ছিনিয়ে নেওয়া নৌযানগুলো উদ্ধার করা কঠিন হয়ে যায়। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে যদি মালিকদের এসব সরঞ্জামাদি ব্যবহারে বাধ্য করতে পারে এবং নৌ শ্রমিকদের কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার তৈরি করতে পারে, তাহলে অনেকাংশেই ডাকাতি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।’