বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নির্বাচনের সকল কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে ব্রাকসু নির্বাচন কমিশন। ভোটার তালিকায় বিভিন্ন ত্রুটি ও অসঙ্গতি পাওয়ায় কমিশন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবনের উত্তর গেটে শিক্ষার্থীরা তালা দিতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ আসে। তালা দেওয়া বন্ধ করার কথা বলে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় তারা এবং তালা দেওয়া বন্ধ করে দেয়।
এসময় বেরোবি শাখা ছাত্রদলের সহ সভাপতি তুহিন রানা বলেন, ‘কত বড় কলিজা, আমি দেখে ছাড়ব, কে তালা দিতে আসে।’ এ ছাড়া ফেসবুকে ছাত্রদলকে নিয়ে সমালোচনামূলক পোস্ট করায় ছাত্রদলের আরেক নেত্রী মামলা করার হুমকি দেন।
সোমবার (১ ডিসেম্বর ) বিকাল ৫টায় প্রসাশনিক ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ব্রাকসু নির্বাচন কমিশন জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে প্রাথমিক ভোটার তালিকা সরবরাহ করেছে, তাতে উল্লেখযোগ্য ভুল পাওয়া গেছে। তালিকায় শিক্ষার্থীদের অসম্পূর্ণ তথ্য, বানান বিভ্রাট, অনুপস্থিত নাম এবং হালনাগাদ না থাকা তথ্যের মতো সমস্যা রয়েছে। এসব ত্রুটি সংশোধন না হলে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয় বলে মনে করে কমিশন।
এ নিয়ে ক্যাম্পাসে নির্বাচন স্থগিত করলে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা দিতে গেলে শাখা ছাত্রদল বাধা দেয়। এতে করে একজন ফেসবুকে পোস্ট ছাত্রদলের সমালোচনা করে। পোস্টের কমেন্টে বেরোবি ছাত্রদলের নারী বিষয়ক সম্পাদক আসমা আনাম খুশী মামলা দেওয়ার হুমকি দেন। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে ব্রাকসু নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট করে জানায়, “যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সঠিক, নির্ভুল ও যাচাইকৃত তথ্য আমাদের কাছে জমা না দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ব্রাকসু নির্বাচনের কোনো কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা হবে না।”
এসময় ছাত্রদলের নেতাকর্মী এসে বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে মবকারীদের হাত থেকে রক্ষা করা আমাদের অধিকার। শিক্ষার্থীদের স্থিতিশীল ক্যাম্পাসকে যারা অস্থিতিশীল করবে ছাত্রদল এভাবেই প্রতিহত করবে। আমরা কোনোভাবেই গেটে তালা লাগাতে দেব না। তারা বলেন, তালা কে দেয় আমরা দেখব।
এ সময় ভিপি পদপ্রার্থী এস এম আশিকুর রহমান বলেন, আমরা আমাদের দাবি আদায় করে ছাড়ব। আগে যেমন ছাত্রলীগ বাধা দিয়েছে, এখন সেই কাজ ছাত্রদল করছে। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কালচার আর বেরোবিতে থাকবে না। ছাত্রলীগের প্রতিচ্ছবি দেখছেন ছাত্রদলের মধ্যে বলেও তিনি এ সময় উল্লেখ করেন।
নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোঃ শওকত আলী বলেন, ভোটার তালিকায় বিভিন্ন ত্রুটি ও অসঙ্গতি পাওয়ায় নিয়ে যে ঝামেলা হয়েছে সেটা নিয়ে আবার বসব এবং দ্রুত তার সমাধান করব, যথাসময়ে নির্বাচন হবে।