Image description

দীর্ঘ ১০ মাস পর আজ সোমবার (১ ডিসেম্বর) থেকে আবারও পর্যটকদের জন্য চালু হয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপে রাতযাপনের সুযোগ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে যাত্রা করেছে তিনটি জাহাজ।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে ১২শ পর্যটক নিয়ে জাহাজগুলো রওনা করে। চলতি মৌসুমে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে প্রথম যাত্রা এটি।

দীর্ঘদিন পর সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে প্রথম এই যাত্রায় অংশ নিতে সোমবার ভোর থেকেই ঘাটে আসা শুরু করেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমভি বার আউলিয়া ও কেয়ারি সিন্দাবাদ নামের জাহাজগুলোর যাত্রীরা। ক্রয় করা টিকিট প্রর্দশন করে জাহাজের আসন গ্রহণ করার আগে প্রত্যেক যাত্রীর হাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হয় ‘পরিবেশবান্ধব’ পানির বোতল।

জাহাজ মালিকদের সংগঠন ‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের’ সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, ৬টি জাহাজকে প্রশাসন অনুমতি দিয়েছে, যাত্রীর আনুপাতিক হার বিবেচনায় আজ ৩টি জাহাজ যাচ্ছে। জোয়ার-ভাটা ও নদীর নাব্যতা বিবেচনায় প্রতিদিনের যাত্রার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। সেন্টমার্টিন থেকে ছেড়ে যাওয়া জাহাজগুলো বিকেলে আবার কক্সবাজারের উদ্দেশে ফিরবে।

সেন্টমার্টিনে যাত্রিযাপনের সুযোগ সৃষ্টি হলেও রয়েছে কিছু নির্দেশনা। সেসব নির্দেশনা মেনেই ভ্রমণ করবে হবে।

গত ২২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় দ্বীপটির অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে পরিবেশবান্ধব পর্যটন প্রচারের জন্য নতুন নির্দেশিকা জারি করে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর ধারা ১৩ অনুযায়ী এবং ‘সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নির্দেশিকা, ২০২৩’ অনুসারে এ নির্দেশিকা জারি করা হয়।

নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কোনো জাহাজকে দ্বীপে চলাচলের অনুমতি দেবে না।

পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকবে। কিউআর কোডবিহীন টিকিট জাল হিসেবে গণ্য হবে।

পর্যটকদের সময়সূচি ও দ্বীপে প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে।

নির্দেশিকা অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে পর্যটকরা শুধু দিনের বেলায় দ্বীপে যাওয়ার সুযোগ ছিল। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাতযাপনে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

দৈনিক পর্যটক সংখ্যা সর্বাধিক ২ হাজার জনে সীমাবদ্ধ থাকবে। ফেব্রুয়ারিতে কোনো পর্যটক প্রবেশের অনুমোদন দেওয়া হবে না।

দ্বীপের সংবেদনশীল পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য সৈকতে রাতে আগুন বা বাতি জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি করা, বারবিকিউ পার্টির আয়োজন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

কেওয়া বন এলাকায় প্রবেশ, ফল সংগ্রহ বা বিক্রি এবং সামুদ্রিক কচ্ছপ, পাখি, প্রবাল, কাঁকড়া, শেলফিশ বা অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর ক্ষতি করা নিষিদ্ধ।

সৈকতে মোটরযুক্ত যানবাহন, যেমন- মোটরসাইকেল ও সি-বাইক ব্যবহার নিষিদ্ধ।

পর্যটকদের নিষিদ্ধ প্লাস্টিক বা একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিন সামগ্রী যেমন- চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, ছোট শ্যাম্পু বা সাবানের প্যাক, ৫০০ থেকে ১০০০ মিলি প্লাস্টিক বোতল নিয়ে যেতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এর পরিবর্তে পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে আনতে বলা হয়েছে।

শীর্ষনিউজ