Image description

কৃষকদের কৃষি ঋণ ও প্রণোদনা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে রাঙামাটির লংগদু কৃষি ব্যাংকে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সময় তদন্তে ব্যাংকটিতে ভুয়া কাগজের মাধ্যমে ৬০ কোটি ১৯ লাখ টাকা অনিয়মের প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে দুদকের রাঙামাটি জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। 

রোববার সকালে দুদকের রাঙামাটি জেলা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আহামদ ফরহাদ হোসেন ও সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদের নেতৃত্বে লংগদু কৃষি ব্যাংকে অভিযান পরিচালনা করা হয়। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অভিযানে দুদকের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দীন, মোহাম্মদ আবু ছাদেকসহ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপকসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 
 

দুদকের সহকারী পরিচালক আহামদ ফরহাদ হোসেন জানান, লংগদু কৃষি ব্যাংকে ২০২১ থেকে ২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত কৃষি ঋণ ও প্রণোদনার নামে ভুয়া ঋণ প্রদানের অনিয়মের অভিযোগ ছিল। তার ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় ঋণ বিতরণে অনিয়মের বিষয় নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলা হয়। এ ছাড়া অভিযানে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কৃষি ঋণ বিতরণে অনিয়ম হয়েছে। কৃষকদের নামে ভুয়া ঋণ, প্রণোদনাসহ বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে। বিশেষ করে ব্যাংকের বিভিন্ন রেকর্ডে ভুয়া দলিল, জাল স্বাক্ষর ও জালিয়াতির মাধ্যমে ৬০ কোটি ১৯ লাখ টাকার বেশি ভুয়া ঋণ দেওয়ার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। একটি চেকের মাধ্যমে এ ঋণ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে কক্সবাজার-২ আসনের সাবেক এমপি ও মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আশেক উল্লাহ রফিকের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সন্দেহজনক ব্যাংক লেনদেনের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক। রোববার দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এ মামলাটি করা হয়। দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ মামলাটি করেন। 

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আশেক উল্লাহ নিজের বৈধ আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ মোট তিন কোটি ৮৮ লাখ ৭৭ হাজার ১৩৯ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অর্জন ও দখলে রেখে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। মামলায় তার মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ছয় কোটি ২৩ লাখ ২৭ হাজার ৬৭৯ টাকা। এর মধ্যে বৈধ উৎসের পরিমাণ পাওয়া যায় দুই কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ৫৪০ টাকা। এ ক্ষেত্রে বৈধ উৎসের চেয়ে অর্জিত সম্পদ বেশি পাওয়া গেছে।

এ ছাড়া সাবেক এই এমপির নামে পাঁচটি ব্যাংকের ১৪টি হিসাবে দীর্ঘ সময়ে জমা হয়েছে ৪১ কোটি এক লাখ ১৩ হাজার ৬২৫ টাকা এবং উত্তোলন হয়েছে ৩৪ কোটি ১৫ লাখ ২৩ হাজার ৬৯৭ টাকা। মোট সন্দেহজনক লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭৫ কোটি ৪৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩২২ টাকা।