‘সাবেক প্রধান বিচারপতি, সাবেক মন্ত্রীরা জেলে থাকতে পারলে আপনাদের সমস্যা কোথায়?’ গুমের মামলায় গ্রেপ্তার ১৩ সেনা কর্মকর্তারা পরবর্তী শুনানিতে সশরীরে না এসে ভার্চুয়ালি হাজিরার আবেদনের প্রেক্ষিতে এ প্রশ্ন করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রোববার (২৩ নভেম্বর) বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল সেনা কর্মকর্তাদের আইনজীবী মাসুদ সালাউদ্দিনকে আরও বলেন, আপনাদের যদি এখানে আস্থা না থাকে তবে সরকারকে বলে মামলা তুলে ফেলুন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
পরে টানা ক্ষমতায় থাকতে টিএফআই-জেআইসি সেলে বিরোধী মতাদর্শের লোকদের তুলে নিয়ে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাবেক-বর্তমান সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে টিএফআই সেলে গুমের মামলায় ৩ ডিসেম্বর ও আরেক মামলায় ৭ ডিসেম্বর দিন ঠিক করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিমসহ অন্যরা।
এদিন সকাল ১০টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় প্রিজনভ্যানে করে গ্রেপ্তার ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে আনে পুলিশ। বেলা সাড়ে ১১টার পর এ দুই মামলায় নতুন দিন ধার্য করেন।
গ্রেপ্তার ১৩ সেনা কর্মকর্তা হলেন— র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।
এদিকে, সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা উপলক্ষ্যে সকাল থেকেই বাড়ানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা। ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ঘিরে নিরাপত্তায় রয়েছেন পুলিশ, বিজিবি-র্যাব সদস্যরা। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন দায়িত্বরতরা।