Image description

মিকম্পে শুধু বাংলাদেশই কাঁপেনি, কেঁপেছে মেট্রোরেলও। শুধু কম্পন নয়, মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে ফাটলও ধরেছে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও বিজয় সরণি স্টেশনের বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন কক্ষের ফ্লোরে ফাটল ধরেছে। ফাটল ধরেছে বিজয় সরণির সাব-স্টেশনের প্রবেশদ্বারের দেয়ালেও। পল্লবীর বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন কক্ষের ফ্লোর ও স্টেশন নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ভেতরে ফাটল ধরেছে।

অনুসন্ধান বলছে, মিরপুর ১১ মেট্রোরেলের বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশনের ফ্লোরে, মিরপুর ১০ স্টেশনের ভেতরের কোনো কোনো টাইলসে এবং ফার্মগেট মেট্রোরেল স্টেশনের যাত্রীদের লিফট কোরের ভেতরের দেয়ালেও ফাটল ধরেছে।

পল্লবী স্টেশনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার দেয়ালে ফাটল ধরেছে। সন্ধ্যার দিকে কক্ষে উপস্থিত ছিলেন তিনজন। প্রথমে জানতে চাওয়া হলে ভবনের দেয়ালে ফাটলের কথা অস্বীকার করেন স্টেশন কন্ট্রোলার মো. সায়েম। পরে এ প্রতিবেদক তাকে ফাটল দেখিয়ে বলেন, ‘ওই তো ফাটল’।

তখন সায়েম বলেন, ‘আগেও ফেটে থাকতে পারে, আবার ভূমিকম্পেও ফাটতে পারে। আমি জানি না। এখন আমি প্রথম দেখলাম।’ সায়েম এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।পল্লবী স্টেশনের অন্য এক স্টেশন কর্মী জানান, আরও এক জায়গায় ভূমিকম্পে ফাটল ধরেছে। কিন্তু, তিনি কোথায় ফাটল ধরেছে তা বলতে চাননি।

মিরপুর ১০ স্টেশনের এক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কয়েক জায়গার টাইলসে ফাটল ধরেছে।

এ ছাড়া মিরপুর ১১, বিজয় সরণি ও ফার্মগেট স্টেশনের অনেকের সঙ্গে কথা বললে তারা ফাটলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ভূমিকম্পের পর মেট্রোরেল স্টেশনগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। তবে, শুক্রবার বিকেল থেকে যথারীতি মেট্রোরেল চলতে শুরু করে। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হচ্ছিল সাব্বির রহমান নামের এক যাত্রীর। ফাটলের কথা জানতে পেরে তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক না। বিভিন্ন স্টেশনে ফাটল ধরার পরও মেট্রোরেল চালানোর সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি। দুর্ঘটনা ঘটতে কতক্ষণ?’

জানতে চাইলে সুস্মিতা নামের আরেক এক যাত্রী বলেন, ‘শুনে খারাপ লাগছে। মেট্রোরেল খুব উপকারী। বিপুল অর্থ খরচ করে নির্মিত মেট্রোরেলের ক্ষতি হবে না; এমনটাই ভাবনা ছিল আমার। প্রাকৃতিক কারণে হলে তো আমাদের কিছু করার নেই।’

কারওয়ান বাজার স্টেশনের ভেতরে থাকা বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন ফ্লোরে ফাটল ধরেছে। সেখানে রাত ৮টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, সাব-স্টেশনের কক্ষ বন্ধ। তবে, স্টেশনে থাকা এক কর্মী বলেন, ফাটল ধরেছে। অনেকে ভয়ে আছে।

ফাটলের ব্যাপারে জানতে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদের মুঠোফোনে কল করা হয়। তবে, তিনি কল রিসিভ করেননি। এ ছাড়া ডিএমটিসিএলের আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ ব্যাপারে কথা বলতে চাননি। তিনি আরও ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

পরে অন্তর্বর্তী সরকারের সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে তার মুঠোফোনে কল করা হয়। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ফাটল আমরা দেখেছি। এগুলো সিরিয়াস না। আমরা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি।’