Image description

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শুক্রবার ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে আহত হয়ে ছয় শতাধিক মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় ২০০ জন ভর্তি হয়েছে।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হালনাগাদকৃত তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে সরকারি হাসপাতালগুলোতে মোট ৬০৬ জন আহত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে ১৬৭ জনকে ভর্তি করা হয়েছে এবং গুরুতর অবস্থায় ১৬ জনকে অন্য হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

তবে এ তথ্যের বাইরেও হতাহত বহু মানুষ দেশের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে এবং কোথাও কোথাও ভর্তি রয়েছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এ তথ্য এখনো হালনাগাদকৃত তথ্যে যুক্ত হয়নি। ফলে আহতের সংখ্যা হাজারের উপরে হওয়ার শঙ্কা করা হচ্ছে।

তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় প্রধান সরকারি হাসপাতালে আহতদের চাপ লক্ষ করা গেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬১ জন আহত চিকিৎসা নিয়েছে, যার মধ্যে ৬ জন ভর্তি হয়েছে। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ১৬ জন চিকিৎসা নিয়েছে, যাদের মধ্যে একজন ভর্তি হয়েছে। পঙ্গু হাসপাতালে ৮৩ জন আহত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে এবং ১৮ জন ভর্তি হয়েছে। মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৬ জন চিকিৎসা নিয়েছে। এছাড়া শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে দুজন এবং নরসিংদী সদর হাসপাতালে ৫৯ জন আহত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। ওই হাসপাতালে একজন ভর্তি এবং দুজনকে রেফার করা হয়েছে। নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ১৩ জন চিকিৎসা নিয়েছে, আর রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনজনকে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে আহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি গাজীপুরে। তাজউদ্দীন মেডিকেল আহমদ কলেজে ৮৫ জন আহত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৫ জন ভর্তি হয়েছে। টঙ্গী আহসানুল্লাহ হাসপাতালে ৮৫ জন চিকিৎসা নিয়েছে এবং ১৪ জন ভর্তি হয়েছে, সাতজনকে গুরুতর অবস্থায় রেফার করা হয়েছে। শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭৭ জন আহত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে, যার মধ্যে ৪৭ জন ভর্তি হয়েছে এবং ছয়জনকে রেফার করা হয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচজন চিকিৎসা নিয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ, বন্দর এবং সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও মোট ১৬ জন আহত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। মাগুরা জেলায় শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৬ জন রোগীর মধ্যে ১৩ জন ভর্তি হয়েছে। জেলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ২৮ জন আহত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে, যাদের মধ্যে নয়জন ভর্তি হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. মঈনুল আহসান জানিয়েছেন, দেশের সব সরকারি হাসপাতালে জরুরি মেডিকেল টিম দ্রুত সক্রিয় রয়েছে এবং আহতদের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে।

ডা. মঈনুল আরও বলেন, অধিকাংশ আহতই ভবন ধসের কারণে নয়, বরং আতঙ্কে হুড়োহুড়ি বা সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় আঘাত পেয়েছেন। এ জন্য ভবিষ্যতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও নিরাপদে বের হওয়ার নির্দেশনা বাস্তবায়নের উপর তিনি গুরুত্ব দেন।