Image description
শ্রমিক-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ

শনিবার রাতের ছাত্র-শ্রমিক সংঘর্ষে শতাধিক বাস ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে গতকাল সকাল থেকে বরিশাল থেকে সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে করে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটের যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। শ্রমিকরা দাবি করেছেন, টার্মিনালে থাকা কোনো বাসই অক্ষত নেই। অপরদিকে ছাত্ররা বাস শ্রমিকদের বিচার দাবি করে নগরীতে মানববন্ধন করেছে। 

বাসে হাফ ভাড়া দেয়া নিয়ে বিএম কলেজের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে অভ্যন্তরীণ রুটের এক বাস কর্মচারীর কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। এ বিষয় জানতে একদল শিক্ষার্থী টার্মিনালে গেলে তাদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ তাদের। এ ঘটনার জেরে সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা অবধি নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে হামলা চালায় কয়েকশ’ শিক্ষার্থী। তারা টার্মিনাল ভবন ভাঙচুরের পাশাপাশি সেখানে থাকা শ’খানেক বাসে ভাঙচুর চালায়। একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। সকালে টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি ভাঙা বাস। মালিক সমিতির দাবি, তাদের ১৯০টি বাসের মধ্যে টার্মিনালে থাকা প্রায় সবক’টি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। মেরামত ছাড়া কোনো বাসই সড়কে নামানোর মতো অবস্থায় নেই।

পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, হামলা ও ভাঙচুর চলাকালে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার ৩০-৪০টি পরিবহন কাউন্টারে থাকা বিপুল অর্থ লুটে নেয়া হয়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের হামলায় ২০-২৫ জন শ্রমিক আহত হয়। সবগুলো কাউন্টারও ভেঙে ফেলে শিক্ষার্থীরা। এতে মোট ৩-৪ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবহন নেতারা। শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি শাহাদাত হোসেন লিটন বলেন, আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখবো। আমাদের যে গাড়িগুলো ভাঙচুর করা হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অর্ধশত শ্রমিক চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। পরবর্তীতে যেন এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। 

জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মোশারেফ হোসেন জানান, শিক্ষার্থীরা বিনা উস্কানিতে শ্রমিকদের ওপর হামলা চালিয়ে অসংখ্য বাস ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি কাউন্টারগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, মালিকদের লাখ লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান ও বিচার না হলে বরিশাল থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি, হাফ ভাড়া দিতে চাওয়ায় অভ্যন্তরীণ রুটের এক শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করে পরিবহন শ্রমিকরা। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গেলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় পরিবহন শ্রমিকরা। এতে ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন। বাস শ্রমিকরা নিজেরাই বাস ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর দায় চাপাচ্ছে। এ ঘটনার পর শনিবার রাত থেকেই বন্ধ হয়ে যায় বরিশাল তথা পুরো দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের বাস চলাচল। বরিশাল মেট্রোপলিটনের এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল মামুন-উল ইসলাম বলেন, সংকট সমাধানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নজরে রেখেছে।