Image description

বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্য ছিলেন মোক্তার মোল্লা। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে দীর্ঘ ২৮ বছর শিকলে বাঁধা তার জীবন। পরিবার জানিয়েছে, চাকরিরত অবস্থায়ই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে এই অবস্থা হয়েছে তার। পরিবারের দাবি, উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থার এই সময়ে ভালো চিকিৎসা করাতে পারলে হয়তো সুস্থ হয়ে উঠবেন মোক্তার মোল্লা। এজন্য সরকারি সহযোগীতা চান তারা।

মোক্তার মোল্লা রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মৃত আসমত আলী মোল্লার ছেলে।

 
জানা গেছে, বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে ১৯৭৫ সালের ২৫ অক্টোবর কনস্টেবল হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন মোক্তার মোল্লা। চাকরি জীবন ভালোই চলছিল তার। বিয়ে করেন, সংসার শুরু করেন। কিন্তু ভাগ্য যেন সহায় হয়নি মোক্তার মোল্লার। ১৯৯৭ সালে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ওই বছরের ১ অক্টোবর চাকরি থেকে অবসর নিতে বাধ্য হন তিনি।
 
এরপর বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করিয়েও আর সুস্থ করা যায়নি তাকে। বরং অবস্থার দিন দিন অবনতি হতে থাকে। এক পর্যায়ে পায়ে লোহার শিকল পরাতে বাধ্য হয় পরিবারের লোকজন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত দীর্ঘ ২৮ বছর খোলা জায়গায় শিকলবন্দী রয়েছেন মোক্তার মোল্লা।
 
মোক্তার মোল্লা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলার পর জীবন যুদ্ধে নামেন তার স্ত্রী তাসলিমা বেগম। শত কষ্টের মাঝেও এক ছেলে ও দুই মেয়েকে লেখাপড়া করান। ২০১৫ সালে মোক্তার মোল্লাকে নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে জেলা পুলিশ সুপারের উদ্যোগে তার ছেলে তৈয়বুর রহমান পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল পদে চাকরি পান। ছেলে তৈয়বুর রহমান বিয়ে করে সংসার পেতেছেন। দুই মেয়েরও বিয়ে হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসার অভাবে আজও পর্যন্ত শিকলমুক্ত হতে পারেননি মোক্তার মোল্লা।
 
মোক্তার মোল্লার স্ত্রী তাসলিমা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে এসপি সাহেব চাকরি দিয়েছেন; এজন্য আমি পুলিশ বিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞ। কিন্তু ছেলের বেতনের টাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। আমার বিশ্বাস আমার স্বামীকে সরকারের পক্ষ থেকে যদি এখন ভালো চিকিৎসা করানো হয় তাহলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
 
 
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমার ওয়ার্ডের সাবেক পুলিশ সদস্য মোক্তার মোল্লা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে শিকলবন্দী রয়েছেন। যা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। উন্নত চিকিৎসা করাতে পারলে তার হয়তো বা সুস্থ হবার সম্ভাবনা রয়েছে।